এক পঞ্চায়েত প্রধানের খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ সকাল ১১ থেকে ঔরঙ্গাবাদের রমেশ চক এলাকায় জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালালো বিক্ষোভকারীরা। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল আরজেডি এবং সিপিআইএমএলের (লিবারেশন) সমর্থকরা এই বিক্ষোভে সামিল ছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় প্রায় ৪০ জনের মতো পুলিশ জখম হয়েছেন। অন্য দিকে, বিক্ষোভকারীদের প্রায় ৫০ জনের মতো জখম হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাধীন। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে পুলিশকে গুলি এবং কাঁদানে ছুড়তে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন মহকুমা শাসক (সদর) এবং এসডিপিও।
ঔরঙ্গাবাদের পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ মোহন জৈন বলেন, “ধর্না দেওয়ার নামে আরজেডি এবং সিপিআইএমএলের সমর্থকরা জেলাশাসকের অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে। জেলাশাসক অভয় কুমার সেই সময় অফিসে ছিলেন। তাঁকে পুলিশ কর্মীরা কোনও রকমে রক্ষা করেছেন। এই ঘটনায় পুলিশের প্রায় ৪০ জন জখম হয়েছেন। জেলাশাসকের অফিসের কর্মীরাও আহত হয়েছেন। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপুরা ব্লকের সোনহট্টু পঞ্চায়েতের প্রধান দেবেন্দ্র কুমার এপ্রিল মাসে খুন হন। জনপ্রিয় এই প্রধানের খুন হওয়ার ঘটনা এলাকার মানুষ মেনে নিতে পারেনি। তারপর থেকেই এলাকায় আরজেডি এবং সিপিআই এমএলের সমর্থকরা এই হত্যার প্রতিবাদে, দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আজ সকাল থেকে জেলাশাসকের অফিসের সামনে ধর্না কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল। পুলিশের অভিযোগ, সেই ধর্না মঞ্চ থেকে পুলিশকে লক্ষ করে ইঁট-পাটকেল ছোড়া হয়। তাতে পুলিশের কয়েকজন জখম হন। এরপরে পুলিশ লাঠি চালায়। এই ঘটনার পরেই বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে উদ্দেশ করে বোমা এবং গুলি চালায়। জেলার ডিএসপি (সদর) বিজয় প্রসাদ বলেন, “বিক্ষোভকারীরা পুরো মাত্রায় তৈরি হয়ে এসেছিল। তা না হলে ধর্না মঞ্চে বোমা এবং গুলি এল কী ভাবে? ওরা পুলিশের তিনটি গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে।” অন্য দিকে, আরজেডি-র পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এই পঞ্চায়েত প্রধানের খুনের পিছনে হামপুরা ব্লকের বিডিও যুক্ত। এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক ও আরজেডি নেতা সত্যনারায়ন যাদব বলেন, “বিডিও ওই প্রধানকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করিয়েছেন। পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও তদন্ত করল না। কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেনি।” ওই নেতার অভিযোগ, “পুলিশ প্ররোচনা দিয়েছে। তারপরে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কোনও ভাবে ইট ছুড়ে থাকতে পারে। এরপরেই পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং গুলি চালায়। আমাদের প্রায় ৫০ জনের উপর সমর্থক আহত। মহিলাদের মেরে হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আধ ঘণ্টা পরে মহিলা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।” |