বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের জটে আপাতত রাজ্যে স্থগিত ইনফোসিস প্রকল্প। সরাসরি না-জানালেও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা হিমঘরে ঠেলছে উইপ্রো-ও। রাজারহাটে বরাদ্দ জমির বদলে ঘোষিত বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে জমি দেখানো হয়েছে উইপ্রোকে। সম্ভবত বানতলার সেই জমি পছন্দ না-হওয়ায় রাজ্য সরকারকে এখনও কিছু জানায়নি আজমি প্রেমজির সংস্থা।
|
আজিম প্রেমজি |
গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজারহাটের জমি নিয়ে আলোচনা করেন উইপ্রোর দু’ই কর্তা, পার্থসারথি গুহ পাত্র ও বিজয় অগ্রবাল। সে দিন উইপ্রোর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকের পরে পার্থবাবু জানান, ওই জমির বদলে ঘোষিত বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে বিকল্প জমি চাইছে সংস্থা। উইপ্রোর এই চাহিদা মেটানো যে সহজ নয়, তাও জানান তিনি। তবে লগ্নি হাতছাড়া না-করতে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে রাজ্য যাবতীয় চেষ্টা চালাবে।
এই বৈঠকের সূত্র ধরেই বানতলায় কলকাতা আই টি পার্কে জমি দেখানো হয় উইপ্রো কর্তৃপক্ষকে। সেখানে অবশ্য ৫০ একর জমির সংস্থান করা যাবে না। সংস্থা সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের তরফে ১৫ থেকে ২০ একর জমি দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। এই জমি দেখার পরে এক মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু সংস্থার তরফে কোনও উচ্চবাচ্য নেই। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, জমি পছন্দ হয়নি সংস্থার। ইনফোসিসের মতোই উইপ্রোও বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা চায়। কারণ এ জন্য বরাদ্দ আর্থিক ও অন্য সুযোগ-সুবিধা ছাড়া প্রতিযোগিতার বাজারে কাজ করতে রাজি নয় তারা।
রাজারহাটে ইনফোসিসের ৫০ একর জমির পাশেই রয়েছে উইপ্রোর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য বরাদ্দ জমি। ইনফোসিস জমির পুরো দাম মিটিয়ে দিলেও উইপ্রো এখনও পর্যন্ত ২৫% টাকা দিয়েছে। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজারহাটে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির জন্য জমি পছন্দ করে গিয়েছিলেন উইপ্রো কর্ণধার আজিম প্রেমজি। তিনি সরকারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, কাজ শুরু করতে দেড় বছর সময় লাগবে। গত বছর বর্ষা চলে যাওয়ার পরে কাজ শুরু করে দিতে চেয়েছিল সংস্থা। রাস্তা ও অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য। তা কিছুটা বাকি থাকায় কাজ শুরু করা যায়নি বলে জানায় সংস্থা।নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গত ডিসেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেমজি। প্রেমজি কিছু না-বললেও, বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানান, উইপ্রো কর্তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে তাঁর সংস্থা। ১৫,০০০ কর্মসংস্থান হবে। নতুন করে তৈরি হওয়া জমি জটে সেই প্রতিশ্রুতি আদৌ টেকে কি না, সেটাই প্রশ্ন। রাজ্য কী ধরনের বিকল্প ব্যবস্থা করে, এখন তার দিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল। |