নিজেদের দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হয় বুধবার। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা আগেই মাওবাদীরা জানিয়ে দেয়, বৃহস্পতিবার মুক্তি দেওয়া হবে ছত্তীসগঢ়ের সুকমার জেলাশাসক অ্যালেক্স পল মেননকে। গত ২১ এপ্রিল মাঝিপাড়া গ্রাম থেকে মেননকে অপহরণ করা হয়। সোমবার মাওবাদীরা সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিল, ২ মে, বুধবারের মধ্যে জেলবন্দি তাদের আট সহযোগীকে না ছাড়লে ‘জন আদালতে’ মেননের ভাগ্য নির্ধারণ করা হবে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতেই এক এসএমএস বার্তায় মাওবাদীরা জানায়, বৃহস্পতিবার টারমেটলার জনগণের সামনে  মেননকে তারা তাদের তরফের মধ্যস্থতাকারী বি ডি শর্মা এবং জি হরগোপালের হাতে তুলে দেবে।
মঙ্গলবারের এসএমএস বার্তায় মাওবাদীদের দক্ষিণ বস্তার ডিভিশনাল কমিটির তরফে বিজয় মারকাম আরও জানিয়েছেন, ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন জেলে আটক তাঁদের সহকর্মীদের মুক্তি দিতে মধ্যস্থতাকারী বি ডি শর্মা এবং জি হরগোপাল সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
মেননকে মুক্তি দেওয়ার কথা বললেও বুধবার বস্তারের বাচেলি বাজারে হামলা চালাল মাওবাদীরা। গ্রামবাসী সাজা মাওবাদীরা হঠাৎই নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। নিহত হন এক পুলিশকর্মী। জখম হয়েছেন দুই সিআরপিএফ-সহ তিন জন। এই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ বলেন, “আলোচনার মধ্যে এই ধরনের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। যাই হোক মধ্যস্থতাকারীরা কথাবার্তা চালাচ্ছেন। তাঁদের জন্য সরকারি ব্যবস্থাও তৈরি। বৃহস্পতিবার বি ডি শর্মা এবং জি হরগোপাল যখন টারমেটলা যেতে চাইবেন, যাবেন।” বুধবার বি ডি শর্মা ফোনে আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, আজ, বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি এবং হরগোপাল সরকারি হেলিকপ্টারে রায়পুর থেকে চিন্তলনাড় যাবেন। সেখান থেকে টারমেটলা। মেননের মুক্তি নিশ্চিত করতে সরকার এবং মাওবাদীদের পক্ষের চার মধ্যস্থতাকারীর দফায় দফায় আলোচনার পরে সোমবার রাতে একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে বলা হয় রাজ্যের বিভিন্ন জেলে মাওবাদী সন্দেহে আটকদের মুক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকার পক্ষের মধ্যস্থতাকারী নির্মলা বুচ এই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ ঘোষণা করেন, জেলাশাসকের মুক্তির এক ঘণ্টার মধ্যেই এই কমিটি কাজ শুরু করবে। মঙ্গলবারই রমন সিংহের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে একটি চিঠি তুলে দেন বি ডি শর্মা এবং জি হরগোপাল। চিঠিতে বলা হয়েছে, শিল্পোদ্যোগে সমবেত মালিকানার (এ ক্ষেত্রে আদিবাসীদের মালিকানা) সূত্র মানা হোক। যাবতীয় খনিজ সম্পদ আদিবাসীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা হোক। পাশাপাশি গঠিত কমিটিতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি রাখারও দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বি ডি শর্মা এক জন অভিজ্ঞ মানুষ। সরকার তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর আন্তরিক চেষ্টা করছে।” |
