হাওড়া থেকে ‘অপহৃত’ ইঞ্জিনিয়ার অমরেশ মান্নাকে শনিবার রাতে মালদহ স্টেশন থেকে ‘উদ্ধার’ করল পুলিশ। অমরেশবাবুর সঙ্গে ছিলেন দীপঙ্কর পাত্র নামে তাঁর ব্যবসার এক সহযোগী। ঘটনার দিন, অর্থাৎ ২৫ তারিখ অমরেশবাবু দীপঙ্করবাবুর সঙ্গে ধূলাগড়ে দেখা করেন বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ। অমরেশবাবুর মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান দেখে পুলিশ জেনেছিল, তাঁর ফোনগুলি এসেছে উত্তরবঙ্গ থেকে। এর পরে হাওড়া সিটি পুলিশের একটি দল শুক্রবার রাতেই উত্তরবঙ্গে রওনা হয়ে গিয়েছিল।
হাওড়ার ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “উদ্ধারের সময় অমরেশবাবু অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। তবে অমরেশবাবুকে সত্যিই অপহরণ করা হয়েছিল, না তিনি নাটক ফেঁদেছিলেন, সে ব্যাপারে তাঁদের জেরা করা হচ্ছে।”
ঘটনার তদন্তে নেমে শুরু থেকেই ধন্দে তদন্তকারীরা। কারণ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ব্যবসায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন অমরেশবাবু। সেই ক্ষতি সামলাতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটা সুদে ঋণ নেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। কয়েক জনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েওছিলেন। ধূলাগড়ের বাসিন্দা দীপঙ্করবাবুকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাঙ্ক ঋণের চেষ্টা করছিলেন অমরেশবাবু। তাই তিনি নিজেই অপহরণের গল্প সাজিয়ে পরিবারের থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন কি না, তা এখনও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
হলদিয়ার ভবানীপুরের বাসিন্দা অমরেশবাবু চ্যাটার্জিহাট থানা এলাকার চারা বাগানের ঠাকুর রামকৃষ্ণ লেনে একটি বাড়িতে পেয়িং গেস্ট রয়েছেন নয় বছর ধরে। বুধবার ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাতে আর ফেরেননি তিনি। বাড়ির মালিকের মেয়ে পিউ দত্তকে ফোন করে অমরেশবাবু জানান, কাজ পড়ে যাওয়ায় তিনি ফিরবেন না। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি হলদিয়ার বাড়িতে ফোন করে বলেন, তাঁকে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে। মুক্তিপণ না দিলে তাঁকে খুন করা হবে বলেও ফোনে জানান অমরেশবাবু। প্রথমে মুক্তিপণের অঙ্ক বলেন ২০ লক্ষ। পরে ১৫ লক্ষ ও ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে বলে জানান তিনি। এর পরেই রাতে হলদিয়া থেকে চ্যাটার্জিহাট তদন্ত কেন্দ্রে এসে ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁর দাদা পুলকেশ মান্না। |