লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত মামলার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় আত্মহত্যার হুমকি দিলেন গুয়াহাটির ছাত্র বিধান বরুয়া। বাড়ির হুমকিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের অস্ত্রোপচার করতে পারছেন না, এই অভিযোগে সম্প্রতি আদালতের দ্বারস্থ হন নিজেকে ‘স্বাতী’ বলে পরিচয় দেওয়া বছর একুশের ওই যুবকটি।
মঙ্গলবার বম্বে হাইকোর্টে বিষয়টি তোলেন বিধানের আইনজীবী আব্বাস নকভি। কিন্তু বিচারপতিরা জানান, এ দিন বিষয়টি তাঁরা শুনবেন না। ৭ মে অবধি আদালত মুলতুবি করে দেওয়া হয়। এর পরেই বিধান সুপ্রিম কোর্ট ও বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি লিখে জানান, বাড়ির লোক তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আটকে দিয়েছে। ফলে মুম্বইতে থাকা তো দূর, খাবার কেনারও সংস্থান নেই তাঁর। এই পরিস্থিতিতে আজ বিকেলের মধ্যে তাঁর পক্ষে রায় না দিলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন বিধান।
বিধান ছোট থেকেই প্রকৃতিগত ভাবে নিজেকে মেয়ে বলে মনে করেন। বহুদিন থেকেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করতে চেয়েছেন তিনি। কিন্তু বিধানের বাবা-মা সামাজিক লজ্জার ভয়ে বিধানের প্রস্তাবে সম্মত হননি। তাঁকে মারধরও করা হয়। এর পর স্কুলের টিফিনের টাকা, কলেজের হাতখরচ বাঁচিয়ে, কাজ করে টাকা জমিয়ে অস্ত্রোপচার করার জন্য তৈরি হন বিধান। তিনি এক ফ্লাইট লেফটেন্যান্টের সঙ্গে প্রণয়সূত্রে আবদ্ধ। মুম্বইয়ের সইফি হাসপাতালে যোগাযোগের পরে ১৭ এপ্রিল তাঁর অস্ত্রোপচারের দিন ধার্য হয়। ৩১ মার্চ বিধান ওরফে স্বাতী বাড়ি থেকে মুম্বই পালান।
কিন্তু বিধানের বাবা সুপ্তিরঞ্জন বরুয়া ছেলের হদিস জানতে পেরে যান। অস্ত্রোপচার আর সম্ভব হয়নি। ক্ষিপ্ত বিধান বাবার বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিধানের দাবি, বাবা তাঁকে ও তাঁর প্রেমিককে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। এমনকী, আলফাকে দিয়ে অপহরণ করানোরও হুমকিও দিয়েছেন। হাসপাতালে যে চিকিৎসকের অস্ত্রোপচার করার কথা, তাঁকেও শাসানো হয়েছে। বিধানের আইনজীবী আব্বাস নকভি জানান, মামলাটি বিচারপতি এস এফ ভাজিফদার এবং এ আর যোশির এজলাসে তোলা হলে, তাঁরা শুনানি ৭ মে অবধি পিছিয়ে দেন। এর পরেই, ক্ষিপ্ত বিধান চিঠি লিখে আত্মহত্যার হুমকি দেন। চিঠিতে বিধান লিখেছেন, “গত দু’সপ্তাহ ধরে ন্যায় চেয়ে দরজায় দরজায় ঘুরছি। অথচ আদালতের কথা শোনার সময় নেই! থাকার জায়গা আমার মৃত্যুর জন্য বোম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দায়ী থাকবেন।” |