সম্প্রীতির নিদর্শন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি শব্দটা এখন প্রায়ই শোনা যায়। অথচ অনেক আগেই কোচবিহারে এর চল ছিল। সূত্রপাত করে গিয়েছিলেন কোচবিহারের রাজারা। তারই একটি নিদর্শন এখানকার ম্যাগাজিন রোডের মিলিটারি মসজিদ। এর উত্তরে রয়েছে একটি পুলিশ হাসপাতাল। আগে সেখানে ছিল ‘মডেল ডেয়ারি ফামর্’। ১৯৩৯-এ মহারাজ জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ সকলের জন্য খাঁটি ঘি, দুধ, মাখন সরবরাহের জন্য হরিয়ানা থেকে সংকর জাতের গাভী ও বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি এনে তৈরি করেছিলেন এই ফার্ম।
তার থেকে মসজিদের নাম হয় ডেয়ারি ফার্ম মসজিদ। পরে কোচবিহার স্টেট মিলিটারি ফোর্সের ঘাঁটি তৈরি হওয়ায় সেখানের মুসলিম সদস্যদের জন্য মসজিদের প্রয়োজন দেখা দেয়। ফলে ডেয়ারি ফার্ম মসজিদটি নতুন করে তৈরি করার জন্য রাজকোষ থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়। করোগেট টিনের চাল, ইটের দেওয়ালের ঘর ও বারান্দার মসজিদটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ১,৯২৮ টাকা। মিলিটারি ফোর্সের মুসলিম সদস্যরা নমাজ পড়তে আসতেন। তাই পরে নাম হয় মিলিটারি মসজিদ। ১৯৪০-এ নির্মিত মূল মসজিদটি আজও সে রকম আছে। শুধু ঢাকা বারান্দা এবং ইসলামিক পদ্ধতিতে প্রবেশ দ্বার তৈরি হয়েছে। রাজার আমল থেকে চলে আসা বাৎসরিক অনুদান এখনও মসজিদ কর্তৃপক্ষ পান দেবোত্তর ট্রাস্ট থেকে। মহারাজদের রাজত্ব নেই। রয়ে গিয়েছে সম্প্রীতির নিদর্শন।

রামনবমীর পুজো
ফ-বছর রামনবমীতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট সংলগ্ন রঘুনাথপুরে আত্রেয়ী নদীর ধারে রঘুনাথ জিউর মন্দিরে (রামজি) হাজার হাজার ভক্ত পুজো দেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ভোর থেকেই পুজোর প্রস্তুতি। নদীতে স্নান সেরে মন্দিরে ভোগ নিবেদন। এখানে পুজোর মূল ভোগ কচি ডাব। কথিত, যা মানত করা হয় তার দ্বিগুণ ডাব দেওয়া হয়। ফলে প্রচুর ডাব জমা হয় মন্দিরে। পরে সেগুলো ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হয়। আলু, ডাল, ছোলাও ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়।
কবে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল, সে সম্বন্ধে নির্দিষ্ট কিছু জানা যায় না। অনেকের মতে এটি অধুনা বাংলাদেশের বিখ্যাত মান্দা মেলার সমসাময়িক। দেশ ভাগ হওয়ার পর ওপার থেকে চলে আসা মানুষজন রঘুনাথ ঠাকুরের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং পুজো শুরু করেন। পুজো উপলক্ষে মেলা বসে। সাত দিন পর হয় লক্ষণ ভোগ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার ভক্তকে খিচুড়ি প্রসাদ দেওয়া হয়। সঙ্গের ছবিতে মেলার দৃশ্য।

জন্মদিন
উদ্বাস্তু অধ্যুষিত রায়গঞ্জ ছিল কৃষি নির্ভর। ১৯৯২ ১ এপ্রিল তৎকালীন রাজ্য সরকার পশ্চিম দিনাজপুর জেলা বিভাজনের সিদ্ধান্ত নেয়। তৈরি হয় নতুন উত্তর দিনাজপুর জেলা। এ বছর জেলা কুড়ি বছরে পা দিল। নানাবিধ অনুষ্ঠানে উদ্যাপিত হল জলার জন্মদিন। এই অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট হলে বসেছিল ছোটদের বসে আঁকো প্রতিযোগিতা এবং নৃত্য নাট্যের আসর। অধিবাসীদের মধ্যে ছিল উৎসবের জোয়ার। সকলে মেতে ওঠেন খুশিতে।

আলোচনা
সম্প্রতি মালবাজার পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে দু’দিনের জাতীয় স্তরের আলোচনায় বিংশ শতাব্দীতে নারীর মূল্যায়নের বিষয়টি উঠে আসে। ‘বিশ শতকের বাংলা সাহিত্যে নারী’ শীর্ষক এই আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, গুয়াহাটি, বিহারের অধ্যাপক ও গবেষকরা এসেছিলেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবীবিদ্যা চর্চা কেন্দ্রের সহযোগিতায় এটির আয়োজন করেছিল মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ। দু-দিনের আলোচনায় বিংশ শতাব্দীর লেখিকা, রবীন্দ্র সাহিত্যে নারী, বিশ শতকের সমাজে নারীর অবস্থান বিষয়ে বিভিন্ন নিবন্ধ পাঠ করা হয়। আলোচনার দ্বিতীয় দিন ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ও ‘চারুলতা’র অংশ বিশেষ দেখানো হয়।

উদ্যম বনাম বয়স
সরকারি কর্মচারিদের অবসরের বয়স যেখানে ষাট বছর সেখানে শুধু জীবন ও জীবিকার টানে বিরানব্বই বছর বয়সে অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্নার কাজ করেন কোচবিহার জেলার বড়শীলসারী গ্রামের বাসিন্দা ননী ভট্টাচার্য। শৈশবের গণ্ডি পেরিয়ে কৈশোরে পা দেওয়া মাত্র তাঁর এই পেশায় প্রবেশ। জীবনের অনেকটা সময় তিনি দিনহাটার বেশ কয়েকটি বড় হোটেলে রান্নার কাজ করেছেন। আর্থিক অনটনের জন্য লেখাপড়া বেশি করতে পারেননি। তবে পেশার সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক তাঁর রান্নায় অন্য মাত্রা যোগ করে। এই বয়সেও রান্না করতে ক্লান্তি নেই। অনুষ্ঠান বাড়িতে এই বয়সেও তাঁর ডাক পড়ে। তাঁর রান্না আজও একই রকম সমাদৃত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.