ডাক্তারির স্নাতকোত্তর
দুর্গমের মানে নিয়েই প্রশ্ন, ভর্তির কাউন্সেলিং স্থগিত
কোন হাসপাতাল ‘দুর্গম’ এলাকায় আর কোনটি নয়, তার ফয়সালা হয়নি। এই অবস্থায় চলতি শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যালের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে (এমএস এবং এমডি) সরকারি চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট ২৭০টি আসনে কাউন্সেলিং স্থগিত করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
যে-সব চিকিৎসক রাজ্যের দুর্গম ও উপদ্রুত এলাকার হাসপাতালে টানা তিন বছর কাজ করছেন, স্নাতকোত্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষায় তাঁদের প্রাপ্য নম্বরের সঙ্গে বাড়তি ৩০ নম্বর যোগ করা হবে বলে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই আপিল মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিচারপতি সুবল বৈদ্যের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার জানায়, এই মামলা শেষ না-হওয়া পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকদের কাউন্সেলিং স্থগিত থাকবে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, সরকার সোমবারের মধ্যে প্রাসঙ্গিক সব তথ্য-সহ রিপোর্ট না-দিলে আদালত ওই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেওয়ার কথা ভাববে।
কী জানাতে হবে রিপোর্টে? ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, যে-সব সরকারি চিকিৎসক ওই প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের কর্মস্থল কোথায়; সেখানে যাওয়ার যানবাহন ব্যবস্থা কেমন; স্বাস্থ্য দফতরের মূল কেন্দ্র থেকে সেখানে যেতে কত সময় লাগে; সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কত বছর কাজ করছেন; তিনি আর কোথায় কাজ করেছেন; যে-এলাকায় হাসপাতাল, সেখানে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা কী পাওয়া যায় এ-সব বিষয়ে সবিস্তার তথ্য সোমবারের মধ্যে আদালতে জানাতে হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে। কোন এলাকা কেন ‘দুর্গম’ এবং অন্য এলাকা কেন ‘দুর্গম’ নয়, তা-ও জানাতে হবে বিস্তারিত ভাবে।
সরকারি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যে-সব চিকিৎসক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তাঁদের অভিযোগ ‘দুর্গম ও উপদ্রুত’ এলাকার সংজ্ঞা নিয়ে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, কলকাতার বাঙুর, বাঘা যতীন হাসপাতালের অবস্থানও ‘দুর্গম ও উপদ্রুত’ এলাকায়। অথচ করিমপুর বা ফাঁসিদেওয়া হাসপাতাল যাতায়াতের পক্ষে ‘সুগম’ বলে চিহ্নিত। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং শিলিগুড়ি মহকুমার কোনও হাসপাতালই দুর্গম বা উপদ্রুত এলাকার মধ্যে নয়। অন্য দিকে বহরমপুর, মালদহ, মেদিনীপুর, ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে যাঁরা চিকিৎসা করছেন, ‘দুর্গম’ এলাকার তকমা নিয়ে তাঁরা প্রত্যেকেই ৩০ নম্বর বেশি পাবেন।
আবেদনকারীদের আইনজীবী রাজর্ষি হালদারের বক্তব্য, সরকারি চিকিৎসক হিসেবে কাকে কোথায় নিয়োগ করা হবে, তা ঠিক করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। একই ভাবে কোন চিকিৎসককে কোথায় বদলি করা হবে, স্বাস্থ্য দফতরই সেই সিদ্ধান্ত নেয়। যিনি চাকরি পাচ্ছেন, কর্মস্থল বা বদলির জায়গা ঠিক করার ক্ষেত্রে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই। অর্থাৎ দুর্গম বা উপদ্রুত এলাকায় কাজ করার সুযোগ কারা পাবেন, তা ঠিক করার ক্ষেত্রে নিজের কোনও ভূমিকা না-থাকা সত্ত্বেও এক জন চিকিৎসক বাড়তি নম্বরের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। ভাল পরীক্ষা দিয়েছেন। তবু নিজেদের কোনও দোষ না-থাকা সত্ত্বেও, শুধু বাড়তি নম্বর না-পাওয়ায় বহু সরকারি চিকিৎসকই উচ্চতর শিক্ষাক্রমে ভর্তি হতে পারবেন না।
পরীক্ষায় তুলনামূলক ভাবে খারাপ ফল করেও সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাড়তি ৩০ নম্বরের দৌলতে এগিয়ে যাবেন অনেক চিকিৎসকই।
বিচারপতি তপেন সেন দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে সরকারি বিজ্ঞপ্তি বহাল রাখেন। তবে তিনি জানিয়ে দেন, বিজ্ঞপ্তি জারির আগেই যে-হেতু ভর্তির পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে, তাই চলতি শিক্ষাবর্ষে ওই নিয়মে ভর্তি করা যাবে না। বিচারপতি সেনের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কিছু সরকারি চিকিৎসক হাইকোর্টে আপিল মামলা করেন। এ দিন সেই মামলাতেই কাউন্সেলিং স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.