নিত্য যানজটে নাকাল দুর্গাপুর ব্যারাজ
দুর্গাপুর ব্যারাজ ও বড়জোড়া চৌমাথা মোড়ে যানজটে প্রতিনিয়ত নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সকাল ও বিকেলের ব্যস্ত সময়ে এই যানজট এতটাই মারাত্মক আকার নেয় যে তা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে পুলিশও। বাসিন্দাদের মতে, দুর্গাপুর ব্যারাজে ‘টোল’ আদায়ের পদ্ধতি না পাল্টালে ও বড়জোড়া চৌমাথা মোড়ে রাস্তা চওড়া না করা গেলে যানজট কমবে না।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের অভিযোগ, “সারা দিনে বেশ কয়েক হাজার গাড়ি ওই ব্যারাজ দিয়ে পারাপার করে। অথচ ‘টোল’ আদায়ের জন্য কম সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। অনেকেই ব্যারাজের মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে অফিসে ‘টোল’ জমা করতে যান। খুচরো দেওয়া নিয়েও ওই অফিসে সমস্যা হয়। ফলে ব্যারাজে গাড়ি দাঁড়িয়ে যানজট তৈরি হচ্ছে।” তাঁর মতে, ‘টোল’ আদায়ের জন্য আরও কর্মী নিয়োগ করা হলে ও তাঁরা রাস্তায় নেমে ‘টোল’ আদায় করলে যানজট এড়ানো যেত। ব্যারাজ দিয়ে দুর্গাপুর ও বাঁকুড়ায় যাতায়াতকারীদের অনেকেই পুলিশের ওই আধিকারিকের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। তবে একই সঙ্গে তাঁরা ব্যারাজের সংকীর্ণ রাস্তাকেও যানজটের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন। বাঁকুড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অনুপকুমার রায় বলেন, “বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কটি এই জেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তা। প্রচুর বাস, ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ি এই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করে।”
ছবি: বিকাশ মশান।
বড়জোড়ার বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুর্গাপুর ব্যারাজের টোল আদায়কারী সংস্থাকে কর্মী সংখ্যা বাড়াতে বলেছি। রাস্তায় নেমে কর্মীরা যাতে টোল আদায় করে সে পরামর্শ দিয়েছি।” টোল আদায়কারী সংস্থার সম্পাদক জয়দেব সিংহ বীর বলেন, “৩২ জন কর্মী টোল আদায়ের কাজ করেন।” তাঁর দাবি, “কর্মীর অভাব নয়, ব্যারাজ সংকীর্ণ হওয়ায় এবং গাড়ির চালকরা নিয়ম না মানায় এই যানজট তৈরি হচ্ছে।” তাঁর মতে, ব্যারাজের দু’প্রান্তে যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হলে এই সমস্যা অনেকটাই কাটবে।
এই সড়কের উপরে শুধু দুর্গাপুর ব্যারাজেই নয়, বাঁকুড়ার শিল্পাঞ্চল বড়জোড়ার চৌমাথা মোড়েও দিনের ব্যস্ত সময়ে যানজট লেগে থাকে। অন্যান্য যানবাহন ছাড়াও শিল্পাঞ্চলের প্রচুর মালবাহী গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গাড়ির চাপের তুলনায় রাস্তা সংকীর্ণ। পূর্ত দফতর জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাস্তা সাড়ে পাঁচ মিটার থেকে বাড়িয়ে সাত মিটার করা হয়। কিন্তু বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বড়জোড়া চৌমাথা মোড়ে সে ভাবে রাস্তা বাড়েনি। তাই যানজট এই এলাকার রোজকার ঘটনা। এ জন্য প্রায়ই এই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। অথচ রাস্তা সম্প্রসারণ বা যানজট কমানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে এই এলাকার রাস্তা চওড়া করতে হবে এবং ‘ফুটপাথ’ গড়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য বড়জোড়া চৌমাথা মোড়ে ‘ট্রাফিক সিগন্যালিং’ ব্যবস্থা চালু করারও দাবি তোলা হয়েছে।
বড়জোড়ার বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ, পার্থ মণ্ডলরা বলেন, “প্রতিদিন যানজট হচ্ছে। সমস্যা মেটানোর জন্য বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” তাঁদের ক্ষোভ, “বড়জোড়ায় একের পর এক কারখানা গড়ে উঠছে। এর জেরে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু রাস্তাটি চওড়া করার মতো শিল্পের উপযোগী পরিকাঠামো গড়ার দিকে নজর নেই কারও। অবিলম্বে প্রশাসনের এই বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার।” বড়জোড়ার বিধায়কও বলেন, “যানজটে এলাকার বাসিন্দারা জেরবার হচ্ছেন। বড়জোড়া চৌমাথায় রাস্তা চওড়া করার জন্য পূর্ত দফতর ও স্থানীয় পঞ্চায়েতকে নিয়ে শীঘ্রই বৈঠকে বসব।” বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসক অরিন্দম রায়ের আশ্বাস, “সমস্যাটি খতিয়ে দেখা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.