আশঙ্কা বৃষ্টিরও
সৌরভের হার, তবু শহরের শেষ স্টেশন ইডেনই
রাত পৌনে বারোটাতেও শহর জেগে। আকুতি একটাই। মুম্বইয়ের মুনাফ পটেলের শেষ ওভারের শেষ বলে যেন আসে চারটে রান!
পুণে এক রানে হারলেও দাদা-ভক্তরা সেই দাদার দিকেই। যতই পয়েন্ট টেবলে তলানিতে থাক পুণে শনিবারের ম্যাচে দাদা-প্রেমীদের অবস্থান বদলাচ্ছে না।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট খুললেই পাওয়া যাচ্ছে টুকরো টুকরো উদ্ধৃতি। কোথাও লেখা হচ্ছে, ‘পুণে জিতুক, হারুক, আমি গাঙ্গুলিয়ান।’ আবার কেউ লিখছেন, ‘সচিনের বিরুদ্ধে যা-ই হোক, দাদা শনিবার কলকাতা তোমার।’
ধর্মসঙ্কট সৌরভ পুণেতে চলে যাওয়ার দিনই ছিল। কিন্তু এ ভাবে সংশয়ে আক্রান্ত হয়নি শহর। ‘দাদা বনাম খান’ মহাযুদ্ধের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ধর্মসঙ্কটের তাৎপর্য একেবারে অন্য মাত্রায়। কাকে সমর্থন করবে, বা করা উচিত তা নিয়ে শহর পড়েছে ফাঁপরে। এক দিকে দাঁড়িয়ে এমন এক জন, যিনি পনেরো বছর ধরে বাঙালির কাছে ‘ক্রিকেট’ শব্দটার সমার্থক। যার জন্য এ দিন রাতেও সচিন বনাম সৌরভ ম্যাচে শহরের চোখ ছিল টিভির পর্দায়। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পুণে-র জয় চেয়ে এসেছে শহর, যাতে নাইটদের মুখোমুখি হওয়ার আগে সম্মানজনক একটা প্ল্যাটফর্মে থাকে সৌরভের টিম। তা না হলেও দাদা-প্রেমীদের ভাবনার মর্মার্থ--পয়েন্ট তালিকায় সাত কি আটে থাক টিম, কিছু এসে যায় না। সচিনকে হারানো গেল কি গেল না, তাতেও কুছ পরোয়া নেই। এ বারের আইপিএলের একটাই মানে। ইডেনে শাহরুখকে হারাও।
চিন্তা বৃষ্টি। মাঠ ঠিক রাখার চেষ্টা ইডেনে। ছবি: উৎপল সরকার
প্রতিপক্ষ কিং খানের যে এগারো, তারা আবার নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে শহরকে। দুর্দান্ত ফর্মে অধিনায়ক গম্ভীর। পুণে ম্যাচ যখন চলছিল, টিম হোটেলে বসে সেই ম্যাচ দেখছিল গম্ভীর ও তার দলবল। মুম্বইয়ের কাছে পুণে-র এক রানে হার নিয়ে কেকেআর কর্তৃপক্ষের কিছু এসে যায় না। এই কেকেআর, নতুন কেকেআর। এ বারের আইপিএলে নাইটদের প্রায়শই অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছে। এবং অধিনায়ক গম্ভীর বারবার দাবি করছেন শনিবারের ইডেন নাইটদের। সমর্থন পাওয়া নিয়ে নিশ্চিত নাইটরা। লিগ তালিকায় টিম দু’নম্বরে। যতই নিশ্চিত দেখাক নাইটদের, শহরের দ্বিখন্ডিত মেজাজ কিন্তু ধরা পড়ছে একটু কান পাতলেই।
যেমন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এ দিন টিভিতে পুণে বনাম মুম্বই ম্যাচ দেখতে দেখতে বলছিলেন, “খেলা দেখতে নিশ্চয়ই যাব। কিন্তু এখন থেকেই ধর্মসঙ্কটে ভুগছি। কাকে সাপোর্ট করব এখনও ঠিক করে উঠতে পারিনি!”
শহরের ভয় শুধু বৃষ্টিকে। তামাম জনতা ভয় পাচ্ছে, অঝোর বৃষ্টি না ভেস্তে দেয় আইপিএলের ‘এল ক্লাসিকো’। আবহাওয়া দফতরের তেমনই পূর্বাভাস। বৃহস্পতিবার কেকেআর প্র্যাক্টিসে যার ‘ট্রেলার’ দেখে অস্ফুটে এক সিএবি কর্তা বলেও ফেললেন, “শুধু শনিবার না ঢাললেই হয়। নইলে সব গেল।” তবে বৃষ্টির আশঙ্কাকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে টিকিটের হাহাকার। সিএবি জুড়ে যা চলছে! কর্তারা কেউ কেউ তাঁদের নিজেদেরই ভাষায় ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে’! ঘরে তালাচাবি। ফোন বন্ধ। টিকিট চাইলে উড়ে আসছে ছুটকো রসিকতা, “‘চাইলে শাহরুখের পাশে বসিয়ে দেব, শুধু ৫ মে ছেড়ে দিন!’ সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া পর্যন্ত ফাঁপরে। আপনি কোন দিকে? সৌরভ না শাহরুখ? মুচকি হেসে উত্তর, “সত্যিটা বললে আপনারা রেগে যাবেন। ম্যাচটা ভেস্তে গেলেই বোধহয় ভাল!”
কলকাতা পুলিশের আবার অন্য টেনশন। শহর জুড়ে জায়ান্ট স্ক্রিন নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি সঙ্কট তৈরি করবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ। আসছে শনিবার ইডেনে বিভিন্ন ব্লকে ঘুরবে সাদা পোশাকের পুলিশ। যাতে তৈরি না হয় কোনও অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি। কেকেআর মালিকের জন্য নির্দিষ্ট ব্লকেও থাকছে বাড়তি নিরাপত্তার কর্ডন। দাদা-ভক্তেরা কখন কী করবেন বলা তো যায় না। এক কথায়, উত্তেজনার পারদ বেড়ে চলেছে প্রতি মুহূর্তে।
‘কাউন্টডাউন’-ও প্রায় শেষ।
বাকি আর একটা রাত। দিন নয়, ‘দাদা বনাম খান’ এখন ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ডের বৃত্তে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.