|
|
|
|
মে-দিনে পতাকা তোলায় হামলা, অভিযুক্ত তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মে-দিবস পালন ঘিরেও টক্কর লেগে গেল তৃণমূল-সিপিএমে। এত দিন যা ছিল বামপন্থীদেরই কর্মসূচি, পরিবর্তনের রাজ্যপাটে সে ব্যাপারেও পিছিয়ে থাকতে চায়নি শাসক তৃণমূল। রাজ্য জুড়েই মে-দিবস পালনের কর্মসূচি নিয়েছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএম তথা সিটু সংগঠনকে মে-দিবসের কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই।
মে-দিবসে ‘লাল পতাকা’ তোলাকে কেন্দ্র করে শালবনি, নারায়ণগড়-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে বচসা বাধে মঙ্গলবার। উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, বাড়িতে হামলা চালানোর মতো অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, মে-দিবসকে সামনে রেখে সিপিএমই বেশ কয়েকটি এলাকায় নতুন করে অশান্তি করতে চেয়েছিল।
নারায়ণগড়ের খুরশি পঞ্চায়েতের হরিজনপল্লরি মাঠে সকালে সিপিএম কর্মীরা পতাকা তুলেছিলেন। সন্ধ্যায় সিপিএমের দু’টি শাখা কমিটির সম্পাদক তারাপদ পাত্র ও গদাধর গিরি, পঞ্চায়েত সদস্য মিনতি নন্দী এবং সদস্য বাবলু ধারার বাড়িতে তৃণমূলের লোকজন ভাঙচুর ও লুঠপাট চালায় বলে অভিযোগ। সিপিএমের বেলদা জোনাল কমিটির সম্পাদক ভাস্কর দত্তের অভিযোগ, মে-দিবস ঘিরে এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। পুলিশের কাছে ২০ জন তৃণমূল নেতাকর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বুধবারও এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে শালবনি থানা এলাকায় সিপিএমের ভাদুতলা লোকাল কমিটির সম্পাদক শান্তি ভুঁইয়ের বাড়িতেও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ফলে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যায়নি। পুলিশ দেখে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও পিছু হটে। তবে, রাতে আবার শালবনি সদরে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। সকালে পতাকা তোলাকে কেন্দ্র করেই এখানেও দু’পক্ষে একপ্রস্ত অশান্তি হয়েছিল। তার জেরেই রাতের গোলমাল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। সিপিএমের নেতৃত্বের বক্তব্য, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মারধর করে তৃণমূলের লোকজন। অভিযোগ উড়িয়ে যুব তৃণমূল নেতা সন্দীপ সিংহ বলেন, “পতাকা তোলার সময় ওরাই বরং জোর করে স্থানীয় কয়েক জনকে আনতে চেয়েছিল। মানুষ প্রতিবাদ করেছেন।” রাতের ঘটনায় পুলিশকে লাঠিচার্জও করতে হয়।
সিপিএম-তৃণমূল দু’পক্ষই মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় মে-দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেয় খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার জকপুর, মহেশপুরে ওই দিন বিকেলে তৃণমূলের সভা হয়। জকপুরের সভায় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মৃগেন মাইতি, শ্রীকান্ত মাহাতো, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, প্রদ্যোৎ ঘোষ, অজিত মাইতি প্রমুখ। কেশপুরেও মিছিল ও সভা হয়। উপস্থিত ছিলেন ব্লক সভাপতি আশিস প্রামাণিক, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি চিত্ত গরাই প্রমুখ। গড়বেতাতেও মে-দিবস উপলক্ষে তৃণমূল আয়োজিত কর্মসূচিতে শ্রমিকদের সংবর্ধিত করা হয় বলে জানিয়েছেন যুব-তৃণমূল নেতা জয় রায়। এ ছাড়া শালবনি, নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি, ডেবরা, পিংলা এলাকাতেও তৃণমূলের কর্মসূচি ছিল। সিপিএমও বিভিন্ন এলাকায় মিটিং-মিছিল করে। মঙ্গলবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরে মিছিল হয়। নেতৃত্ব ছিলেন সিপিএমের শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী। সকালে সিপিএমের জেলা কার্যালয়েও এক সভা হয়। অন্য দিকে, এসইউসিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টারের জেলা কমিটির উদ্যোগেও ওই দিন বিকেলে শহরের কলেজ মোড়ে
এক সভা হয়। |
|
|
|
|
|