আশ্চর্য চাঁদের রাত ছিল রবিবার!
হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায়নি হয়তো। কিন্তু চোখের এত কাছে বৈশাখী পূর্ণিমার জ্বলজ্বলে চাঁদ দেখে থমকে গিয়েছেন অনেকেই। বড় বিস্ময় লেগে থমকে দাঁড়িয়েছেন পথিক। হাঁ করে চেয়ে থেকেছেন আকাশপানে। কারণ, রবিবার চাঁদকে অন্যান্য পূর্ণিমার চেয়ে অনেকটাই বড় আর উজ্জ্বল দেখিয়েছে।
কেন?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে করতে কখনও কখনও পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসে চাঁদ। নিজেদের কক্ষপথে চলতে চলতে হঠাৎ একটা মোড়ে যেন একেবারে মুখোমুখি হয়ে যায় চাঁদ আর পৃথিবী পৃথিবী আর চাঁদ। কক্ষপথের যে-বিন্দুতে চাঁদ এবং পৃথিবীর দূরত্ব সব চেয়ে কম হয়, জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলা হয় ‘পেরিজি’। এবং এই ঘটনাকে বলা হয় ‘সুপারমুন’। রবিবার ছিল সেই ‘অতিচন্দ্রমা’র আশ্চর্য রাত। |
কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানান, এ দিন ভারতীয় সময় সকাল ৯টা ৩ মিনিটে চাঁদ পৃথিবীর সব চেয়ে কাছের বিন্দু (পেরিজি)-তে প্রবেশ করে। তার ফলে রাতে চাঁদকে অন্যান্য পূর্ণিমার তুলনায় প্রায় ১৬ শতাংশ বড় দেখিয়েছে। তিনি বলেন, “দূরত্ব কম থাকার কারণেই চাঁদের ঔজ্জ্বল্য এ দিন ছিল তুলনায় বেশি।” বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবী এবং চাঁদের গড় দূরত্ব প্রায় তিন লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এ দিন তা কমে হয়ে গিয়েছিল প্রায় তিন লক্ষ ৫৬ হাজার ৯৫৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ প্রায় ২৭ হাজার ৪৪৫ কিলোমিটার কম।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই চাঁদ এক বার করে পৃথিবীর অনেকটাই কাছে চলে আসে। সাধারণত এক বছর এক মাস ১৮ দিন অন্তর এই ঘটনা ঘটে। ২০১১ সালের ১৯ মার্চ, দোলপূর্ণিমার দিন এই ঘটনা ঘটেছিল। সঞ্জীববাবু জানান, ১৯৯৩ সালের পরে গত বছরই চাঁদ এবং পৃথিবীর মধ্যবর্তী দূরত্ব সব চেয়ে কম হয়েছিল। তিন লক্ষ ৫৬ হাজার ৫৭৫ কিলোমিটার। ২০১৩ সালের ২৩ জুন এবং ২০১৪ সালের ১৪ অগস্ট চাঁদ ফের পৃথিবীর কাছে আসবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন সঞ্জীববাবু।
বিজ্ঞানীরা জানাছেন, সাধারণত জোয়ার-ভাটার উপরে পূর্ণিমার প্রভাব পড়ে। জোয়ারের সময় জল অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়ে যায়। ভাটার সময় কমে যায় জল। তবে এ দিন চাঁদ এবং পৃথিবীর দূরত্ব কমে যাওয়ার ফলে অন্যান্য দিনের তুলনায় জোয়ার-ভাটার উপরে তার কোনও অতিরিক্ত প্রভাব পড়েনি। |