ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার উপরে ‘চাপ’ দিয়ে তাঁকে ওই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি ) বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাটের ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে গত বুধবার থেকে কলেজে যাচ্ছেন না ওই শিক্ষিকা শুক্লা চট্টোপাধ্যায়।
ভাঙড়ের পরে ডিরোজিও কলেজেও টিএমসিপি -র দাবি, শুক্লাদেবী সিপিএম করেন। তিনি পরিচালন সমিতি তৈরি করতে উদ্যোগী হচ্ছিলেন না, তাই তাঁর ইস্তফা ‘দাবি’ করা হয়। ওই কলেজে এ বারই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছে টিএমসিপি।
কলেজে নতুন পরিচালন সমিতি তৈরি ও সভাপতি নির্বাচনের দাবিতে কিছু দিন ধরেই আন্দোলন করছে টিএমসিপি। আগের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক রবীন মণ্ডল। তিনি ছিলেন ওই কলেজে সরকার মনোনীত সদস্য। রাজ্যে পালাবদলের পরে উচ্চশিক্ষা দফতর তাঁর সদস্য পদ ফিরিয়ে নেয়, অর্থাৎ তিনি আর ওই কলেজে সরকারি প্রতিনিধি নন। এই অবস্থায় পরিচালন সমিতির সদস্যেরা সিদ্ধান্ত নেন, সভাপতির পদটি আপাতত খালি থাকবে। নতুন সমিতি ও তার সভাপতি ঠিক করতে গত ৭ জানুয়ারি বৈঠক ডেকেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই বৈঠক হয়নি।
শনিবার শুক্লাদেবী বলেন, “গত ৬ জানুয়ারি উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে জানানো হয় যে বৈঠক করা যাবে না। তার পরে আমরা আর বৈঠক ডাকিনি, কারণ দফতর থেকে আমাদের আর কিছু জানানো হয়নি।” তিনি জানান, গত মঙ্গলবার এক দল ছাত্রছাত্রী পরিচালন সমিতি গঠনের দাবি করেন।
শুক্লাদেবীর কথায়, “ঘরে তালা লাগিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আমাকে কলেজে আটকে রাখে। আমার চালকের কাছ থেকে তারা গাড়ির চাবিও কেড়ে নেয়। ওদের দাবি, সাত দিনের মধ্যে পরিচালন সমিতি না গড়লে আমাকে পদত্যাগ করতে হবে।” এই ছাত্রছাত্রীদের সকলেই টিএমসিপি সমর্থক বলে কলেজ সূত্রের খবর। পরের দিনই উচ্চশিক্ষা দফতর, রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় -সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন শুক্লাদেবী। রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অশোকরঞ্জন ঠাকুর শনিবার বলেন, “আমি দিল্লিতে আছি। ফিরে বিষয়টা দেখব।”
টিএমসিপি অবশ্য অধ্যক্ষাকে জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শনিবার কলেজের ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি নাজমুল হাসান গাজি ও অন্য এক নেতা মনোজিৎ বিশ্বাস বলেন, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সক্রিয় সিপিএম কর্মী। কলেজে আসেন না, কিন্তু সিপিএমের মিটিং -মিছিলে দেখা যায় ওঁকে।” শুক্লাদেবী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ছাত্রনেতারা বলেন, “মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার কাছে পরিচালন সমিতি গড়ার দাবি জানানো হয়। সাত দিনের মধ্যে তা না হলে ওঁকে পদ ছাড়ার কথাও বলি। কিন্তু আটকে রাখা, চাবি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।” |