নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
প্রস্তুতি চলছিল অনেক দিন ধরেই। অবশেষে হুগলির বলাগড়ে ২০০০ মেগাওয়াটের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারে ছাড়পত্র দিল সিইএসসি-র পরিচালন পর্ষদ। শুরু করেও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই প্রকল্পের কাজ। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সিইএসসি-র ভাইস-চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েন্কা ঘোষণা করেন, প্রকল্পটি হবে। কয়লা পেতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার তাঁদের সব রকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সিইএসসি এই প্রকল্পে ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বলাগড়ে সিইএসসি-র এক হাজার একর জমি বহু বছর ধরে পড়ে রয়েছে। বছর কয়েক আগে বলাগড়ের ওই জমিতেই তারা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার প্রাথমিক কাজ শুরু করে দেওয়ার পরে দু’টি সমস্যা বড় হয়ে দেখা দেয়। এক, গঙ্গার ধারে ওই জমিটি কিছুটা নিচু। বেশি বৃষ্টি বা সামান্য বন্যাতেই জল ঢুকে পড়ে। দুই, কয়লা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা। যার ফলে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ সে সময় পিছিয়ে আসেন। রাজ্যে নতুন সরকার প্রকল্পের সব দিক খতিয়ে দেখে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরই বলাগড়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিইএসসি।
সঞ্জীব গোয়েন্কা জানিয়েছেন, এই প্রকল্পটির ব্যাপারে তিনি অনেকটাই আশাবাদী। কয়লা পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলবে বলে জানিয়েছে। পাশাপাশি, সিইএসসি-র এক কর্তা জানান, জমিতে জল ঢোকার সমস্যাও মিটে যাবে বলে তাঁদের বিশ্বাস। কারণ, কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার কমিশন অফ ইন্ডিয়া’-কে দিয়ে বলাগড়ের জমি নিয়ে একটি সমীক্ষা করানো হয়েছে। তাদের পরামর্শ মতোই জমিতে জল ঢোকা ঠেকাতে গঙ্গার পাড়ে বাঁধ দেওয়া হবে ও মাটি ফেলে জমি উঁচু করা হবে। এর জন্য কত টাকা বাড়তি খরচ হবে, তা জানাতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে হলদিয়ায় একটি ৬০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ছে সিইএসসি। ওই প্রকল্পের জন্য ৩০০০ কোটি টাকা লগ্নি করছে তারা। গোয়েন্কা এ দিন দাবি করেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হলদিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ২০১৫ সাল থেকে সেখানে উৎপাদনও শুরু হয়ে যাবে বলে তাঁর দাবি। বলাগড়ে হবে ৬৬০ মেগাওয়াটের তিনটি ইউনিট। পরিবেশ মন্ত্রক প্রকল্পটির জন্য প্রাথমিক ছাড়পত্র দিয়ে রেখেছে অনেক আগেই। সিইএসসি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নির্মাণ শুরুর তিন বছরের মধ্যেই শেষ করা হবে প্রকল্পের কাজ। |