ডেকান ইনিংসের পনেরো ওভার পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রেখেও মে দিবসে কটকের ম্যাচটা আমাদের হেরে যাওয়াটা হতাশাজনক। আইপিএলে এখন পুণে সবচেয়ে বড় যে সমস্যায় ভুগছে সেটা হল বোলিং। দিন্দা চোটের জন্য সরে যাওয়ার পর থেকেই আমাদের বোলিং বিভাগের কার্যকারিতা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কামড়টা আমাদের প্রথম কয়েকটা ম্যাচে বোলিংয়ে ছিল। সবচেয়ে জঘন্য অবস্থা আমাদের শেষের দিকের ওভারগুলোর। যেখানে আমরা প্রচুর রান দিয়ে ফেলছি।
এমনকী দিন্দার অভাবে আশিস নেহরার ছন্দও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটাই সত্যি যে, ফাস্ট বোলাররা জুটিতে উইকেট লুঠ করে। ডেকানের বিরুদ্ধে আমরা গোড়াতেই উইকেট তুলেছিলাম। কিন্তু তার ফায়দা তোলা গেল না জুটির অভাবে। ডেকানের শেষ ৫ ওভারই সত্যি বলতে কী ম্যাচটা আমাদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল। আর এই ব্যাপারটা টুর্নামেন্টে প্রথম ঘটল তা-ও নয়। টি-টোয়েন্টির পাটা উইকেটে শেষ ৫ ওভারে ৪৫-৫০ রান ওঠাটা তা-ও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু কোনও টিম যদি বিপক্ষকে শেষ ৬ ওভারে ৯০ রান তুলতে দেয়, তা হলে বিপদে তো পড়বেই। আর পুণের ক্ষেত্রে ঠিক সেটাই ঘটেছে, দুটো ডেকান ম্যাচেই।
আজ আবার ঘরের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সঙ্গে আমরা খেলছি। মুম্বই অবশ্যই ভাল দল। যদিও আপাতত নিজেদের ফর্ম এবং পাশাপাশি জেতার রাস্তা খুঁজে পেতে সমস্যায় রয়েছে। আমাদের আবার জয়ের রাস্তায় ফেরার জন্য টিমের সবাইকে এককাট্টা হতে হবে। বিশেষ করে ঘরের মাঠের দর্শকদের সামনে। কেননা ওঁরা ভীষণ ভাবে আমাদের সমর্থন করছেন। সে জন্যই আমাদেরও দেখাতে হবে যে, পুণে ওয়ারিয়র্স যথেষ্ট ভাল দল এবং টুর্নামেন্টটাও এখনও খোলা আছে, শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ সব দলের কাছেই রয়েছে। রবিন উথাপ্পা আমাদের দলের একজন খুব গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার। আমাদের এখন সবার একসঙ্গে থাকতে হবে, কারণ ভাল ঘটনা কিন্তু রাতারাতিই আবার আমাদের অনুকূলে ঘটতে পারে। আর এই জায়গায় উথাপ্পা টি-টোয়েন্টির একজন খুবই দক্ষ ক্রিকেটার। ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো ক্ষমতা আছে ওর।
ডেকান ম্যাচের কথায় আবার আসি। ওরা একটা পরিষ্কার পরিকল্পনা নিয়ে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল। দলে ব্যাটিং গভীরতা তেমন না থাকায় টপ অর্ডারে তিন বিদেশি ব্যাটসম্যানের লক্ষ্য ছিল পুরো ২০ ওভার ক্রিজে থাকার চেষ্টা করা, তার পরে দেখা কী ঘটে। ১২০ বলে ১৮৭ তোলার চেষ্টা সব সময়ই কঠিন কাজ। তবে আমরা ভালই ব্যাট করেছি। ১৮০-র ওপর রান তাড়া করতে নেমে কোনও দল যদি শেষমেশ ১৩ রানে হারে, বলতেই হবে তারাও ভাল ‘চেষ্টা’ করেছে। তবে ‘চেষ্টা’য় তো আর পয়েন্ট জোটে না। তার জন্য ম্যাচটা জিততে হয়। আর সেটাই এখন আইপিএল ফাইভে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। টুর্নামেন্টে এই প্রথম আমরা কোনও দলের কাছে দুটো ম্যাচই হারলাম আর তার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী।একই সঙ্গে ডেকানের সঙ্গা আর হোয়াইটেরও প্রশংসা করতে হবে। ওরা প্রচুর দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করেছে, ঠিক সময় রান তোলার গতি বাড়িয়েছে। আমরাও একটা সময় পর্যন্ত খুব ভাল ব্যাট করা সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ সময় পরপর দুটো উইকেটে হারিয়ে রান তোলার ছন্দ হারিয়ে বসি। ঠিক এই ব্যাপারটা ঘটেছিল যখন কোটলায় দিল্লি আমাদের রান তাড়া করছিল। আর এতে এটাই প্রমাণিত হয় যে, পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, বেশি উইকেট হাতে থাকাটাই ম্যাচ জেতায়।
|
জাহির খানের বল করা ম্যাচের ১৯তম ওভারে দুই ব্যাটসম্যান রানআউট হয়েও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে চার উইকেটে জিতল কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। ১০ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্জাব উঠে এল আইপিএলে চার নম্বরে। বুধবার প্রথমে ব্যাট করে ১৫৮-৫ তোলে আরসিবি। গেইল ৪২ বলে ৭১। বিরাট কোহলিও (৪৫)। রান তাড়া করতে নেমে শেষ দু’ওভারে মাত্র ৭ দরকার ছিল পঞ্জাবের। ১৯তম ওভারে দুটো রানআউটের পাশাপাশি দু’রান ওঠায় চাপে পড়ে যান ক্রিজে আসা নতুন দুই ব্যাটসম্যান। তবে এক বল বাকি থাকতে ছয় মেরে জিতিয়ে দেন পীযূষ চাওলা।
|