|
|
|
|
স্বামীর ইচ্ছাপূরণ লক্ষ্য মমতাদেবীর |
অভিজিৎ চক্রবর্তী • দাসপুর |
তরুণ মুখ এনে দাসপুরের কঠিন জমিতে যখন নতুন পরীক্ষায় সিপিএম, শাসক তৃণমূল সেখানে খানিক রক্ষণাত্মক। দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব, বিতর্ক পাশ কাটাতে সদ্য-প্রয়াত দলীয় বিধায়কের বিধবা স্ত্রীকেই দাসপুরের উপনির্বাচনে প্রার্থী করার ‘সহজ পথে’ হেঁটেছে শাসক-শিবির। মমতা ভুঁইয়াকে রাজনীতির আঙিনায় কোনও দিনই তেমন ভাবে দেখা যায়নি। বড়জোর ছিলেন বিধায়ক স্বামীর ছায়াসঙ্গী। সে-টুকু অভিজ্ঞতা সম্বল করেই এ বার ভোটের ময়দানে নামতে হচ্ছে প্রয়াত অজিত ভুঁইয়ার স্ত্রী মমতাদেবীকে। স্বামীর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে তৃণমূলের শক্ত এই ঘাঁটিতে ‘সহজ জয়’ মিলবে বলেই মনে করছেন তিনি।
মমতাদেবীর রক্তে অবশ্য রাজনীতি রয়েছে। বাবা নির্মল মাইতি দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজ-নাড়াজোল
|
মমতা ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র। |
পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। মামা সুধীর বেরা ছিলেন দাসপুরের প্রাক্তন বিধায়ক। নাড়াজোল সংলগ্ন হরিরাজপুরে মমতাদেবীর বাপের বাড়ি। নাড়াজোল মহেন্দ্র অ্যাকাডেমিতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেও অবশ্য পাশ করতে পারেননি।
অজিত ভুঁইয়াকে বিয়ের পরে যৌথ সংসারে অভাব টের পাননি প্রথমটায়। নাড়াজোল রাজ-পরিবারে কর্মরত শ্বশুর কালিপদ ভুঁইয়ার মৃত্যুর পরেই শুরু হয় অনটন। মাত্র বিঘা দেড়েক জমি সম্বল করে চলত অজিতবাবুর সংসার। রাজনীতি-পাগল অজিতবাবু পরিবারে তেমন ভাবে সময় দিতে পারতেন না। চেয়ে-চিন্তেই ছেলে কুমারেশ ও মেয়ে মঞ্জুশ্রীকে বড় করেছেন মমতাদেবী। ২০০১ সালে স্বামী বিধায়ক ও তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি হওয়ার পরেও সেই অর্থে স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না সংসারে। বন্যায় বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পরে নাড়াজোলের দলীয় অফিসই হয়ে উঠেছিল স্থায়ী ঠিকানা। এখনও ছেলে কুমারেশকে নিয়ে সেখানেই রয়েছেন মমতাদেবী। অজিতবাবুর ছায়াসঙ্গী বলে পরিচিত মতিন আনসারির কথায়, “নাড়াজোলেই একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকার জন্য অনেক বুঝিয়েছি ম্যাডামকে। কিন্তু ম্যাডাম কষ্ট করেই থাকবেন বলে জানিয়ে দেন।”
সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করার ইচ্ছা কোনও দিনই ছিল না। তাই স্বামীর শূন্য আসনে উপনির্বাচনে লড়ার জন্য তৃণমূলের রাজ্যস্তরের প্রথম সারির নেতারা অনুরোধ করলেও প্রথমে রাজি হননি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ আর ঠেলতে পারেননি। মমতাদেবীর কথায়, “দলনেত্রীর অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারলাম না। তাই প্রার্থী হতে রাজি হয়ে গেলাম। তবে যখন রাজনীতিতে এলামই, তখন জিততে পারলে স্বামীর কাছে শোনা তাঁর ইচ্ছেগুলো পূরণ করব।”
নিজে কী করতে চান?
মমতাদেবী বলেন, “এলাকায় সেচের ও পানীয় জলের ব্যাপক সমস্যা। আমাকে অনেকেই বলেছে। আমি নিজেও ভুক্তভোগী। তাই দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে ওই সমস্যাগুলোর আগে সমাধান করার অনুরোধ জানাব।” |
|
|
|
|
|