প্রায় আড়াই বছর বন্ধ থাকার পরে আগামী সপ্তাহ থেকে ফের চালু হচ্ছে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র। মূলত বটলিফ কারখানার চা পাতা দিয়েই নিলাম শুরু হচ্ছে। এই কেন্দ্রে চা পাতার অভাবেই দীর্ঘদিন নিলাম বন্ধ ছিল। শেষ নিলাম হয়েছিল ২০০৯ সালে। নিলাম কেন্দ্র সুত্রে জানা গিয়েছে, সাপ্তাহিক নিলাম চালাতে প্রতি নিলামে যেখানে নূন্যতম দেড় লক্ষ কেজি চা পাতা প্রয়োজন সেখানে ২০০৯ সালে চা পাতার পরিমাণ কমে কমে মাত্র ৩০০-৫০০ কেজিতে দাঁড়ায়। বাধ্য হয়েই নিলাম বন্ধ রাখতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। গত আড়াই বছরে দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনও সমাধান সূত্র বার হয়নি। চলতি বছরে উত্তরবঙ্গের বটলিফ কারখানাগুলির সংগঠনের পক্ষ থেকে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে চা পাতা পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবে জলপাইগুড়ি নিলাম কেন্দ্র কমিটি এবং চা পর্ষদ সন্মতি দেওয়াতেই ফের নিলাম শুরু হতে চলেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রকে ভালভাবে চালাতে চা পর্ষদ বৈদ্যুতিন নিলাম করার অনুমতি দেয়। বটলিফ কারখানার চা পাতা এবং বৈদ্যুতিন নিলাম এই দুইয়ের ওপর ভর করেই ঘুড়ে দাঁড়াতে চাইছে জলপাইগুড়ি কেন্দ্র। ঠিক হয়েছে আগামী ৮ মে থেকে ফের নিলাম শুরু হবে। সূচনা করবেন নিলাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান তথা জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র। জেলাশাসক বলেন, “নিলাম কেন্দ্র নিয়ে এবারে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী। বটলিফ কারখানা থেকে চা আসছে। বৈদ্যুতিন নিলাম চালু হচ্ছে। সব মিলিয়ে জলপাইগুড়ি কেন্দ্র এবার দেশের অনান্য নিলাম কেন্দ্রের সঙ্গে একই সারিতে পাল্লা দিতে পারবে বলে আশা করছি। নিলাম চালু করতে সব মহল থেকেই প্রত্যাশিত সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে।” নিলামের উদ্যোগ শুরু হতেই ভোলবদলাতে শুরু করেছে নিলাম কেন্দ্রের দফতরের। নিলাম বন্ধ থাকায় গত আড়াই বছরে কার্যত তালা বন্ধ হয়েছিল এই কেন্দ্র। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠনের অনুষ্ঠানে নিলাম কেন্দ্রের হলঘরটি ব্যবহার করা হয়। বুধবার নিলাম কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল বৈদ্যুতিন নিলামের তোড়জোর শুরু হয়েছে। হলঘরে বসানো হয়েছে ২৪টি ল্যাপটপ। চা পর্ষদ নিয়োজিত বিভিন্ন পেশাদারি সংস্থার কর্মীরা বৈদ্যুতিন নিলামের পরিকাঠামো তৈরি করতে ব্যস্ত। কেন্দ্র সূত্রের খবর, ইতিধ্যেই ৪১৯ ব্যাগ বা প্রায় ১৩ হাজার কেজি চা পাতা আগামী ৮ মে-এর নিলামের জন্য জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে নথিভুক্ত হয়েছে। আগামী মাস থেকে চা বাগানগুলিতে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে চা পাতার পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করছে নিলাম কমিটি। উত্তরবঙ্গের ৯১টি বটলিফ কারখানা থেকে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে চা পাতা আসবে বলে জানা গিয়েছে। নিলাম কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী আধিকারিক কমল ভট্টাচার্য বলেন, “চায়ের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়বে। ক্রেতা, বিক্রেতা এজেন্ট সহ সব পক্ষের থেকে যে ধরণের সাড়া পাওয়া গিয়েছে ও যে পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে নিলাম কেন্দ্রের কোনও সঙ্কট নেই।” |