|
|
|
|
|
|
|
অবিস্মরণীয় |
শতবর্ষে ব্রাত্যজন |
কিশোরগঞ্জে বাবা-মায়ের মুখে, ময়মনসিংহের ব্রাহ্মদের মুখে এবং কলকাতাতেও মাঝে মাঝে শুনতাম ‘রবিবাবুর গান’ অথবা ‘রবিঠাকুরের গান’। ‘রবীন্দ্রসংগীত’ এই কথাটির উৎপত্তি কবে হল আমার জানা নেই, তাই বলতেও পারব না।’ সেই রবীন্দ্রসংগীতেই পরে কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। পরে লিখেছেন, ‘আমার মনে আছে আমি জন্মেছিলাম “ম্লেচ্ছ” হয়ে শেষজীবনে রবীন্দ্রসংগীত জগতে হয়ে গেলাম “হরিজন” কেন “ম্লেচ্ছ” এবং কী করে “হরিজন” এই ব্যাপারটি জানবার ঔৎসুক্য হয়তো অনেকের হতে পারে কারণ যতই বিনয় করি না কেন, আমার বেশ ভালো করেই উপলব্ধি হয়েছে যে অগণিত রবীন্দ্রসংগীতপ্রেমিকদের অকৃত্রিম এবং অকুণ্ঠ ভালোবাসা সারাজীবন পেয়ে আমি ধন্য হয়েছি।’ তাঁর ব্রাত্যজনের রুদ্ধসঙ্গীত আজও তাঁর ‘ব্রাত্য, মন্ত্রহীন’ সংগীতজীবনের দলিল হয়ে আছে। ১৯৭৮-এ বইটি লেখার দু’বছর পরেই মৃত্যু হয় তাঁর। তারও পরে তিন দশক পেরিয়েছে, আজও সেই অগণিত রবীন্দ্রসংগীতপ্রেমিকদের অকৃত্রিম এবং অকুণ্ঠ ভালবাসা অটুট। এখনও রবীন্দ্রসঙ্গীতে অপ্রতিরোধ্য দেবব্রত বিশ্বাস ওরফে জর্জ বিশ্বাস। |
|
রবীন্দ্রনাথের এই সার্ধশতবর্ষে তাঁরও জন্মশতবর্ষ। ১৯১১-র ২২ অগস্ট জন্ম তাঁর। কিন্তু এই শতবর্ষেও তাঁকে নিয়ে সরকারি স্তরে তো নয়ই, বেসরকারি স্তরেও তেমন উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি। তাঁর অপ্রকাশিত রেকর্ডিংয়ের সন্ধান চলেছে বহু দিন ধরেই। প্রকাশিতও হয়েছে তার কিছু। কিন্তু তাঁর গায়কী-র যোগ্য উত্তরাধিকারী? না তেমন কোনও সন্ধান নেই। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহায়তায় ডান্সার্স গিল্ড ও দেবব্রত বিশ্বাস শতবার্ষিকী কমিটির আয়োজনে ৯ মে ছ’টায় জি ডি বিড়লা সভাগারে শতবর্ষ উদ্যাপনের সূচনা, শেষ ২২ অগস্ট। গাইবেন ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পীরা। প্রকাশিত হবে শিল্পীর লাইভ রেকর্ডিং ও একটি তথ্যচিত্রের সিডি। কাজ চলছে একটি স্মারক সংকলনেরও। এ দিকে সারেগামা থেকে প্রকাশিত হল তিনটি সিডির অ্যালবাম ‘অবিস্মরণীয় দেবব্রত’। সঙ্গের দুর্লভ ছবিটি শেষ বয়সের ‘জর্জদা’র, তুলেছিলেন অমিয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
|
স্বপ্নসন্ধানী ২০ |
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বছরে জন্ম ‘স্বপ্নসন্ধানী’-র, গুজরাত দাঙ্গার সময় বয়স ছিল দশ, এ বারে হল কুড়ি। হিংস্রতা বা ভায়োলেন্স এ-রাজ্যে বা সারা দেশে আগের মতোই, ঘোষিত হয় না কিন্তু চলতেই থাকে এই প্রেক্ষিতেই যে তাঁদের নাট্যোৎসব ২৫-২৯ মে, তা খেয়াল করিয়ে দিয়ে কর্ণধার কৌশিক সেন জানালেন ওদের নতুন প্রযোজনা শেক্সপিয়রের ম্যাকবেথ করার কারণ: ‘হিংস্রতার ভিতর দিয়ে যে অবিরত ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে তা তুলে আনা।’ নামচরিত্রে ও নির্দেশনায় তিনিই। কাঞ্চন মল্লিক তাঁর ম্যাকডাফ চরিত্রটি নিয়ে উত্তেজিত: ‘এরা ভূমিপুত্র বা দাসই থেকে যায়, শুধু ব্যবহৃত হয় ক্ষমতা দখলের ঘুঁটি হিসেবে।’ লেডি ম্যাকবেথ রেশমী সেনের কাছে ‘স্বপ্নের চরিত্র’, আর তিন ডাইনির এক ডাইনির চরিত্রে ঋদ্ধি সেন। ২৯-এ অ্যাকাডেমিতে প্রথম অভিনয়। ২৮-এ সেখানেই ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ অবলম্বনে প্রাচ্য-র নতুন প্রযোজনা রোমি ও জুলি ‘মূলত নতুন প্রজন্মের কাছে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব কতটা অসহনীয় তা নিয়েই’, জানালেন পরিচালক বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনয়ে পৌলমী ও রণদীপ বসু প্রমুখ। ২৭-এ তপন থিয়েটারে ‘জুলিয়াস সিজার’ অবলম্বনে নাট্যআনন-এর সিজার, এ-নাটকেও ‘ক্ষমতা’র প্রসঙ্গটিই গুরুত্ব পাচ্ছে নির্দেশক-অভিনেতা চন্দন সেনের কাছে। নামভূমিকায় সব্যসাচী চক্রবর্তী জানালেন: ‘অস্বস্তিতে আছি যতক্ষণ-না দর্শকের আমার অভিনয় ভাল লাগছে।’ অন্যান্য ভূমিকায় বিন্দিয়া শান্তিলাল সাগ্নিক প্রমুখ।
|
|
আত্মীয় |
|
প্রায় ধূ ধূ ময়দানের বিস্তারিত শূন্যতায় ঘুমন্ত দু’টি মানুষ। সঙ্গের ছবিটা দেখতে দেখতে যেন এক অন্য কলকাতার কথা মনে এসে যায়। অথচ ছবিটা তুলেছেন শিকাগোর ফটোগ্রাফার অ্যালান টমাস। আসলে সারা দুনিয়ার শহরের সঙ্গেই তাঁর আত্মীয়তা। তাই তাঁর শিকাগো/ টোকিয়ো/ কলকাতা-র স্থিরচিত্র নিয়ে শুরু হয়েছে এক প্রদর্শনী, দ্য সিগাল ফাউন্ডেশন ফর দ্য আর্টস-এ, প্রতিদিন ১১টা-৮টা, চলবে ১২ মে অবধি।
|
মেয়েদের কথা |
টি ভি খুললেই অনেক চ্যানেল, ফুটপাথের দোকানে অনেক কাগজ। কিন্তু সাংবাদিকের স্বাধীনতা কি অনেক? তা হলে গত বছর ৪৬ জন সাংবাদিককে প্রাণ দিতে হল কেন? সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দিতে গোটা বিশ্বে নির্দিষ্ট হয়েছে একটি দিন, ৩ মে। সেই উপলক্ষে কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে ছিল একটি আলোচনাচক্র। বিষয়, সংবাদমাধ্যমে মেয়েদের কথা বলার স্বাধীনতা কতটা, তাদের সম্পর্কে খবরই বা কতখানি ন্যায্য। ‘সাউথ এশিয়ান উইমেন ইন মিডিয়া’-র উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে নয়া মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েল বললেন, বাঙালির আড্ডায় পুরুষ-মহিলা সকলকে খোলাখুলি কথা বলতে দেখার অভিজ্ঞতা তাঁর আগেই রয়েছে (নব্বইয়ের গোড়ায় তিনি কলকাতার কনসাল জেনারেল ছিলেন), কিন্তু সংবাদমাধ্যমে মেয়েদের কথা যথেষ্ট শোনা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। আলোচনা করলেন শিক্ষা সচিব বিক্রম সেন, ডাক্তার কুনাল সরকার, শেয়ার মার্কেটের বিশেষজ্ঞ অদিতি নন্দী, সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্ত, স্নেহাশিস শূর ও শিখা মুখোপাধ্যায়। যোগ দিলেন দর্শকরাও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতীদের নিয়ে খবর ‘মেয়েদের খবর’ বলে ধরা উচিত হবে কি না, মেয়ে সাংবাদিকরা মেয়েদের সমস্যা কতটুকু লিখতে পারছেন, এমন সব প্রশ্নে সভা উত্তাল হল। সমাধান নয়, সমস্যার বৈচিত্র স্পষ্ট হল সভায়।
|
নাট্যচিত্র |
চিত্রনাট্য নয়, নাট্যচিত্র। বাংলা নাটক মঞ্চে নামে, তার পরে হারিয়ে যায় এ আক্ষেপ রসিকদের বহু দিনের। আর যাঁরা প্রবাসী, তাঁদের প্রায় সুযোগই হয় না সাম্প্রতিক বাংলা নাট্য দেখার। এই আকালে এক নতুন উদ্যোগ my.anandabazar.com-এর ‘নাট্যচিত্র’। মঞ্চনাটকের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে আপলোড করা হচ্ছে এই সাইটে। নামমাত্র মূল্যে তা দেখা যাবে। বিভিন্ন নাট্যনির্দেশককে দিয়ে চলচ্চিত্রায়িত করা হচ্ছে মঞ্চনাটককে। ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’, ‘রুদ্ধসংগীত’, ‘ব্যোমকেশ’ এবং ‘বিসর্জন’ আপাতত এই পাঁচটি নাটক ‘ফিল্মড’ হয়েছে। এ দিকে ‘আভাষ’-এর আয়োজনে ৯-১৫ মে নাট্যউৎসব ‘রবির ছায়ায় নাটকমেলা’। নাটক নয়, রবীন্দ্রনাথের নানা গল্প, উপন্যাস ও কবিতার আধারে নির্মিত এই নাট্যোৎসবে থাকছে ভারত ও বাংলাদেশের আটটি নাটক আনন্দী, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ, মুক্তির উপায়, সুভা, মাটির জন্য, মানভঞ্জন ও গোরা।
|
কায়ার বিবেক |
অযোধ্যানাথ পাকড়াশির কথায় প্রচলিত সুরের গান ‘মন চল নিজ নিকেতনে’। কিংবা গিরিশচন্দ্র ঘোষের কথা ও সুরে ‘জুড়াইতে চাই কোথায় জুড়াই’। বহু পরিচিত গানগুলির মধ্যে একটা মিল, এগুলি সবই স্বামী বিবেকানন্দের প্রিয় গান। বহু স্মৃতিকথা থেকে জানা যায় এ গানগুলি বহু বার গেয়েছেন তিনি। গানগুলির পরিচিত রেকর্ডও আছে। কিন্তু এ বার এক অভিনব উদ্যোগ। তরুণ প্রজন্মের জন্য এ সব গান এ বার ব্যান্ডে। হিন্দুস্থান রেকর্ড থেকে প্রকাশিত হয়েছে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের গবেষণা ও ভাষ্যে ‘কায়ার বিবেক’। বছর পাঁচেক আগে শিকাগোতে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে বিশ্বধর্মমহাসম্মেলন যেখানে হয়েছিল সেখানেই পরিকল্পনা, যার প্রকাশ এখন, বিবেকানন্দের জন্মসার্ধশতবর্ষে। মোট আটটি গান এই অ্যালবামে।
|
শতবর্ষে |
১৯৩৭ সালের সমাবর্তনে রবীন্দ্রনাথ স্বহস্তে তাঁকে স্বর্ণপদক দেন। কিশোর বয়স থেকেই তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন। তিরিশ ও চল্লিশের দশকে তাঁর বহু কবিতা নানা পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। জন্ম ১৯১২-য়, ১৯৩৮-এ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের সহোদরা কনকলতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তিনি সিটি কলেজে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রধান ছিলেন দীর্ঘকাল। শেষ চার বছর অতিথি অধ্যাপক হিসেবে পড়িয়েছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই পণ্ডিত ও বাগ্মী প্রাবন্ধিক হিসাবেও খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৭০-এ প্রয়াত বিভূতি চৌধুরির জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ১১ মে বিকাল ৫টায় জীবনানন্দ সভাঘরে তাঁর নামাঙ্কিত স্মারক বক্তৃতা দেবেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, স্মারক সম্মান গ্রহণ করবেন মনোজ মিত্র, আর প্রতিমা ঘোষের হাতে স্মারক পুরস্কার তুলে দেবেন বিনয় চৌধুরি।
|
উত্তররঙ্গ |
বাংলার লোকশিল্প প্রদর্শনের বিপুল আয়োজন এ বার গুরুসদয় সংগ্রহশালায়। ১০ মে বিকেলে গুরুসদয় দত্তের জন্মদিন উপলক্ষে ‘উত্তররঙ্গ’-এর উদ্বোধন করবেন মহাশ্বেতা দেবী ও খন লোকনাট্যের বিখ্যাত শিল্পী মাধাই মহান্ত। চলবে ২০ মে পর্যন্ত। মুখোশ, মেল্লি, টোপর, ও পিরের ঘোড়া নিয়ে হাজির থাকবেন দিনাজপুরের শোলা শিল্পী মধুমঙ্গল মালাকার। থাকবে ঘুঘুমারির শীতলপাটি, নকশালবাড়ির কাঠ ও চা গাছের শিল্প সহ পোড়ামাটি, বাঁশ, ধোকড়া বুনন, গয়না, রাভা বস্ত্র, সেরপাই, শিং-এর শিল্প, চদর বদর পুতুল এবং শবরদের শিল্পকলা। দেখা যাবে নানা লোক-অনুষ্ঠান, থাকছে আলোচনা। গুরুসদয় সংগ্রহশালার সঙ্গে আয়োজনে বঙ্গীয় পারম্পরিক কারু ও বস্ত্রশিল্পী সংঘ, বাংলার ব্রতচারী সমিতি ও কলাবতী মুদ্রা।
|
পঞ্চান্নব্যঞ্জন |
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্ত্রী এক বার অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তার এসে পথ্য দিলেন শুধু কাঁচকলা। বিধুমুখী দেবী সুস্থ হয়ে উঠে ডাক্তারবাবুকে নেমন্তন্ন করলেন। তিনি তো অবাক। প্রতিটি পদ কাঁচকলার এবং পরম সুস্বাদু! এমন ধারাই তাক লেগে গেল দ্য পার্ক হোটেলের স্যাফ্রন রেস্তরাঁয় ঢুকে। সেখানেও প্রতিটি রান্নাই, নাহ্ কেবলই কাঁচকলা নয়, তবে খাঁটি নিরামিষ। সারা ভারতের হেঁশেল চষে খুঁজে আনা। জোধাবাইয়ের বিখ্যাত লসুনি কলমি বড়া ও তিন রতন কোর্মা, অড়হর ও হায়দরাবাদি ডাল আশরফি, অওধের পরবল কা মুসল্লম। শুধু আলু ভেজে, লঙ্কা, জিরে, ফোড়ন, আম আদা দিয়ে রাঁধা মধ্যপ্রদেশীয় আলু লাজবাব; কচি বেগুন, পেঁপে, তেজপাতা দিয়ে সাঁতলানো অসমিয়া পাঁচন, মরাঠি রগড়া প্যাটিস, রসালো টম্যাটো পাপ্পু, কাজু মেওয়া ভর্তি কাশ্মীরি পোলোয়া। শেষ পাতে বাদামের হালুয়া, কেসরিয়া কুলফি ফালুদা এবং অতি অবশ্যই মিষ্টি দই। এখন স্যাফ্রনে লাঞ্চ বা ডিনারে এই পঞ্চান্নব্যঞ্জন মিলবে ১৩ মে পর্যন্ত। নিরামিষ মহোৎসবের দায়িত্বপ্রাপ্ত শেফ দিওয়ান বললেন, ‘এ নমুনা মাত্র, পরে আরও মহাভোজের ব্যবস্থা হবে।’
|
কাঞ্চনজঙ্ঘা |
‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ শুটিংয়ের আগে দার্জিলিংয়ের তিন রকমের ম্যাপ এঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন সত্যজিৎ। মেঘলা, কুয়াশা, আর রোদ-ঝলমলে যেমনটা হবে... সেই অনুযায়ী কোথায় কোথায় শুটিং করবেন। তাঁর আঁকা সে সব ম্যাপ দেখে তো সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র লোকজন থ’ এত নিখুঁত আঁকলেন কী করে! এমন নানা গল্প সন্দীপ রায়ের স্মৃতিতে, ও-ছবির শুটিংয়ের সময় তাঁর বয়স ছিল আট, ’৬১-র অক্টোবর-নভেম্বর জুড়ে চলেছিল শুটিং। ‘৬২-র ১১ মে রূপবাণী অরুণা ভারতীতে মুক্তি পেয়েছিল, এ বার সে-মুক্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নন্দন সন্দীপ রায়ের উপস্থিতিতে সত্যজিতের প্রথম রঙিন ছবিটি দেখানোর আয়োজন করছে ১৩ মে বিকেল ৫টায়।
|
টুওয়ার্ডস ফ্রিডম |
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পাদিত ‘ফরোয়ার্ড’ পত্রিকার প্রকাশক হওয়ার দায়ে রাজরোষে পড়েছিলেন শান্তিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। ব্রিটিশ সরকার বক্সা থেকে হিজলি পর্যন্ত বিভিন্ন জেলে ঘুরিয়েছিল তাঁকে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এমন বহু মানুষ আজ শুধু পারিবারিক অ্যালবামে বন্দি। স্বাধীনতা আন্দোলনের এক কালপর্বের (১৭৫৭-১৯৪৭) পূর্বাপর ইতিহাস একত্র করতে উদ্যোগী হয়েছেন প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়। চালু হচ্ছে ওয়েবসাইট ‘টুওয়ার্ডস ফ্রিডম’। থাকবে বিপ্লবী এবং তাঁদের পরিজনদের সাক্ষাৎকার, দুর্লভ গ্রন্থ, নথিপত্র, ছবি এবং গান। ১০ মে সন্ধে ছ’টায় রোটারি সদনে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে যুক্ত, চট্টগ্রাম নিবাসী শতবর্ষ অতিক্রান্ত বিনোদবিহারী চৌধুরী। স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন দিক নিয়ে বলবেন পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের অধিকর্তা অনুপ মতিলাল। থাকবেন ভগত সিংহের ভাগ্নে জগমোহন সিংহ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বটুকেশ্বর দত্ত ও অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিজনেরা।
|
নব্বইয়ে পা |
তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই... গুনগুন করে গাইছিলেন সৌমিত্র, ‘আকাশকুসুম’-এ। এ-ছবিতে তাঁর এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী চরিত্রটি বড়লোক হওয়ার আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখে, অর্থের পিছনে অর্থহীন ছোটাছুটি করে। ষাটের দশকে তৈরি নিজের এই ছবিটির কথা মনে পড়ে গেল মৃণাল সেনের, ‘গোল্ডরাশ’-এর চ্যাপলিনের কথা লিখতে-লিখতে। হ্যাঁ, এই হাঁসফাঁস গরমেও চ্যাপলিনকে নিয়ে বিস্তর লিখে ফেললেন ইংরেজিতে, যা নিয়ে বই প্রকাশ করছে নিউ এজ। না, বাংলা বইটির অনুবাদ নয়, একেবারে নতুন ভাবে লেখা। ’৫৩-য় বেরনো, পরে পুনর্মুদ্রিত বাংলা বইটির চ্যাপলিন-চর্চায় ছিল তাঁর সমালোচকের চোখ, তখনও তিনি চলচ্চিত্রকার হননি। আর এ বারে তাঁর চলচ্চিত্রকারের চোখ, চ্যাপলিনকে নতুন করে আবিষ্কার করছেন আত্মজন থেকে শুরু করে নিজের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে। যেমন ‘আকাশকুসুম’-এর মতোই আকবর-কে নিয়ে লিখেছেন ‘মাই ইটারনাল ভ্যাগাবন্ড’ ও-বাংলায় খেলার সঙ্গী ছিল, দেশভাগের পর এ-বাংলায় এসে মারা যায়, আজও মনে পড়ে তার কথা। স্মৃতি এখনও সজীব, কমপিউটর টেনে কাজ করতে বসেন রোজ। আগামী সোমবার ১৪ মে তাঁর জন্মদিন পালন করবে নন্দন আর গোর্কিসদনে আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব। ৯০-এ পা দিচ্ছেন তো এ বার? ‘আই অ্যাম ওয়ান ইয়ার ইয়ঙ্গার দ্যান হোয়াট আই উইল বি নেক্সট ইয়ার।’ জবাব দেন মৃণাল সেন। |
|
|
|
অভিযাত্রী |
গরম লাগে তো তিব্বত গেলেই পারো। না, কথাটা নেহাত মজার কথা নয় ৭২ বছরের সেই তরুণের কাছে। ৭২ বছরের তরুণ! চমকাবার কিছু নেই, ৭২ বছর বয়সে আজ রাতে পাড়ি দিচ্ছেন তিনি ৫২০০ কিলোমিটারের চা আর ঘোড়ার পথে। তার আগের দিন দুপুরে খোসমেজাজে ফাল্গুনী মতিলাল বলছিলেন তাঁর সম্ভাব্য যাত্রাপথের কথা, ‘কুনমিং থেকে পুয়ের হয়ে ইউনান হয়ে তিব্বতে ঢুকব। তার পরে পূর্ব থেকে পশ্চিমে তিব্বত ক্রস করে কালিম্পং দিয়ে বেরোব।’ কিন্তু কেন এ পথে যাওয়া? ‘চিন, তিব্বত আর ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের বহু প্রাচীন ঐতিহাসিক পথ এটা। এ পথেই চিনারা তিব্বতিদের কাছে ঘোড়ার বদলে চা বিক্রি করত। আর তিব্বতিরা ওই চা কালিম্পংয়ে বিক্রি করে দরকারি জিনিসপত্র কিনত। সে জন্যই এর নাম চা আর ঘোড়ার পথ,’ বলছিলেন ফাল্গুনী। এ পথে তাঁর সঙ্গী অনির্বাণ দাসমহাপাত্র ও রণজিত্ রায়। যাত্রাপথের সেই আনন্দগান লিখবেনও তাঁরা, জানালেন ফাল্গুনী। এই শহরেই ছোটবেলা কেটেছে তাঁর, পড়িয়েছেন স্কটিশ চার্চ কলেজে। তার পরে রেলের চাকরি। কিন্তু বরাবরের টান খেলাধুলো আর রোমাঞ্চকর পথে অভিযান। এর আগে আলেকজান্ডারের পথে যাত্রা করেছেন, আফানাসি নিকিতিনের রাশিয়া-ভারত যাত্রাপথ পাড়ি দিয়েছেন। এই বয়সেও কী করে পাড়ি দেবেন এক মাস ধরে এই দুর্গম পথে? ‘খেলাধুলো করি বলেই শরীর এখনও ফিট। আর তার চেয়েও বড় অভিযানের টানটা।’ থ্রি মাস্কেটিয়ার্সের এই অভিযাত্রার প্রযোজক মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ। |
|
|
|
|
|
|
|