|
|
|
|
মাঠ দখলমুক্ত করতেও বনধের ডাক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে ফের আন্দোলনে নামছেন মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দনগরের বাসিন্দারা। চলতি মাসের ১৯ তারিখ শহরে ৬ ঘণ্টার বনধেরও ডাক দেওয়া হয়েছে। বনধের সমর্থনে ইতিমধ্যে প্রচারও শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোলকুঁয়াচক, কলেজ মোড়-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাইকি-প্রচার, লিফলেট বিলি করা হয়। খেলার মাঠ দখলমুক্ত করার দাবিতে বনধের ডাক মেদিনীপুরে এই প্রথম। আন্দোলন জোরদার করতে ইতিমধ্যে একটি কমিটিও তৈরি হয়েছে। কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক কার্তিক ধর বলেন, “বাধ্য হয়েই আমরা বনধের ডাক দিয়েছি। আগেও আন্দোলন হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু মাঠ দখলমুক্ত হয়নি।” তাঁর কথায়, “সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ পুলিশ-প্রশাসন উদাসীন। কারও কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। এ বার আন্দোলন আরও জোরদার হবে।”
মেদিনীপুর শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত অরবিন্দনগরে একটি খেলার মাঠ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২-৩ বছর ধরেই মাঠের একাংশ বেআইনি ভাবে দখল করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মাঠের একটা বড় অংশই দখল হয়ে গিয়েছে। সেখানে রীতিমতো বসতি গড়ে তোলা হয়েছে। শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা সোচ্চার হয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন সে ভাবে পদক্ষেপ করেনি বলেই অভিযোগ। স্থানীয়দের বক্তব্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের মদতেই খেলার মাঠ বেআইনি ভাবে দখল করা হয়েছে। |
|
অরবিন্দনগরের মাঠে গজিয়ে উঠেছে বস্তি (বাঁ দিকে)। দখলমুক্ত করতে বনধ
ও তার সমর্থনে প্রচার (ডান দিকে)। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ |
বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকার ফলে শরিক দলকে ‘অসন্তুষ্ট’ করে জবরদখল উচ্ছেদের ঝুঁকিও নেওয়া হয়নি। কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক জগৎরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুশান্ত মল্লিকদের বক্তব্য, “বিষয়টি নিয়ে বহুবার প্রশাসনের কাছে দরবার করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি কী, তা জানানো হয়েছে। কিন্তু, প্রতিবারই শুধু আশ্বাস মিলেছে। কাজের কাজ কিছু হয়নি।”
প্রতিবাদে চলতি মাসের ১৯ তারিখ সকাল ৮টা থেকে মেদিনীপুর শহরে ৬ ঘণ্টার বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, পুলিশ-প্রশাসনের উপর ‘চাপ’ বাড়াতেই এই কর্মসূচি। বন্ধের সমর্থনে ইতিমধ্যে শহরে প্রচারও শুরু হয়েছে। অরবিন্দনগরের বাসিন্দারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মাইকে প্রচার করছেন। পথসভা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কাছে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। অরবিন্দনগরের বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাঠ দখল করে বসতি গড়ে ওঠার পর এলাকায় অবৈধ কার্যকলাপও বেড়ে গিয়েছে। খেলার মাঠ দখল হচ্ছে মেনে মেদিনীপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকেই তৎপর হতে হবে।” তাঁর কথায়, “বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে বহু বার বলেওছি। বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু, উচ্ছেদ হয়নি।” প্রশাসন তো এখন আপনাদের, তা হলেও বেআইনি দখলদারদের সরানো হচ্ছে না কেন? মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা জরুরি। বিষয়টি নিয়ে আমি জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব।” সব মিলিয়ে খেলার মাঠ দখলমুক্ত করা নিয়ে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে মেদিনীপুরে। |
|
|
|
|
|