প্রাচীন স্বর্ণমুদ্রা বিক্রি করার নামে প্রতারণার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করল কালনা থানার পুলিশ। মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “মোট ৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। তিন জনকে ধরা হয়েছে। আরও কয়েক জন এই প্রতারণায় যুক্ত।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগরের ঘুর্ণি এলাকার বাসিন্দা, দন্ত চিকিৎসক স্বপনকুমার বিশ্বাস গত ২২ এপ্রিল কালনা থানায় ১৫ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি পুলিশকে জানান, সম্প্রতি মুকুল সরকার নামে এক যুবক তাঁকে জানায়, ১৮ এপ্রিল কালনায় ১০০ দিনের কাজ করতে গিয়ে মাটির তলা থেকে মুঘল আমলের স্বর্ণমুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। পুরনো একটি ঘড়ায় রাখা ছিল সেগুলি। মুকুল স্বপনবাবুকে বলে, সরকারি দফতরের কর্মীরা জানার আগেই কালনার হাতিপোতা গ্রামের এক বাসিন্দার বাড়িতে ওই মুদ্রাগুলি লুকিয়ে রাখা হয়েছে। গোপনে সেগুলি বিক্রি করা হবে। স্বপনবাবু গ্রামে গিয়ে মুদ্রাগুলি দেখে আসেন। তাঁর দাবি, এর পর ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে কিছু মুদ্রাও তিনি কেনেন। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন মুদ্রাগুলি আদৌ সোনার নয়। আদতে তামা ও পিতলের। এর পরেই কালনা থানায় তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হুগলির বলাগড়ের বাসিন্দা সঞ্জয় মজুমদার নামে এক ব্যক্তি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। ৩০ এপ্রিল বলাগড় পুলিশের সাহায্য নিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা জানতে পারে, হাতিপোতা গ্রামের বাসন্তী রায় নামে এক মহিলাও এই প্রতারণা চক্রে জড়িত। সঞ্জয়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধারও করে পুলিশ। পুলিশের আরও দাবি, সঞ্জয় জেরার মুখে জানায়, মুকুল নামে ওই যুবকের বাড়ি নবদ্বীপে। সে পেশায় হাতুড়ে। পুরো ঘটনাটির মধ্যস্থতা করেছিল সে। সঞ্জয়ের বয়ানের ভিত্তিতে বুধবার হাতিপোতা গ্রাম থেকে বাসন্তীদেবীকেও পুলিশ ধরে। তাঁর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।
প্রসঙ্গত, এর আগে হুগলিরই হরিপাল ও জাঙ্গিপাড়া থানা এলাকা থেকে অরুণ আদক ও পলাশ সানা নামে দুই ব্যক্তিকে স্বর্ণমুদ্রা বিক্রি সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বর্তমানে দু’জনেই জামিনে মুক্ত। পুলিশের দাবি, এই প্রতারণা চক্রের জাল অনেক এলাকাতেই ছড়ানো। ক্রেতার বিশ্বাস আদায়ের জন্য প্রথমে কিছু আসল স্বর্ণমুদ্রা দেখানো হয়। ক্রেতা জালে পা দিতেই আসলের বদলে পিতল ও তামার মুদ্রা তাঁর হাতে ধরানো হয়। টাকার ভাগবাঁটোয়ারা হয়ে যায় প্রতারকদের মধ্যে। |