সাজানো প্রতিরক্ষা চুক্তি। কিন্তু তার ফাঁদে পা দিয়ে ঘুষ নেওয়ার ঘটনাটা ছিল সত্য। ১১ বছর পর সেই তহলকা ঘুষ-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কালই তিহাড় জেলে গিয়েছেন বঙ্গারু লক্ষ্মণ। আজ তাঁর চার বছর কারাদণ্ড ঘোষণা করল বিশেষ সিবিআই আদালত। সঙ্গে জরিমানা এক লক্ষ টাকা। অনাদায়ে আরও ছ’মাস জেল। বঙ্গারুর আইনজীবী জানিয়েছেন, দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করবেন তাঁরা। তবে জামিন না পাওয়া পর্যন্ত তিহাড়ই ঠিকানা প্রাক্তন বিজেপি সভাপতির।
এ দিনের রায়ে দু’টি নজির তৈরি হল দেশে। রাজা-কানিমোঝি-কলমডী থেকে ইয়েদুরাপ্পা-অমর-সুখ রাম সাম্প্রতিক কালে বহু নেতা-মন্ত্রী জেলে গেলেও সর্বভারতীয় একটি রাজনৈতিক দলের প্রাক্তন সভাপতি দুর্নীতির দায়ে জেলে গেলেন এই প্রথম। ‘স্টিং অপারেশন’-এর ক্যামেরায় ধরা পড়ে কোনও নেতার কারাদণ্ডও এই প্রথম ঘটল দেশে। এর আগে প্রশ্ন ঘুষ-কাণ্ডে ১০ জন সাংসদ ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন। ঘুষ নিতে গিয়ে ক্যামেরাবন্দি হন ছত্তীসগড়ের বিজেপি নেতা দিলীপ সিংহ জুদেও। সেই মামলাগুলির নিষ্পত্তি হয়নি এখনও।
২০০১-এ তহলকার অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অনিরুদ্ধ বহেল। তাঁদের কাছ থেকে বঙ্গারু ঘুষ নেন নিজের দফতরে বসে। শর্ত ছিল সেনা সরঞ্জাম কেনার ব্যাপারে সরকারের উপরে প্রভাব খাটাবেন তিনি। সেই টেপে আলোড়ন তৈরি হয় গোটা দেশে। এই প্রশ্নও ওঠে যে, সাজানো চুক্তির ফাঁদে কাউকে ফাঁসানোও কি ঠিক? আদালত তহলকার ‘স্টিং অপারেশন’-এর পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি করলেও তাদের উদ্দেশ্যকে মহৎই বলেছে। বিচারকের কথায়, “দুর্নীতি ফাঁস করাই ছিল সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য।” এই রায়ে নতুন মাত্রা পেতে পারে সাংবাদিকতা। কারণ, আদালতও মানছে, চুক্তিটা সাজানো ছিল, ঘুষটা নয়। হোক না তা মাত্র এক লাখ! |