ফের এক চাষির অপমৃত্যুর পরে দেনার দায়ে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠল বর্ধমানে। যদিও পুলিশ দাবি করেছে, পারিবারিক কলহের জেরে এই ঘটনা।
এর আগেও ঝড়বৃষ্টিতে বোরো ধান নষ্টের জেরে দেনায় জড়িয়ে চাষির আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শস্যগোলায়। ভাতারের নতুনগ্রামের ডালিম পাল (৪৫) সেই তালিকায় নতুন সংযোজন। আজ, বুধবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে বিডিও-কে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে কীটনাশকের বিষে অসুস্থ হয়ে পড়লে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ডালিমবাবুকে। রাতেই তিনি মারা যান। মঙ্গলবার তাঁর মৃতদেহের ময়না-তদন্ত করানো হয়েছে।
এ দিন মেডিক্যাল কলেজের মর্গে দাঁড়িয়ে ডালিমবাবুর প্রতিবেশী তথা আত্মীয় দিলীপ পাল বলেন, “ডালিমের ১৭ বিঘে জমি আছে। ১০ বিঘেতে সে বোরো চাষ করেছিল। কিন্তু ঝড়জলে সমস্ত ধানই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাজার থেকে চড়া সুদে নেওয়া প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকার দেনা ছিল ওর। দেনা শোধ করা নিয়ে বাড়িতে অশান্তি হয়। তারই জেরে ও কীটনাশক খায়।” সংশ্লিষ্ট বামুনাড়া পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান রীতা মালিক বলেন, “নতুনগ্রামে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরেই চাষির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।”
স্থানীয় চাষি দেবজ্যোতি কর্মকার বলেন, “বামুনাড়া পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে ঝড়জলে চাষ নষ্ট হয়েছে। অবিলম্বে জেলা কৃষি দফতর আমাদের পাশে না দাঁড়ালে সমস্যায় আরও বাড়বে।” পঞ্চায়েতপ্রধানও বলেন, “অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চাষিদের বড় অংশ মহাজনদের থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেন। বিডিও-র কাছে আবেদন করেছি, গ্রামে গিয়ে অবস্থা বুঝে আর্থিক সাহায্য করতে।”
বর্ধমান উত্তর মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “ওই এলাকায় ঝড়বৃষ্টিতে কিছু ধান নষ্ট হয়েছে ঠিকই, তবে আত্মঘাতী চাষির কতটা ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি। আজ ছুটি। বুধবার বিডিওকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।” ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধানসভার কৃষি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বনমালী হাজরা বলেন, “চাষির আত্মঘাতী হওয়ার খবর পাইনি। খোঁজ নিচ্ছি।” |