...আগামী শনিবারের ম্যাচ কোনও ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে নয়। ম্যাচটা পুণে ওয়ারিয়র্স বনাম কেকেআরের।
...আমি কেকেআরে খেলি। এবং সবার মনে রাখা উচিত কেকেআর কলকাতার টিম। এই শহরের টিম। অন্য কোনও টিম এই শহরের প্রতিনিধিত্ব করে না।
...আশা করছি, ৫ মে-র ম্যাচে কলকাতার মানুষ কেকেআরকেই সমর্থন করবে। এই নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই।
বক্তা নাইট অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর।
মাঠে যে ভাবে আগ্রাসন দেখিয়ে উড়িয়ে দিলেন আরসিবি-র মতো হেভিওয়েট টিমকে, মাঠের বাইরেও তেমন উড়িয়ে দিলেন আইপিএল ফাইভের বহুচর্চিত প্রশ্নকে।
৫ মে ইডেন কার? দাদা না খানের? |
প্রশ্ন উঠেছিল, সৌরভকে নিয়ে। বলা হয়েছিল, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তো বলেই দিয়েছেন সে দিন খেলবেন ঘরের মাঠে। আপনি তো জানেন এই শহরের আবেগের সঙ্গে সৌরভ কতটা সমার্থক। রাতের ইডেনে বসে প্রতিবাদী গম্ভীর। সঙ্গে সঙ্গে মাথা নাড়েন। চোখমুখের জ্যামিতি হঠাৎ পাল্টে যায়। বোঝাতে চান, কলকাতা এখন তাঁরও শহর। বারবার তুলে আনছিলেন টিম কেকেআরের কথা। “না, না, এটা আইপিএলে আমার সেরা ইনিংস নয়। ওটা আসা এখনও বাকি। সেঞ্চুরি পাইনি বলেও কিছু এসে যায় না। আমাদের ড্রেসিংরুমে কারওরই কিছু এসে যায় না, যতক্ষণ কেকেআর জিতছে। টিমটা এগারো জনের। কারও একার নয়। আজ আমার কপালে রান ছিল। পেয়েছি। পরের দিন অন্য কেউ পাবে।” কিন্তু এর পরেও তো আপনার মুখে হাসি নেই। গম্ভীরের পাল্টা, “এটা হাসার সময় নয়। এখনও অনেক কাজ বাকি। সেমিফাইনালে ওঠা হয়ে গিয়েছে বলেও মনে করি না। আইপিএলটা শেষ হোক। তার পরে হাসব।”
ইউসুফ পাঠানের ব্যর্থতার সিরিয়াল চলেছে এবং তা নিয়েও টিমমেটের পাশেই গম্ভীর। “এখনও মনে করি ইউসুফ ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ম্যাচ উইনার। ব্যাটে রান পায়নি তো কী হয়েছে, বোলিংটা দেখেছেন? আমার তো মনে হয় শুরুতে ওর বোলিংই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। পরে নারিনও অসাধারণ বল করেছে।” একই কথা স্বীকার করছেন ক্রিস গেইলও। যিনি বলছেন, “এখানে ১৬০-১৭০ তাড়া করা যেত। ১৯০-টা বড় বেশি হয়ে যায়। তার উপর উইকেট বেশ স্লো হয়ে গিয়েছিল শেষ দিকে। কেকেআর অনেক ভাল উইকেটে ব্যাট করেছে।”
মহাযুদ্ধের ঠিক এক সপ্তাহ আগে হাসিমুখেই ইডেন ছাড়লেন শাহরুখ। ক্লাবহাউসের ডান দিকের ‘বি’ ব্লকের রেলিংয়ের ঠিক কোণটা বরাবর আইপিএলে তাঁর জন্য বরাদ্দ। যখনই মাঠে আসেন, দাঁড়ান ওইখানেই। এ দিনও তাই। একটা পা রেলিংয়ে তোলা। হাফ হাতা টি শার্ট। মাঝে মাঝে শুধু হাত নাড়া আর দর্শকদের দিকে বুড়ো আঙুল তুলে দেখানো। ক্রিস গেইলের তাণ্ডব যখন চলছে, তখনও অনুত্তেজিত। হাতে সিগারেট নেই। শুধু দু’এক বার পাশে দাঁড়ানো জয় মেটার সঙ্গে হাল্কা কথোপকথন। ম্যাচ শেষে শুধু উচ্ছ্বসিত দেখাল গলায় বেগুনি স্কার্ফ জড়ানো বলিউডের বাদশাকে। জড়িয়ে ধরছিলেন তাঁর পাশে থাকা সতীর্থদের। যেমন রাতে জড়িয়ে ধরেছেন ক্রিস গেইলকে। যিনি প্রাক্তন মালিক সম্পর্কে দিয়ে গেলেন দরাজ সার্টিফিকেট। “পুরনো টিম নিয়ে আমার কোনও রাগ নেই। এই তো শাহরুখের সঙ্গে কথা হল। কেকেআরের ফাদার ফিগার। শাহরুখকে খুব সম্মান করি। ম্যাচটা জিততে পারলাম না বলে অবশ্য খারাপ লাগছে।”
নাইট মালিকের গেইলকে জড়িয়ে ধরার কারণ আছে। শনিবারের ভরা ইডেন যে ততক্ষণে তাঁকে আশ্বস্ত করেছে, দিয়েছে আত্মবিশ্বাস। শাহরুখ এখন বিলক্ষণ জানেন ৫ মে-র ম্যাচে ইডেন শুধু দাদা-র নয়। খানেরও! |