ছাত্রের অপমৃত্যুর পর থেকে তাকে মানসিক নির্যাতনে অভিযুক্ত স্কুলের অধ্যক্ষ এখনও পলাতক। এমন অবস্থায় নিরাপত্তাজনিত কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন বার্নপুরের বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেখার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। ভাঙচুর করা হয় স্কুলের গার্ডরুমেও।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বার্নপুরের ওই ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নিখিল অগ্রবালের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে। মৃতের পরিবারের তরফে হিরাপুর থানায় অভিযোগ করা হয়, অধ্যক্ষের মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছে সে। অধ্যক্ষকে গ্রেফতারের দাবিতে পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখান। শুক্রবার বার্নপুরের ত্রিবেণী মোড়ের কাছে প্রায় সাত ঘণ্টা বার্নপুর রোড অবরোধ করা হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ নিখোঁজ। পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত অধ্যক্ষ গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন, এরকম সম্ভাব্য সব জায়গায় নজর রাখা হচ্ছে। |
সোমবার স্কুলে গিয়ে ছাত্রছাত্রীরা দেখেন, গেটে একটি বিজ্ঞপ্তি টাঙানো রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কে সারদা সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি জারির আগে স্কুলের পঠনপাঠন শুরু হবে না। এই বিজ্ঞপ্তি দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকেরা। স্কুলের গার্ডরুমে ভাঙচুর করা হয়। স্কুলের ভিতরে ইট ছোড়া হয়। অভিভাবকেরা দাবি জানান, অবিলম্বে স্কুলে পঠনপাঠন শুরু করা হোক। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। অভিভাবকদের একাংশের দাবি, অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবকেরা একটি ‘অভিভাবক ও নাগরিক সচেতনতা মঞ্চ’ গড়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় এই মঞ্চের পক্ষ থেকে বানর্পুরে একটি সভাও হয়েছে। আমন্ত্রিত ছিলেন অভিভাবক, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-সহ অনেকে। মঞ্চের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা শিক্ষক অশোক রুদ্র জানান, যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি আরও বেশি উদ্বেগজনক। তাঁর মতে এই অবস্থায় স্কুলের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা জরুরি। |