আগুনে পুড়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে। গত রবিবার মালদহের গাজলের সরকারপাড়ায় ওই ছাত্রী অগ্নিদ্বগ্ধ হয়। প্রথমে তাকে গাজল হাসপাতাল পরে সেখানে থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত সোমবার তার মৃত্যু হয়। ওই ছাত্রীর নাম মমতা রায় (১০)। সে গাজল শ্যামসুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ত। ওই ছাত্রী গাজল হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে সে জানিয়েছে, খেলার সময় তার ৪ বান্ধবী তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। গাজল হাসপাতালের চিকিৎসক মোবাসশার হোসেন বলেন, “হাসপাতালে আসার পর ওই বালিকার কিছুটা জ্ঞান ছিল। সে জানায়, চার বন্ধু তার গায়ে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন ধরিয়েছে। পুরো ঘটনা নথিভুক্ত করে থানায় জানিয়ে দিই। পরে মমতাকে মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।” পুলিশ ওই ছাত্রীর চার বান্ধবীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। মালদহের জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ঠিক হয়েছিল তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে। তার পরেই আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের এক জন দ্বিতীয় শ্রেণিতে, এক জন তৃতীয় শ্রেণি, এক জন ষষ্ঠ শ্রেণি এবং এক জন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। যদিও মৃতার পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মৃতার মা যামিনী রায় বলেন, “আমার মেয়ে তো মরেই গেল। আর কার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাব। অভিযোগ জানিয়ে তো মেয়েকে ফিরে পাব না।” পুলিশ সূত্রের খবর, সেখান থেকে রান্নাঘরের সামনে থেকে পাঠটকাঠি এবং একটি লাইটার বাজেয়াপ্ত করেছে। মৃতার প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছে, কেউ ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন লাগায়নি। বাড়িতে লাইটার দিয়ে পাঠকাটি জ্বালাতে গিয়ে ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন লেগেছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যামিনী রায় ও সুকুমার রায়ের একমাত্র কন্যা ছিল মমতা। বাবা ভবঘুরে। তাই মা ও দিদিমা সতীসুন্দরীদেবীর সঙ্গে সে থাকত। বাড়িতে দুটি ভাড়াটে রয়েছে। যামিনীদেবী বিড়ি বেঁধে সংসার চালান। রবিবার গৃহশিক্ষককের কাছে থেকে পড়ে ফেরার পর বিকেল ৪ টা নাগাদ অগ্নিদগ্ধ হয় মমতা। সেইসময় বাড়িতে তার মা ও দিদিমা কেউ ছিলেন না। মমতার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। তাঁদের দাবি, সেই সময় অবশ্য বন্ধুদের কোনও কথা বলেনি মমতা। |