ডলারের তুলনায় প্রায় ৫৪ টাকার তলানি ছুঁয়ে ফেলল টাকার দাম। এই নিয়ে টানা তিন দিন অব্যাহত থাকল তার পতন। বৃহস্পতিবারও মার্কিন মুদ্রার সাপেক্ষে আরও ৪৫ পয়সা পড়ল টাকার দর। দিনের শেষে এক ডলারের বিনিময়মূল্য দাঁড়াল ৫৩.৪১/৪২ টাকা। গত সাড়ে চার মাসে যা সর্বোনিম্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক হস্তক্ষেপ না-করলে, এ দিনই ওই দর আরও নেমে পৌঁছে যেত ৫৩.৬৪/৬৫ টাকার কাছাকাছি। গত ডিসেম্বরে যে তলানিতে তলিয়ে গিয়েছিল ভারতীয় মুদ্রা।
টাকার এই পতনের মাসুল গুনে এ দিন প্রায় ১৫১ পয়েন্ট খুইয়েছে সেনসেক্সও। ১৫০.৭২ পয়েন্ট নেমে দিনের শেষে তা থামে ১৭,১৫১.১৯ অঙ্কে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে চড়া রাজকোষ ঘাটতি, কিছু সংস্থার হতাশাজনক ফল, মূল্যবৃদ্ধির ফের মাথাচাড়া দেওয়া এবং চিন্তায় ফেলার মতো জায়গায় শিল্পোৎপাদন সূচকের নেমে আসা।
বিশেষত টাকার দামের পতন কেন বাজারকে এত চিন্তায় ফেলেছে, তা-ও স্পষ্ট করেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি কী বিপুল অঙ্কে পৌঁছেছে, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট। আর রফতানির তুলনায় আমদানি এতখানি বেশি হওয়ার মানেই তো ডলারের ভাঁড়ারে টান পড়া। এই সমস্যার কিছুটা সুরাহা হতো আরও বেশি বিদেশি লগ্নি ভারতে এলে। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগের উপর কর বসানো নিয়ে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখতে লগ্নির সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে বহু সংস্থাই। ফলে ডলার জোগানে ঘাটতির জেরে প্রায় রোজই পড়ছে টাকার দাম। অর্থনীতির এই সঙ্কটেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছে শেয়ার বাজার।বাজারের এই টালমাটাল দশায় নিরাপত্তার খোঁজে প্রত্যাশিত ভাবেই লগ্নি বাড়ছে সোনায়। ফলে দিল্লির বাজারে ১০ গ্রাম গয়নার সোনার দর পৌঁছে গিয়েছে সর্বকালীন রেকর্ড ২৯,৫৫৫ টাকায়। মুম্বইয়ে এই দাম ছিল ২৯,৩১০ টাকা। কলকাতাতেও তা পৌঁছেছে ২৮,২১৫ টাকায়। |