আমের ফলন কম, চিন্তায় পড়েছেন চাষি
মের ফলনে ঘোর বিপর্যয় উত্তর ২৪ পরগনায়।
আড়াই বিঘে জমিতে আম গাছ আছে গাইঘাটার শিমূলপুরের বাসিন্দা সন্তোষ বৈদ্যের। গত বছর ফলন হয়েছিল প্রায় ৪ কুইন্ট্যাল। কিন্তু এ বার গাছে কার্যত মুকুলই আসেনি। যদিও মুকুল আসার সময়ে গাছের যাবতীয় পরিচর্যার কসুর করেননি। সন্তোষবাবুর কথায়, “কেন যে এ বার মুকুল ধরল না, বুঝতেই পারলাম না।”
সন্তোষবাবুর অভিজ্ঞতা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় এই মরসুমে। উত্তর ২৪ পরগনা উদ্যানপালন দফতর সূত্রের খবর, গোটা জেলায় এ বার আমের উৎপাদন খুবই কম হয়েছে। দফতরের জেলা আধিকারিক দীপক ষড়ঙ্গী বলেন, “ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে তাপমাত্রা হঠাৎ কমে গিয়েছিল। আমের ফলন কম হওয়ার এটা অন্যতম কারণ।” গত কয়েক দিনের ঝড় এবং শিলাবৃষ্টিতে আরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন বহু আমচাষি।
সব মিলিয়ে চাষিদের মাথায় হাত। জেলার বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা সুবলচন্দ্র দাসের আড়াই বিঘা জমিতে আমগাছ আছে। বললেন, “গত বছর আমের অফ ইয়ারেও যত ফলন হয়েছিল, এ বার অন ইয়ারেও তার থেকে ফলন হয়েছে অনেক কম। মুকুল বের হওয়ার সময়ে বৃষ্টি হলে মুকুলের পরিবর্তে কচিপাতা বের হয়।” প্রসঙ্গত, ‘অফ ইয়ারে’ ফলন কম হয়। ‘অন ইয়ারে’ ফলন বাড়ে। এক বছর ‘অফ ইয়ার’ হলে তার পরের বছর ‘অন ইয়ার’ হয়ে থাকে।
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়। প্রায় ১০ হাজার মানুষ আমের চাষ করে থাকেন। গত বছর জেলায় আমের উৎপাদন হয়েছিল ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টনের মতো। গাইঘাটা, হাবরা, বসিরহাট, দেগঙ্গা, গোবরডাঙা, স্বরূপনগর প্রভৃতি এলাকায় আমের চাষ হয় প্রচুর পরিমাণে। দীপকবাবু বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বার আমের ফলন ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কম হয়েছে।” কৃষি বিশেষজ্ঞেরা জানালেন, মুকুল আসার সময়ে বা পরে তাপমাত্রা ২০-২২ ডিগ্রি থাকলে ফলন ভাল হয়। কিন্তু এ বার ওই সময়ে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম ছিল।
গোবরডাঙার আমচাষি সুবীর চৌধুরীর ৪২ বিঘা জমিতে আমচাষ হয়। তিনিও বললেন, “ফলন এ বার খুবই কম হয়েছে। মুকুল বের হওয়ার সময় একটু গরম ভাব প্রয়োজন। কিন্তু ওই সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় সে ভাবে মুকুল ধরেনি।”
এই জেলায় মূলত হিমসাগর আমের ফলন ভাল হয়। পাশাপাশি ল্যাংড়া, বোম্বাই, ফজলি, আম্রপালি চাষও কমবেশি হয়। জেলার বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশেও রফতানি করা হয় এখানকার আম। মুর্শিদাবাদের আম বাজারে আসার আগেই স্থানীয় ভাবে এই আম বাজারে চলে আসে। ফলে চাহিদাও ভাল থাকে।
কিন্তু আমচাষিদের গাছের পরিচর্যার ব্যাপারে আরও যত্নবান হওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। দীপকবাবুর কথায়, “জেলার বেশির ভাগ চাষিই গাছের পরিচর্যা করেন না। সারও দেওয়া হয় না। কৃষি প্রশিক্ষণ শিবিরে আমরা এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.