|
|
|
|
|
এই গরমে ত্বক ঠান্ডা
সূর্যের দাপটে ত্বক ঝলসাবে না। হিট র্যাশ, কালো ছোপ,
ঘাম,
তেলের মুশকিলও শেষ।
রূপটান, খাবারের নিয়ম
বললেন
রূপ বিশেষজ্ঞা শর্মিলা সিংহ ফ্লোরা |
|
|
ভাল করে বোঝার আগেই গরমের দাপট শুরু। আগের মতো মিঠে গরম আর এই কলকাতায় আসে না, এই আক্ষেপ সকলেরই আছে। এখন ৪ মার্চ পর্যন্ত একটু শিরশিরে হাওয়ার পর দিন গরম হাওয়া বইতে থাকে ফলে সাধারণ লোকের অবস্থা হয় ফ্রিজে রাখা আপেলের মতো। এই অবস্থা কেউই চান না। এখন খারাপ দেখার ভয় সকলের মধ্যেই চেপে বসেছে, আগে সকলের মধ্যে একটা মানসিক প্রস্তুতি ছিল, শীতকালে ত্বক শুকনো টানটান লাগবে, গরমে মনে হবে মুখটি তেল চুকচুকে কালো কড়াই। কিন্তু এখন একটাই দাবি, সারা বছর চাই উজ্জ্বল ত্বক। গরম বাল্বের মতো ঝলমলে ত্বক কী করে পাবেন?
গরমে সব থেকে বাজে ভাবে কষ্ট দেয় ঘামাচি বা হিট র্যাশ। লোকজনের সামনে এমন বিশ্রী পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয় যা খুব লজ্জাজনক হয়ে ওঠে। আপনি যদি স্নানের জলে অল্প পরিমাণ পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মিশিয়ে স্নান করেন, তবে সমস্ত গরমকাল দুর্গন্ধ এবং ঘামাচিমুক্ত থাকতে পারবেন। যাদের বেশি কষ্ট হয়, তাদের জন্য একাধিক প্যাক আছে। চন্দন, মুলতানি মাটি এবং লবঙ্গের প্রলেপ লাগান। শরীরের যে যে অংশে ঘামাচি হয় অর্থাৎ ঘাড়ে, পিঠে, বাহুমূলে এবং শরীরের যে যে অংশে অন্তর্বাস থাকে প্রধানত সেই বিশেষ অংশে জল লাগিয়ে রেখে স্নান করে নিন। এতে গরমকালেও আপনার বিশেষ অসুবিধে হবে না।
|
|
রোদে বেরনোর সময় ওয়াটার-বেসড সানস্ক্রিন লাগাবেন। ত্বক তৈলাক্ত হলে সানস্ক্রিন জেল অবশ্যই লাগাবেন। গরমকালে ট্যানের একটা প্রবণতা থাকে এবং এয়ারকন্ডিশন্ড ঘরে বেশি ক্ষণ থাকার ফলে ফলে মুখে হাতে কালো ছোপ বেশি দেখা যায়। এখন সাধারণ মধ্যবিত্তের বাড়িতে একটি এয়ারকন্ডিশনার থাকেই, ফলে প্রতিটি ব্যক্তি সর্বক্ষণ একটি বিশেষ তাপমাত্রার পার্থক্যের মধ্যেই ঘোরাফেরা করতে বাধ্য হয়। বাড়ি গাড়ি, অফিস, শপিং কমপ্লেক্স, রাস্তা সব কিছুর মধ্যে ঠান্ডা গরমের একটি বিশেষ তফাৎ গায়ে লাগে। এটি ত্বকের পক্ষে সব থেকে বেশি ক্ষতিকর। ফলে ত্বকের বিশেষ যত্ন এবং মাসে অন্তত একটি ফেশিয়াল করানো আবশ্যক।
গরমের সময় খাদ্যতালিকায় একটু বিশেষ নজর দিতে হবে। সকালে লাউয়ের রস সব থেকে বেশি উপকারী খাওয়া। এতে হার্ট ভাল থাকে। শরীরের সমস্ত টক্সিন বেরিয়ে যায়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল থাকে। কিন্তু লাউয়ের রস সম্ভব না হলে অন্য কোনও ফলের রস খান। লেবুর জল খান, ঝরঝরে তাজা লাগবে, এনার্জি পাবেন। ঘামের সঙ্গে শরীরের নুন বেরিয়ে গেলে যে ক্লান্তি লাগে, সেটা থেকেও রেহাই পাবেন।
এ ছাড়া গরমে জলীয় ফল এবং জলীয় সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। জলীয় ফল যেমন তরমুজ, ডাব, আনারস, লিচু ইত্যাদি। জলীয় সবজি পটল, ঝিঙে, লাউ। ঋতু অনুযায়ী শাকসবজি, ফল খান। অসময়ের কোনও সবজি খাবেন না। এখন তো সব কিছুই বছরের যে কোনও সময়ে পাওয়া যায়। কিন্তু ইচ্ছে হলেও আপনি গরমকালে ফুলকপি খাবেন না। এতে শরীর অসুস্থ হতে পারে। আসলে মরশুমি-ফল সবজির মধ্যে সেই সময়ে শরীরটাকে সুস্থ রাখার উপাদান থাকে। সেই জন্যই এই পরামর্শ দেওয়া হয়।
|
কয়েকটি প্যাক |
নিমপাতা, তুলসিপাতা মিশ্রণের সঙ্গে চন্দন, এক চামচ লেবুর রস (যে কোনও লেবু), আধ চামচ ওট মিশিয়ে লাগান। রাত্রে শোওয়ার আগে মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে লাগালে ত্বক চকচক করবে। যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁরা দু’ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে লাগাতে পারেন।
যাঁদের তৈলাক্ত ত্বক, অথচ একটু টান লাগে, মাঝে মধ্যেই ব্রন বেরিয়ে যায়, এবং দূর থেকে দেখলে মনে হয় মুখের ত্বক মসৃণ, কিন্তু কাছে এলে বোঝা যায় ত্বক নিখুঁত নয় তাঁরা প্রতি দিন স্ক্রাবার ব্যবহার করবেন। স্ক্রাবার লাগিয়ে অল্প কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করবেন। তার পর ধুয়ে ফেলবেন। কখনও ঘষবেন না। এতে ত্বক মসৃণ হয়ে যাবে এবং ওপেন পোরসও কম হবে। গরম কালে সব সময় গোলাপজল ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের পক্ষে ভাল এবং দুর্গন্ধ দূর করে। |
|
ট্যানের বিশেষ প্যাক |
গরম কালে কালো ছোপ এবং ট্যানের সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই সমস্যা দূর করতে, একটা আমন্ড বাদাম গুঁড়ো করে, তার সঙ্গে আধ চামচ ওট, অল্প দুধ, কয়েক ফোঁটা মধু, একটু লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এই ঘরোয়া প্যাকটি খুব কার্যকর। প্রতি দিনই এটি লাগান। সময়ের অভাবে সম্ভব না হলে সপ্তাহে তিন দিন লাগান। অবশ্যই পার্থক্য বোঝা যাবে। এ ছাড়া যাঁদের সময় আরও কম, তাঁরা অফিস থেকে ফিরে অল্প দই লাগিয়ে (যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত) দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক চকচক করবে এবং মুখ থেকে ক্লান্তির ছাপও চলে যাবে। যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁরা শুধুমাত্র দুধ লাগিয়ে নিতে পারেন। মনের মতো উজ্জ্বল ত্বক পাবেন।
|
গরমের জন্য বিশেষ ফেশিয়াল
শীতে ফেশিয়াল করলে অনেকেরই ঠান্ডা লেগে যায়। গরমে সে সমস্যা নেই। খুব আরামও লাগে। ফ্রুট ফেশিয়াল কিন্তু খুবই প্রয়োজনীয় গরমের জন্য। এ ছাড়া গ্যালভানিক ফেশিয়াল, প্ল্যাটিনাম, পার্ল ফেশিয়াল ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। |
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|