নবদ্বীপের স্কুল-কলেজ
গ্রীষ্মের সঙ্গে যুঝতে ‘এসি’র দিকে ঝোঁক
তিন তলার ঘরে ক্লাস করতে চায় না নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। কেন? “বাব্বাঃ টানা রোদ্দুরে ঘরটা একেবারে চুল্লি হয়ে থাকে যে!” সমস্বরে বলছে ছাত্রীরা। তিনতলায় ওঠার কথা বাবলে শিউড়ে উঠছেন সে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তেতে থাকা সেই ঘরে অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা দুই-ই দুঃসাধ্য। তার উপরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে, “নাঃ ভাবতেই পারছি না”, বলছেন এক শিক্ষিকা।
নবদ্বীপ বিদ্যালাগর কলেজের চার তলার ছাদে বসানো পানীয় জলের ট্যাঙ্ক। কিন্তু সে কলেজে ছেলেমেয়েরা জল খাওয়ার কথা ভাবতে পারেন না। “এই ভর গ্রীষ্মে ফুটন্ত জল খাওয়া যায়!”
বৈশাখেই এ অবস্থা নবদ্বীপের অধিকাংশ স্কুল-কেলেজে। বর্ষার অপেক্ষায় তাই দিন গোনা ছাড়া ছাত্র-শিক্ষকের আর উপায় কী! দুঃসহ গরম থেকে বাঁচতে নবদ্বীপের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাই জেনারেটর বা কুলার কেনার হিড়িক পড়েছে।
নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের অন্তত ঠান্ডা জল দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে এ বার ওয়াটার কুলারের ব্যবস্থা করেছেন। অধ্যক্ষ বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জেনারেটর একটা রয়েছে। কিন্তু তাতে আর কতটুকু হয়। গরমে জল তো খাওয়া যাচ্ছে না। তাই ওয়াটার কুলার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে।” নবদ্বীপ হিন্দু স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রায় দু’লক্ষ টাকা খরচ করে কিনেছেন শব্দহীন ‘গ্রিন জেনারেটর’। নবদ্বীপ জাতীয় বিদ্যালয় বয়েজ কিনেছে ১৫ কেভি মতো ক্ষমতা সম্পন্ন পরিবেশ সহায়ক জেনারেটর। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তারকনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ছেলেদের কথা ভেবে একটু ঝুঁকি নিয়েই কিনে ফেলা হল জেনারেটর। গরমে বেচারা বড্ড কষ্ট পাচ্ছে। দুপুরে এমনিতেই ক্লাস করা কষ্টসাধ্য। তার উপরে লোডশেডিং হলে ছাত্র-শিক্ষক একেবারে নাজেহার অবস্থা। তাই এই ব্যবস্থা করতে হল।”
নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শ্রুতি লাহিড়ী বলেন, “গরমের দুপুরে বিশেষ করে তিন তলায় ক্লাস করা সত্যিই খুব কষ্টের। লোডশেডিং হলে তার উপরে আরও সমস্যা। আমরা তাই এ বার বড় একটি জেনারেটর কিনেছি।” নবদ্বীপ শিক্ষামন্দির, নবদ্বীপ বকুলতলা বয়েজও বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছে। তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।
কিন্তু খরচ চালানো যাবো তো?
অধিকাংশ স্কুল কর্তৃপক্ষই জানাচ্ছেন, আপাতত স্কুল তহবিল থেকেই বিদ্যুতের বাড়তি খরচের ব্যয়বার বহণ করা হবে। নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক বিমলেন্দু ভৌমিক যেমন বলেন, “প্রায় ১৪০০ ছাত্র রয়েছে স্কুলে। অভিভাবকেরা পাশে দাঁড়ালে জ্বালানির খরচ ঠিক উঠে আসবে।” শিক্ষামন্দির স্কুলের প্রধান শিক্ষক রণজিৎ কুণ্ডু বলেন, “স্কুলের উন্নয়ন তহবিল থেকেই আমরা বেশিরভাগ অর্থ সংগ্রহ করব। দেখা যাক না বিদ্যুতের বিল কেমন আসে তো দেখি, তারপরে ভাবা যাবে।” অন্য একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক বলেন, “এখনই স্কুলের ফি বাড়ানোর কথা ভাবছি না। তবে প্রয়োজন হলে সামান্য বাড়াতে হবে। মনে হয় তেমন হলে অভিভাবকেরা বেঁকে বসবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.