গোয়া, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ শনিবার রাতে এক সঙ্গে পাঁচ রাজ্যের রাজ্যপালের নাম ঘোষণা করল রাষ্ট্রপতি ভবন। শুক্রবার রাতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উপস্থিতিতে কংগ্রেস কোর গ্রুপের বৈঠকে পাঁচ রাজ্যপালের নাম চূড়ান্ত করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইপিএস ও প্রাক্তন এসপিজি-প্রধান বি ভি ওয়াঞ্চু গোয়ার নতুন রাজ্যপাল হচ্ছেন। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল কে শঙ্করনারায়ন এবং অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল ই এস এল নরসিংহনকে তাঁদের পুরনো পদেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল মার্গারেট আলভাকে রাজস্থানে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী আজিজ কুরেশি।
পাঁচ রাজ্যে রাজ্যপাল বদলের এই খবরের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাজ্যস্থানের নতুন রাজ্যপালের নাম ঘোষণা। কিন্তু কেন? কংগ্রেস সূত্রেই বলা হচ্ছে, রাজস্থানের রাজ্যপাল পদের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে দলেরই অনেক নেতার কুসংস্কার রয়েছে। কারণ জয়পুরের রাজভবনে পূর্ণ মেয়াদ কাটিয়েছেন, এমন রাজ্যপালের নজির সাম্প্রতিক কালে হাতেগোনা। এ ব্যাপারে উদাহরণ দিতে গিয়ে কংগ্রেসের এক নেতা জানান, ১৯৯৮ সালের ১ মে রাজস্থানের রাজ্যপাল হন দরবারা সিংহ। ২৪ দিনের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়। আবার ২০০৩ সালে রাজস্থানের রাজ্যপাল হওয়ার চার মাসের মধ্যেই মৃত্যু হয় নির্মল চন্দ্র জৈনের। ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে রাজস্থানের রাজ্যপাল করা হয় মদনলাল খুরানাকে। কিন্তু কেন্দ্রে ইউপিএ-সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সে বছর নভেম্বরেই রাজ্যপাল পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় খুরানাকে। কতকটা একই ভাবে মাত্র দু’বছর দায়িত্ব পালন করে ২০০৯-এর ডিসেম্বরে মারা যান রাজ্যপাল এস কে সিংহ। তাঁর মৃত্যুর পরে সেই পদে বসানো হয় প্রভা রাওকে। দায়িত্ব নেওয়ার চার মাসের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁরও।
প্রভা রাওয়ের মৃত্যুর পর, অর্থাৎ ২০১০ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে শূন্য পড়ে রয়েছে রাজস্থানের রাজ্যপালের পদটি। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের বহু নেতাই রাজস্থানের দায়িত্ব নিতে আপত্তি জানান। এই অবস্থায় গত দু’বছর ধরে পঞ্জাবের রাজ্যপাল শিবরাজ পাটিল রাজস্থানের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছিলেন। শেষ পর্যন্ত শনিবার মার্গারেট আলভার নাম চূড়ান্ত করা হয়।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, এখনও কেরালা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ-সহ কয়েকটি রাজ্যের নতুন রাজ্যপালের নাম ঘোষণা বাকি রয়ে গেল। এই পদগুলির জন্য যে সব নাম এখনও বিবেচনায় রয়েছে, সেগুলি হল, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর ব্যক্তিগত সচিব তথা কংগ্রেস নেতা আর কে ধাওয়ান, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সি কে জাফর শরিফ এবং মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার শ্রীনিবাস তিওয়ারি। এ ছাড়াও প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার নবীন চাওলা এবং হরিয়ানার কংগ্রেস নেতা ফুলচাঁদ মওলানার নামও বিবেচনায় রয়েছে। |