নিজেই ধরে আনো স্বামীকে, নির্যাতিত বধূকে বলল পুলিশ
ধূ নির্যাতনের অভিযোগ পেয়েও তদন্তে টালবাহানা। আবার সেই একই অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল হাওড়ার মালিপাঁচঘরা থানায় স্বামী, শাশুড়ি, ভাসুর, জা-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। মিঠু রাম নামে ওই বধূর অভিযোগ, পাঁচ দিন কেটে গেলেও পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে উদ্যোগী তো হয়নি, উল্টে বলছে, “নিজেই স্বামীকে ধরে আনো”।
মিঠুর কথায়, “থানায় গেলে তদন্তকারী অফিসার উল্টে আমাকেই বলছেন স্বামীকে খুঁজে ধরে আনতে। শ্বশুরবাড়ির আর কাউকে ধরতেও পুলিশ গা করছে না।” খোদ অভিযোগকারিণীকেই অভিযুক্তকে খুঁজে আনতে বলার অভিযোগটি অবশ্য ওই তদন্তকারী অফিসার তথা থানার সাব-ইনস্পেক্টর (মেজবাবু) জগৎপতি জানা অস্বীকার করছেন না। তাঁর অজুহাত, “ওই মহিলার স্বামী দিলীপ রামের কোনও ছবি নেই। চিনবটা কী করে! তাই ওঁর স্ত্রীকেই বলেছি স্বামীকে খুঁজে দিতে।” কিন্তু মিঠুর শ্বশুরবাড়ির কাউকে গ্রেফতার করা হল না কেন? এই প্রশ্নের জবাবে ওই পুলিশ অফিসার অন্য যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “মাঝে এক দিন মেয়েটির শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সঙ্গে মহিলা পুলিশ না-থাকায় শাশুড়ি-জা-দের ধরতে পারিনি। তার পরে অন্য ব্যস্ততার কারণে আর যাওয়া হয়নি।” জগৎপতিবাবু প্রকারান্তরে মিঠুর অভিযোগের সারবত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডেও ঘটনাটি নিয়ে কার্যত দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “ওই মহিলার অভিযোগের তদন্ত চলছে। সেই সঙ্গে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগটাও খতিয়ে দেখব। দোষ প্রমাণ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণ-কাণ্ড থেকে শুরু করে কয়েক দিন আগের কালীঘাটে বধূ নির্যাতনের ঘটনাতেও পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে। কলকাতার দক্ষিণ শহরতলি গরফায় ইভ-টিজিংয়ের অভিযুক্তকে ধরার পরেও নামমাত্র জরিমানায় ছেড়ে দেওয়া নিয়েও সমালোচনায় পড়েছে পুলিশ।
কিন্তু মালিপাঁচঘরায় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ আনলেন মিঠু? তাঁর দাবি, স্বামীর বিবাহ-বহির্ভুত সম্পর্কের প্রতিবাদ করাতেই তাঁকে নিগৃহীত হতে হয়েছে। মিঠু বলেন, “সোমবার সন্ধ্যায় আমাকে শ্বশুরবাড়িতে আটকে রেখে খুব মারধর করা হয়। কোনও মতে পালিয়ে আমি রাত সাড়ে ১১টায় থানায় যাই।” মিঠুর অভিযোগ, “রাতে অভিযোগ না-নিয়ে পুলিশ আমাকে পরের দিন সকালে আসতে বলে। তার পরে অভিযোগ লেখা হয়। কিন্তু বেশ কয়েক বার থানায় গেলেও তদন্তকারী অফিসার বিষয়টি আমল দিচ্ছেন না।” পুলিশ সূত্রের খবর, দিলীপ-মিঠুর বিয়ে হয়েছে ১৫ বছর আগে। এর আগেও তাঁদের মধ্যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। সালকিয়ার ব্যানার্জিবাগানে মিঠুর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে অবশ্য তাঁর স্বামী দিলীপের দেখা মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.