বিহারের বাজারে চাহিদা থাকায় শিলিগুড়ি মহকুমায় ভুট্টা চাষ বাড়ছে। গত বছর যেখানে শিলিগুড়ি মহকুমায় প্রায় সাড়ে ৪০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছিল সেখানে এ বার চাষের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬২৫ হেক্টর। গোখাদ্য-সহ নানা ধরনের সামগ্রী তৈরি করতেই ভুট্টার প্রয়োজন হয়। শিলিগুড়ি লাগোয়া বিহারে ভুট্টার চাহিদা বেশি। ভুট্টার চাষের এই বৃদ্ধির প্রবণতা থেকে কৃষি আধিকারিকদের অনুমান, শিলিগুড়িতে গোখাদ্য তৈরির ব্যবসা শুরু হলে সেটা লাভজনকও হবে। মহকুমার সহকারী অধিকর্তা তুষারকান্তি ভূষণ বলেন, “যে সমস্ত এলাকায় হাতির উপদ্রব রয়েছে সেই নকশালবাড়ি এলাকায় এ বার ভুট্টা চাষ গত বছরের মতোই হয়েছে। ভুট্টার চাষ বেড়েছে মূলক বিহার লাগোয়া খড়িবাড়ি এলাকায়।” ভুট্টার চাষ বাড়তে থাকায় ওই এলাকায় হাতির উপদ্রবও বাড়ছে বলে বন বিভাগ সূত্রের খবর। শিলিগুড়িতে এখন গোখাদ্য তৈরির একটি সরকারি সংস্থাই রয়েছে। তবে নানা কারণে সংস্থার উৎপাদন স্বাভাবিক নয়। এক সময়ে বেসরকারি উদ্যোগে মুরগির খাবার তৈরির জন্যও কয়েকটি কারখানা তৈরি হয় শিলিগুড়িতে। মুরগির খাবার তৈরি করতেও ভুট্টার প্রয়োজন হয়। বাজারের অভাবে ওই সমস্ত বেসরকারি কারখানার মধ্যে কয়েকটি বন্ধ রয়েছে। তবে মহকুমায় ভুট্টার চাষ বাড়লে এই প্রবণতা বন্ধ হয়ে গোখাদ্য তৈরিতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে কৃষি আধিকারিকদের অনুমান। মহকুমার সহকারী অধিকর্তা জানান, নকশালবাড়ি এলাকায় ভুট্টা খেতে বুনো হাতির উৎপাতের ঘটনা জানি। বনকর্মীরা যে বাসিন্দাদের ভুট্টা চাষে নিরুৎসাহিত করেন সেটাও শুনেছি। তবে নকশালবাড়িতে চা বাগান এবং তরাইয়ের রুক্ষ জমির কারণে চাষ বাড়ানো সম্ভব নয়। অন্যত্র কৃষকেরা যদি ভুট্টা চাষ করে লাভবান হতে পারেন তাহলে আপত্তি করার প্রশ্ন নেই।” গত এক দশকে শিলিগুড়িতে কৃষির চরিত্র আমূল বদলে গেলেও বাজারের অভাবেই ভুট্টা বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদনের ব্যাপারে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ দেখা যায়নি। তার বদলে কৃষকেরা আমন, পাট ও সবজি চাষের দিকেই আগ্রহ দেখিয়েছেন। ইদানিং পাটের বাজার মার খেতে থাকায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বাড়ছে বলে কৃষি আধিকারিকদের ধারণা। অন্যদিকে, ধান ও ভুট্টার লোভেই প্রতি বছর বুনো হাতির পাল জুন মাস থেকে টানা মার্চ মাস পর্যন্ত নকশালবাড়ি এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে থাকে। ভুট্টার লোভেই নকশালবাড়ি লাগোয়া নেপালে গিয়ে বুনো হাতির পাল আক্রান্ত হচ্ছে। |