রেখা আসার আগেই দূরত্ব বাড়িয়ে রাখলেন জয়া
মরাও জান কবে সংসদে আসবেন, কোন আসনে বসবেন, জয়া বচ্চনের মুখোমুখি হলে ‘সিলসিলা’র পুনরাভিনয় হবে কিনা নানাবিধ জল্পনায় মুখর ছিল রাজধানী। তার মধ্যে অন্তত একটার নিষ্পত্তি করে দিলেন খোদ জয়াই।
ক’দিন আগে অমিতাভ বলেছিলেন, ফের রেখার সঙ্গে অভিনয় করতে আপত্তি নেই তাঁর। কিন্তু অমিতাভ-জায়া হাঁটলেন উল্টো পথে। রাজ্যসভায় রেখার আসন নির্দিষ্ট হওয়ার পরেই বেশ খানিকটা ‘দূরত্বে’ সরিয়ে নিলেন নিজেকে!
রাজ্যসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, এত দিন কক্ষের ৯১ নম্বর আসনটি বরাদ্দ ছিল জয়া বচ্চনের জন্য। কিন্তু অতি সম্প্রতি তিনি ওই আসন ছেড়ে ১৪৩ নম্বর আসনে বসতে চেয়ে আবেদন করেছেন। সেই আবেদন মেনেও নিয়েছে রাজ্যসভা। রেখার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯৯ নম্বর আসনটি। শপথগ্রহণ যদিও এখনও বাকি।
জয়া আসন বদল না করলে রেখা বসতেন ঠিক তাঁর পিছনের সারিতেই। ফলে বারবার মুখোমুখি হওয়ার ‘বিড়ম্বনা’ এড়ানো জয়ার পক্ষে কঠিন হত। বিভিন্ন শিবিরের মতে, সম্ভবত সেই কারণেই জয়ার আসন বদল। আরজেডি সাংসদ রামকৃপাল যাদব আগে থেকেই বলছিলেন, “সমাজবাদী পার্টি জয়া ভাদুড়িকে এনেছে। তারই কংগ্রেসি জবাব হলেন রেখা। ‘সিলসিলা’র টেনশন এখানেও কাজ করবে।” জয়ার আসন বদলের সিদ্ধান্তে তারই ছায়া দেখছেন সকলে।
সমাজবাদী সাংসদ জয়া যদিও তাঁর আবেদনপত্রে ‘রাজনৈতিক’ কারণই দেখিয়েছেন। জানিয়েছেন, উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বসার জন্যই আসন বদল করতে চান। নতুন আসন অনুযায়ী জয়ার পাশেই বসবেন সপা-র সাধারণ সম্পাদক কিরণময় নন্দ। আর রেখার পাশে? তৃণমূলের জনৈক সাংসদের রসিকতা, ‘সুদর্শন’ ডেরেক ও ব্রায়ানই বোধহয় রেখার ‘কাছাকাছি বসার’ সুযোগটা পাবেন!
বস্তুত রেখার মনোনয়ন ঘিরে দল-মত নির্বিশেষে সেন্ট্রাল হল থেকে মন্ত্রীদের ঘর সর্বত্রই যেন আশির দশকের হাওয়া! আলোচনায় উঠে আসছে ‘উমরাও জান’ থেকে ‘খুবসুরত’, ‘সিলসিলা’ থেকে ‘উৎসব’। যা দেখে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেই ফেললেন, “ভাবলে অবাক হতে হয়, এক জন ৫৭ বছর বয়সী মহিলাকে ঘিরে আজও এত উন্মাদনা!”
কে সামিল নয় এই উন্মাদনায়? দিন কয়েক আগে, ১১ অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতরে বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক অভিযোগে কংগ্রেসকে বিঁধছিলেন মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন। হঠাৎই এক সাংবাদিকের প্রশ্ন, রাজ্যসভায় রেখার মনোনয়ন নিয়ে কংগ্রেসি উদ্যোগ কতটা যুক্তিযুক্ত? লাজুক ভঙ্গিতে হাসতে শুরু করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী। সেই হাসি এত দীর্ঘায়িত হতে থাকল, যে মিনিট দু’য়েক অন্য কোনও প্রশ্ন নিতেই পারলেন না বিজেপি নেতা! এর পরও যত বারই রেখা-প্রসঙ্গ ঘুরেফিরে এসেছে, উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে শাহনওয়াজের মুখ। আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলছেন, “ওঁর সঙ্গে আলাপটা করে ফেলতে হবে। একটা গান গেয়ে শোনাব ভেবেছি।” তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমি বহু দিন থেকেই রেখার ফ্যান। তিনি আমাদের সতীর্থ হচ্ছেন ভাবতেই দুর্দান্ত লাগছে।”
পারস্পরিক এই ‘খুশির’ হাওয়াকে একটু বঙ্কিম দৃষ্টিতেই দেখছেন সমাজবিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী। তিনি মনে করেন, সাংবিধানিক ফাঁকফোঁকর দিয়ে রেখাকে এই পদ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর জনপ্রিয়তা ও গ্ল্যামারকে কাজে লাগানোর জন্য। আশিসবাবুর বক্তব্য, “সংবিধানের ৮০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শিল্প-বিজ্ঞান-সাহিত্য এবং সমাজসেবায় বিশেষ জ্ঞান অথবা হাতে-কলমে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত করতে পারেন। সেখানে রেখার অবদান কতটুকু? নার্গিসকে এই পদ দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তাঁর জীবনে সমাজসেবার একটি বড় প্রেক্ষাপট ছিল।” তবে নিঃসন্দেহে সংসদের ভিতরে আশিসবাবুর মতটি সংখ্যালঘু। অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের কথায়, “আমি খুবই খুশি। রেখা এই মুহূর্তে বড় কোনও কাজের সঙ্গে যুক্তও নন। আশা করব অনেকটা সময় রাজ্যসভায় তিনি দিতে পারবেন।” টালিগঞ্জের নায়ক তথা তৃণমূলের অন্য সাংসদ তাপস পাল জানাচ্ছেন, “উনি যে রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার প্রস্তাব স্বীকার করেছেন, এর জন্য কৃতজ্ঞ। এমন এক জন অভিজ্ঞ ও সচেতন মানুষ অবশ্যই ইন্ডাস্ট্রির সমস্যা ভাল ভাবে তুলে ধরতে পারবেন সংসদে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.