বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণের তিহাড়-যাত্রার পর কাল থেকেই তহলকা ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে নতুন উদ্যমে প্রধান বিরোধী দলকে আক্রমণ শুরু করেছে কংগ্রেস। দ্বিতীয় দিনে মুখ খুললেন খোদ দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। তিনি আজ টুঙ্কুরে বলেন, “নিজেদের স্বতন্ত্র ধাঁচের দল বলে দাবি করে বিজেপি। তফাৎটা যে কী, সেটা এখন পুরোপুরি প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সেটা হল, দুর্নীতির প্রশ্নে দু’রকম মাপকাঠি তাদের।” আক্রমণ শানান কংগ্রেসের অন্য নেতারাও। দলের মুখপাত্র রশিদ অলভিও বলেন, “এই ঘটনায় কংগ্রেস উল্লসিত নয়, বরং দুঃখিত। এবং তা এই কথা ভেবে যে, কোনও সর্বভারতীয় দলের সভাপতি যদি এই রকম দুর্নীতিগ্রস্ত হন, তবে সমাজের কী হবে? দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎই বা কী? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিব্বলের কথায়, “এই ঘটনাতেই প্রমাণিত হল যে, বিজেপি আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। অন্যের বিরুদ্ধে আঙুল তোলার আগে ওঁরা নিজেদের দেখুন আয়নায়।”
বিশেষ সিবিআই আদালতে বিচারক কানওয়ালজিৎ অরোরা আজ বঙ্গারুর শাস্তি ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, “দুর্নীতি দেহ-ব্যবসার চেয়েও খারাপ। সব চলতা হ্যায় জমানা শেষ করার সময় এসে গিয়েছে। লাগামছাড়া দুর্নীতি, বিশেষ করে রাজনৈতিক দুর্নীতির ঘটনাগুলি আখেরে আইন ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার গুরুত্বকেই লঘু করে ফেলছে।”
এর আগে শাস্তি কম করানোর জন্য আজ সকালেও শেষ চেষ্টা করেন ৭২ বছর বয়সী বঙ্গারু। আদালতে তিনি বলেন, “পর পর দু’বার বাইপাস সার্জারি হয়েছে। শরীর ভাল নয়। তা ছাড়া এই প্রথম এই ধরনের কাজ করে ফেলেছি। এই সব বিবেচনা করে শাস্তি কম করা হোক।” আদালত অবশ্য এই আর্জিতে আমল দেয়নি। কাল তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার পরে পাঠানো হয়েছিল তিহাড় জেলে। আজ শাস্তি ঘোষণার পরে ফের তাঁকে সেখানেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি গত কাল থেকেই বঙ্গারুর থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে কৌশলের অঙ্গ হিসেবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণও চালাচ্ছে। দলের মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ আজ বলেন, “কংগ্রেসের থেকে কোনও পরামর্শের প্রয়োজন নেই বিজেপি-র। বঙ্গারুকে বিজেপি আগেই শাস্তি দিয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিজেপি কখনও কংগ্রেসের মতো ইতস্তত করেনি বা দীর্ঘসূত্রতার আশ্রয় নেয়নি।” |