জমি দখল করতে বাড়িতে চড়াও হয়ে স্বামী পরিত্যক্তা এক মহিলাকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল এক সিপিএম নেতার ছেলে ও তাঁর আত্মীয় সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। মালদহের রতুয়ার শিমুলতলা বাঁধ কলোনি এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সহ সভাপতি আবদুল কুদ্দুসের ছেলে সাদেক আলি সহ ৫ জন ওই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে আতঙ্কিত মহিলা পুলিশের দ্বারস্থ হন। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘটনার পর থেকে সাদেক সহ অভিযুক্তরা পলাতক। যদিও সাদেকের বাবা রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সহ সভাপতি ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “জমি নিয়ে মুশা আলি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ওই মহিলার গোলমাল আছে শুনেছি। কিন্তু আমার ছেলে মঙ্গলবার ঘটনার সময় ওই এলাকায় ছিল না। ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লাঞ্ছিত মহিলার স্বামী নুরুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে ভিন রাজ্যে কাজ করে। ১১ বছরের সাদিকুলকে নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকেন। বিড়ি বেঁধে। কখনও দিনমজুরি খেটে সংসার চালান। তিনি নিজেও সিপিএম সমর্থক। প্রায় ৯ বছর আগে মুশা আলি নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে নদী বাঁধ সংলগ্ন ৮ কাঠা জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেন ওই মহিলা। বিক্রির সময় লাগোয়া আরও ৪ কাঠা খাস জমি মহিলাকে ছেড়ে দেন মুশা। রায়তি ও খাস মিলিয়ে ১২ কাঠা জমির উপর রয়েছে ৯টি আমগাছ। মহিলা বলেন, “সামান্য টাকায় জমি কিনেছিলাম। কিন্তু দু’বছর থেকে আমাকে ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে ওই জমি দখলের চেষ্টা করছে মুশা আলি।” স্থানীয় শ্রীপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত কংগ্রেস প্রধান ইউনুস আলি বলেন, “মহিলা দীর্ঘদিন থেকে ওই জমিতে বসবাস করছেন। বর্তমানে জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় সেটা এখন দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে শুনেছি।” মহিলা জানান, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ মুশা দলবল নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে মারধর করে। তিনি ভয়ে ঘরে ঢুকলে তাঁর শাড়ি ছিড়ে শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ। কোনও মতে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি। ফিরে দেখেন ঘরের সমস্ত কিছু লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয়েছে। ভয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসার সাহস পায়নি বলে মহিলার দাবি। তিনি বলেন, “৯ বছর থেকে এখানে বসবাস করছি। এখন আমাকে উচ্ছেদ করতে চাইছে। বলছে জমি নাকি বিক্রি করেনি।” ঘটনার পর থেকে মুশা আলিও গা ঢাকা দিয়েছেন। |