কলকাতার গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে স্ত্রীকে নিয়ে ডুয়ার্সের সুনতালেখোলায় যান সল্টলেকের অরিত্র দত্ত। বন্ধ ও বিরোধী শিবিরের গোলমালে সোমবার দুপুর থেকে কার্যত বন্দি তাঁরা। শনিবার ডুয়ার্সের গরুমারায় পৌঁছেছেন তাঁরা। ডুয়ার্সে পৌঁছেই শুনতে পান আদিবাসী বিকাশ পরিষদের দুই গোষ্ঠীর বনধ, পাল্টা বনধ শুরু চলছে রবিবার থেকে। বনধের কবলে যাতে না পড়তে হয় সে কারণে রবিবার ভোর পৌনে পাঁচটায় সুনতালেখোলার দিকে রওনা হন তাঁরা। নির্বিঘ্নে পৌঁছে গেলেও সেখান থেকে ফেরার আর উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না এই ব্যবসায়ী দম্পতি। এদিন দুপুরে সুনতালেখোলা থেকে অরিত্রবাবু টেলিফোনে বলেন, “শুনছি নানা দিকে সংঘর্ষ চলছে। সোমবার দুপুরেই আমাদের ঝালং ও বিন্দুতে রওনা দেওয়ার কথা ছিল। সেখানে রাত কাটিয়ে মঙ্গলবার চাপড়ামারির জঙ্গলে যাওয়ার কথা। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের খবর আসতে শুরু করেছে। আমাদের গাড়ির চালক আর এগোতে চাইছেন না। যে সংস্থাকে দিয়ে বুকিং করিয়েছি তাঁরাও এই পরিস্থিতে ঝালং, বিন্দু বা চাপড়ামারিতে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা এখানকার কিছুই ঠিকমতো চিনি না। অসহায় পড়ে পড়েছি। অগ্রিম মোটা টাকা দিয়ে সব বুকিং করেছি। সেগুলি তো জলে গেলই। এখন প্রাণভয়ে ভুগছি। ঠিকমতো ফিরতে পারলে হয়। কলকাতায় বাড়ির লোকেরাও খুবই চিন্তিত।” |
যে সংস্থা অরিত্রবাবুর বুকিং করেছে, সেই জলপাইগুড়ির বাবুপাড়ার ট্যুর অপারেটর সংস্থার তাপস দে বলেন, “নন, ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের আরও ডজন খানেক পর্যটক দল আটকে রয়েছে। খুবই চিন্তায় রয়েছি। রাতের দিকে ওদের সকলকে গরুমারায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছি। ডুয়ার্সে ফের গোলমাল শুরু হওয়ায় আরও ৩০টি দল বুকিং বাতিল করে দিয়েছে।” এদিনই দার্জিলিং যেতে বহু ঝক্কি পোহাতে হয়েছে এক অস্ট্রেলিয় দম্পতিকে। মেলর্বোনের বাসিন্দা পার জকিম টরেস্টেনসন এবং জলি টরেস্টেনসন মূলত পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত। দার্জিলিং-কার্শিয়াং-ডামডিম চা বলয়ের পর্যটন কেন্দ্রে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ ইউরোপ থেকে পর্যটক পাঠানোর পরিকল্পা করেছেন তাঁরা। সে কারণেই আগে নিজেরা ঘুরে এলাকাটি ভালো করে বুঝতে সোমবার দার্জিলিং যান তাঁরা। বনধের কারণে প্রথমেই ঘন্টাখানেক তাঁদের বাগডোগরা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে হয়। পরে ঘুরপথে খাপরাইল দিয়ে দার্জিলিং পৌঁছন তাঁরা। |