সুরেন্দ্রনাথ কলেজের দিবা ও সান্ধ্য বিভাগে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র ইউনিট আছে। অথচ সেখানে সমান্তরাল ইউনিট খোলার জন্যই টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা গোলমাল পাকাচ্ছেন বলে তাঁর সংগঠন এবং কলেজ-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। কিন্তু শঙ্কু ওই কলেজে নিজেরই সংগঠনের সমান্তরাল শাখা খুলতে চাইবেন কেন? কী ভাবেই বা বোঝা গেল যে, তিনি সমান্তরাল ইউনিট তৈরি করতে চাইছেন?
এর জবাব হিসেবে শঙ্কুর একটি চিঠির কথা বলছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। বিনোদ কাহার ও নজরুল জামাল চৌধুরী নামে দুই বহিরাগতকে শঙ্কুর লেখা ওই চিঠিই তাঁর কলেজ কব্জা করার চেষ্টার প্রমাণ বলে বুধবার জানান তাঁরা। বিনোদ ও নজরুলকে ওই চিঠিতে শঙ্কু লিখেছেন, ওই কলেজে টিএমসিপি ইউনিটের ইনচার্জ করা হয়েছে তাঁদের। কলেজ নিয়ে সবিস্তার রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে তাঁদের কাছে। |
সান্ধ্য কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, “ওই দু’জন (বিনোদ ও নজরুল) আগে সিপিএমের আশ্রিত গুন্ডা ছিল। সরকার বদলের পরে তারা দল বদলেছে। গত শনিবার ওদের নেতৃত্বে এক দল যুবক কলেজে ঢুকে বাঁশ, লাঠি, রড নিয়ে ভাঙচুর চালায়, কর্মীদের মারধর করে। তার আগেই শঙ্কু এসে ইউনিট খোলার কথা জানিয়ে একটি চিঠি দেয় আমাকে।” পূর্ণবাবু জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের যে-সব বিশেষ ক্লাস হওয়ার কথা ছিল, ১৫ মে পর্যন্ত তা বন্ধ রাখা হচ্ছে। পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার্থী ছাড়া কোনও পড়ুয়াকে আপাতত কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
সুরেন্দ্রনাথ দিবা কলেজের অধ্যক্ষ চিন্ময়শেখর সরকার বলেন, “যারা কলেজে গোলমাল করছে, তাদের অনেকেই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। কিন্তু এরা তো নিজে থেকে কিছু করছে না। বাইরে থেকে নিশ্চয়ই কারও মদত রয়েছে। শঙ্কুদেব এক দিন দেখা করতে চেয়েছিলেন। ওঁর জন্য অপেক্ষা করি। কিন্তু উনি আসেননি। এল কয়েক জন দুষ্কৃতী। যারা বিভিন্ন সময়ে কলেজের গোলমালে জড়িত।”
কলেজে পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভিতরে ঢোকা, অনলাইন ভর্তি ইত্যাদি নিয়ম চালু করেছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযুক্তেরা তা মানতে চান না বলে অভিযোগ। কেন? টিএমসিপি-রই এক নেতা বলেন, “অনলাইনে ভর্তি হলে তো কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে, প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভর্তি করানো যাবে না। ফলে টাকা লেনদেনের সুযোগ থাকবে না। তাই গোলমাল পাকানোর চেষ্টা।” অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি শঙ্কু। টিএমসিপি-র উপদেষ্টামণ্ডলীর চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় অবশ্য শঙ্কুর ‘পাশে’ই দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “শঙ্কুর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন বলে মনে হচ্ছে। সত্যতা যাচাই না-করে কিছু বলতে পারব না।”
|