নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এক সিপিএম কর্মীকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, কোপানোর পরেও প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে দুষ্কৃতীরা তাঁর ধারেকাছে কাউকে ঘেঁষতে দেয়নি। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান ওই ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শ্যামপুরে শ্রীখোল হাইস্কুলের কাছে মঙ্গলবার ভোরে। পেশায় রঙের মিস্ত্রী ওই ব্যক্তির নাম রহমান আলি (৪৫)। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডাকে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। তবে বন্ধে কোনও গোলমাল হয়নি। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় র্যাফ মোতায়েন রয়েছে।
|
সিপিএমের শ্যামপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক এবং হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য মহেন্দ্র রায় এই খুনের জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেন। তাঁর অভিযোগ, “বিধানসভা নির্বাচনের পর আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী রহমানকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। পরিকল্পনা করেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। এমনকী প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে রাস্তার উপরেই তাঁকে ফেলে রাখা হয়। পুলিশ ঠিক সময়ে পৌঁছলে হয়তো তাঁকে বাঁচানো যেত। আমাদের দাবি পুলিশ যেন দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে।”
তৃণমূলের তরফে অবশ্য এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। শ্যামপুরের বিধায়ক ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা কালীপদ মণ্ডল বলেন, “সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। গ্রাম্য বিবাদের জেরেই এই খুন।
পুকুরে মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে কিছুদিন আগে একজনের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল রহমান। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছিল। তবে এ ভাবে খুন হওয়াটা দুঃখজনক। ঘটনার তদন্ত করুক পুলিশ।’’ |
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা বলেন, “সকাল সাড়ে ৬টা খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ওই ব্যক্তি মারা যান। নিহতের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। লাঠি দিয়ে মেরে একজনের মাথা ফাটিয়ে দেন তিনি। সেই ঘটনায় তদন্ত চলছিল। তবে এ দিন খুনের ঘটনায় নিহতের পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে করছে পুলিশ।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রহমান আলি কলকাতায় রঙের কাজ করতেন। প্রতিদিন ভোরে তিনি কাজে বেরিয়ে যেতেন। এ দিনও বাড়ি থেকে বাস ধরতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় ১০-১২ জন দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে।
রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
রহমানের স্ত্রী জ্যোৎস্না বিবির অভিযোগ, “এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ স্বামী কাজে যাওয়ার সময় তৃণমূলের সমর্থক ১০-১২ জন তাঁকে আক্রমণ করে। ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপায়। স্বামীর চিৎকার করছিলেন। তখন আশপাশের অনেক লোকজন ছুটে আসেন। কিন্তু আক্রমণকারীরা সকলকে ভয় দেখায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা স্বামী পড়ে থাকার পরে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই স্বামী মারা যান।” তাঁর বক্তব্য, সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো স্বামীকে বাঁচানো যেত। |