তিস্তার জলবণ্টন ও ছিটমহল হস্তান্তর নিয়ে টালবাহানা আর বরদাস্ত করতে রাজি নয় ঢাকা। নয়াদিল্লি সফরে এসে ভারতীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে মঙ্গলবারের বৈঠকেও দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি। সেই সঙ্গে জানালেন, টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখতে শীঘ্রই ভারতে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
সম্প্রতি ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় তিস্তার জলবণ্টন ও ছিটমহল হস্তান্তর রূপায়ণে দেরির জন্য জোট রাজনীতি ও সংসদীয় রীতিনীতির বাধ্যবাধকতার বিষয়টিকে কারণ হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। কিন্তু আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম এবং জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী পবন বনশলের সঙ্গে বৈঠকে দীপু মণি সাফ জানান, জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতা অথবা সংসদে আইন পাশ করার নিয়মকানুন এ সমস্ত একান্তই ভারতের ‘নিজস্ব সমস্যা’। তা সামলে কী ভাবে তারা বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে, সেটা তাদেরই বুঝতে হবে। দীপু মণি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে বিশ্বাস করে। তিস্তার জলবণ্টন বা ছিটমহল হস্তান্তর দ্রুত রূপায়ণ করার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাতে তাঁরা উল্লসিত হয়েছিলেন। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও সে বিষয়গুলির কোনও নিষ্পত্তি না হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ হতাশ। তাঁদের প্রতিনিধি হয়ে তিনি দিল্লিকে বলতে এসেছেন, দ্রুত নিজেদের সমস্যাগুলি মিটিয়ে ভারত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুক। বাংলাদেশের মানুষের আর দেরি সইছে না।
গত কাল বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণর সঙ্গে বৈঠক করেছেন দীপু মণি। সেখানেও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, পাখির চোখের মতো এখন একটাই লক্ষ্য ঢাকার। তার পরে আজ আরও দুই বৈঠক। তবে আজ সন্ধ্যায় দিল্লি ছাড়ার আগে দীপু মণি জানিয়ে গিয়েছেন, দিল্লির ‘আশ্বাস’ তিনি সঙ্গে করে নিয়ে ফিরছেন। ভারত সরকারের নেতৃত্ব তাঁকে কথা দিয়েছে এ ব্যাপারে যথাযোগ্য ‘তৎপরতা’ দেখানো হবে। আপাতত কলকাতায় যাওয়া অথবা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেই জানিয়েছেন দীপু মণি।
আমেরিকাও যে ঢাকা-দিল্লি আলোচনার ফলাফল নিয়ে আগ্রহী, কৃষ্ণের ঘোষণায় আজ তা পরিষ্কার হয়েছে। কৃষ্ণ জানান, দীপু মণির সঙ্গে তাঁর কালকের আলোচনার বিষয়বস্তু তিনি মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টনকে জানিয়েছেন। হিলারি জানিয়েছেন, আমেরিকা চায় ভারত, বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে বাণিজ্য আরও বাড়ুক। |