নিরাপত্তার বেষ্টনী এড়িয়ে হাত -ব্যাগে খেলনা পিস্তল নিয়ে শনিবার সকালে এক বাংলাদেশি নাগরিক প্রায় উঠেই পড়ছিলেন বিমানে।
কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁকে আটকান জেট বিমান সংস্থার এক কর্মী। পরে ওই যাত্রী ও তাঁর পরিবারের যাত্রা বাতিল করে দেওয়া হয়। আজ, রবিবার ওই সংস্থার উড়ানেই তাঁদের ঢাকা ফিরে যাওয়ার কথা। ২১ এপ্রিল ফকরুল ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি পাঁচ বছরের মেয়ের চিকিৎসার জন্য সপরিবারে কলকাতায় আসেন।
নিরাপত্তার স্বার্থে হাত -ব্যাগে খেলনা পিস্তল নিয়েও বিমানে ওঠা যাবে না, এটাই আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণের নিয়ম। কারণ, সেই পিস্তল দেখিয়ে বিমান ছিনতাইয়ের আশঙ্কা থেকে যায়। তাই বিমানে ওঠার আগে প্রত্যেক যাত্রীর হাত -ব্যাগ এক্স -রে করে দেখা হয়। সন্দেহ হলে খুলেও দেখা হয়। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, শনিবারে কলকাতাতেও ওই যাত্রীর হাত -ব্যাগ এক্স -রে করা হয়।
পিস্তলের একাংশ ছিল ধাতব। এক্সরে -তে তা ধরা পড়লে ব্যাগ খুলে দেখাতে বলেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। তখন ফকরুলের স্ত্রী ফতিমা বিবি ব্যাগ থেকে হেয়ার -ড্রায়ার, চুলের ক্লিপ এক এক করে বার করেন। নিরাপত্তারক্ষীদের হয়ত মনে হয়েছিল, হেয়ার -ড্রায়ারের ধাতব অংশই এক্স -রে -তে ধরা পড়েছে। ছেড়ে দেওয়া হয় ফকরুলকে। ব্যাগের মধ্যে রয়ে যায় পিস্তলটি। পুরো ঘটনাটাই তদন্ত করে দেখছেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ )। জেট সংস্থাও আলাদা করে তদন্ত করছে।
বিমানের সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা জেট -এর সেই নিরাপত্তাকর্মীও হয়তো ফকরুলকে পিস্তল সমেত বিমানে উঠতে দিতেন, যদি না এ দিন সকালে বিমানবন্দরের ঢোকার পরে তাঁর সঙ্গে ফকরুলের দেখা না হত। তখন ফকরুলই ওই কর্মীকে বলেছিলেন, তাঁর হাত -ব্যাগে একটি খেলনা পিস্তল আছে। সেই নিরাপত্তাকর্মী তখন পরামর্শ দেন, পিস্তলটি হাত -ব্যাগে না নিয়ে চেক -ইন ব্যাগে (বড় যে ব্যাগটি বিমানের পেটের ভিতরে চলে যায় ) নিয়ে নিতে। কিন্তু, তত ক্ষণে ফকরুলের বড় ব্যাগ চলে গিয়েছে বিমানের পেটে।
এর পরে তিনি আর কাউকে কিছু না বলে হাত -ব্যাগে পিস্তলটি নিয়ে সটান ঢুকে পড়েন নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বিমানে ওঠার মুখে ফের ফকরুলের সঙ্গে দেখা হলে ওই নিরাপত্তাকর্মী জানতে চান, তিনি আদৌ খেলনা পিস্তলটি চেক -ইন ব্যাগে দিয়েছেন কি না। তখন, ফকরুল জানান, সেটি তাঁর হাত -ব্যাগেই রয়ে গিয়েছে। এর পরে বিমানের পেট থেকে তাঁর বড় ব্যাগটিও নামিয়ে দেওয়া হয়। নাকচ হয়ে যায় তাঁদের বিমানযাত্রা। |