বিরোধী পক্ষ এসএফআইয়ের অভিযোগ নয়। খোদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডার বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে তাঁর সংগঠন অর্থাৎ টিএমসিপি-র অন্দর থেকেই। আর সেই বিশৃঙ্খলার জন্য সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজের পঠনপাঠন ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলেন কর্তৃপক্ষ। এবং তাঁরাও বিশৃঙ্খলার দায় চাপিয়ে দিয়েছেন শঙ্কুর উপরেই।
শঙ্কু ভাঙড় কলেজ চত্বরে মিছিল করে যে-ভাষা ও যে-ভঙ্গিতে কথা বলেছিলেন, তার জন্য স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সংযত হওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতে যে কাজ হয়নি, সুরেন্দ্রনাথের ঘটনাই তার প্রমাণ। বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের মদত দিয়ে সুরেন্দ্রনাথ দিবা ও সান্ধ্য কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে শঙ্কুর বিরুদ্ধে। টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর বিরোধে সিটি (মেন) কলেজেও অস্থিরতা চলছে। কিন্তু সেখানে সরাসরি টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতির নাম জড়ায়নি।
সুরেন্দ্রনাথে দিবা ও সান্ধ্য বিভাগের ছাত্র ইউনিয়ন টিএমসিপি-র দখলেই আছে। কলেজ সূত্রের খবর, সেখানে টিএমসিপি-র সমান্তরাল একটি ইউনিট খুলতে চেয়েই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন শঙ্কু। তাঁর সংগঠনেরই একাংশের অভিযোগ, কলেজে ছাত্র ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় শঙ্কু দুষ্কৃতীদের সাহায্য নিয়ে কলেজ ‘দখল’ করতে চান। ভর্তিকে কেন্দ্র করে অবৈধ লেনদেনের উদ্দেশ্যেই এটা করা হচ্ছে বলে ওই কলেজে টিএমসিপি-সমর্থকদের একাংশের অভিযোগ।
বিহারি, দেবা, কেলে ভোলা-সহ টিএমসিপি-সমর্থক এক দল যুবক জোর করে কলেজে ঢোকার চেষ্টা করছে এবং কলেজ প্রশাসনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন সুরেন্দ্রনাথ দিবা কলেজের অধ্যক্ষ চিন্ময়শেখর সরকার। সান্ধ্য কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একই অভিযোগ জানিয়ে চিঠি পাঠান। কিন্তু পরিস্থিতির পরিবর্তন না-হওয়ায় সান্ধ্য কলেজে পঠনপাঠন আপাতত বন্ধ করে দিতে হচ্ছে বলে কলেজ সূত্রের খবর। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠির উত্তর পাননি অধ্যক্ষেরা। চিন্ময়বাবু বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়ে আবেদন জানাব। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কেও বিষয়টি জানানো হবে।”
কলেজের শিক্ষকদের মতে, মুচিপাড়া থানা ঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলে এই অবস্থা হত না। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চাইতে হত না। পুলিশি সূত্রে বলা হয়, টিএমসিপি-র দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। তার ভিত্তিতে গ্রেফতার ও আত্মসমর্পণ, দুই-ই হয়েছে। কিন্তু গণ্ডগোল থামেনি। এ ব্যাপারে টিএমসিপি-কেই উদ্যোগী হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশকর্তারা। |