এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগে নিমেষ সিংহ নামে এক যুবক, তাঁর বাবা ও তিন ভাই-সহ মোট দশ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে বালির পশ্চিম শান্তিনগরের বাসিন্দা সুদেব দে কলকাতার গিরিশ পার্ক এলাকার বাসিন্দা নিমেষের বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ করেন। এর পরেই পুলিশ এই ‘অপহরণের’ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গিরিশ পার্ক এলাকা থেকে দশ জনকে গ্রেফতার করে বালি থানায় নিয়ে আসে। ধৃতদের মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে তোলা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় গয়না ব্যবসায়ী সুদেববাবুর ১৬ বছরের মেয়ে এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। গিরিশ পার্ক এলাকায় মামার বাড়ি হওয়ার সুবাদে ওই কিশোরীর সেখানে প্রায়ই যাতায়াত ছিল। নিমেষের বাড়ি ওই কিশোরীর মামার বাড়ির পাশেই হওয়ায় সেখানেই নিমেষের সঙ্গে আলাপ হয় তার। পুলিশ জানায়, সোমবার এক আত্মীয়ের মৃত্যুর কারণে স্ত্রীকে নিয়ে গিরিশ পার্কে যান সুদেববাবু। |
ধৃত দশ অভিযুক্তের মধ্যে চার জন। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র |
সেই সময়ে তাঁর বালির বাড়িতে ছিল ওই কিশোরী ও তার দশ বছরের ভাই। সুদেববাবু জানান, সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ প্রতিবেশীরা তাঁকে ফোনে জানান, তাঁর মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফিরে এসেই বালি থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করেন সুদেববাবুরা।
এ দিন সুদেববাবু বলেন, “গিরিশ পার্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি নিমেষও অনেকক্ষণ ধরে বাড়িতে নেই। তখনই গিরিশ পার্ক থানায় জানাই।” নিমেষকে সন্দেহ করলেন কেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “আমার মেয়ে মামার বাড়ি গেলেই নিমেষ রাস্তায় বিরক্ত করত। তাই সন্দেহ হয়।”
পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে ওই কিশোরীকে খুঁজতে সুদেববাবুর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নিমেষদের বাড়িতে যান। সেখান থেকে নিমেষের বাবা সুরেশ সিংহ ও তাঁর তিন ভাই নিখিল, নিশান্ত ও নীতেশকে গিরিশ পার্ক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ওই কিশোরী নিমেষের সঙ্গেই আছে। পরে রাতে তাঁদের গিরিশ পার্ক থানার সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে পুলিশ। সেই সঙ্গে নিমেষের খোঁজে থানায় আসা নিমেষের কিছু বন্ধু, তাঁর বাবা ও ভাইদেরও আটক করা হয়।
যদিও নিমেষের মা মঞ্জু সিংহের অভিযোগ, “ওই মেয়েটিই আমার ছেলের মোবাইলে ফোন করে নিজের বাড়িতে ডেকেছিল। রাতে পুলিশ ও মেয়ের বাড়ির লোকেরা খোঁজাখুজি করায় আমরাই ওদের গিরিশ পার্ক থানায় আসতে বলি। ওই কিশোরীর বাবা আমাদের ইচ্ছাকৃত ভাবে অপহরণের মামলায় ফাঁসিয়েছেন।”
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোরী জানিয়েছে, নিমেষকে সে চিনত। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না। সোমবার নিমেষ তাদের বাড়ির সামনে এসে তাকে ডাকে। পরে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে জোর করে নিয়ে যায়। হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “তদন্ত হচ্ছে। মেয়েটির সঙ্গে ছেলেটির আগে থেকেই সম্পর্ক আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |