|
|
|
|
মজুরি বকেয়া তিন কোটির, থমকে কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
বকেয়া মজুরির টাকা না-মেলায় জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের কাজ থমকে যাওয়ার অভিযোগ উঠল ময়নাগুড়িতে। বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে ওই ব্লকে মজুরদের প্রায় ৩ কোটি টাকা মজুরি বাকি পড়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রকল্পের জন্য সামগ্রী কেনার টাকা। পঞ্চায়েত কর্তাদের অভিযোগ, সব মিলিয়ে বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। মজুররা পাওনা টাকার জন্য প্রতিদিন দফতরে ভিড় করছে। ওই পরিস্থিতিতে তাঁদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। ময়নাগুড়ি ব্লক প্রশাসনের কর্তারা সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি। যদিও তাঁদের দাবি, এটা আর্থিক বর্ষ শেষের সাময়িক সমস্যা। কয়েক দিনের মধ্যে তা মিটেও যাবে। ময়নাগুড়ির বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “আর্থিক বর্ষ শেষে কিছু সমস্যা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা থেকে টাকা ছাড়া শুরু হয়েছে। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।” বকেয়া মজুরি না-মেটানোয় এলাকার বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হওয়ার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের কাজ বছরভর হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে অর্থের সমস্যা নেই। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরে টাকা আসে। তাই কাজ বন্ধ হওয়ার প্রশ্ন নেই।” যদিও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের ওই দাবি পঞ্চায়েত কর্তাদের অনেকে মেনে নিচ্ছেন না। তাঁদের অভিযোগ, ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রকল্পের টাকা বকেয়া পড়ে থাকায় জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। শুরু ও মাঝামাঝিতে ঠিকঠাক চললেও গত আর্থিক বছরের শেষ থেকে ওই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। অনেকে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। যেমন, পদমতি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দীপক রায় বলেন, “প্রায় ৬ লক্ষ টাকা মজুরির টাকা বকেয়া পড়ে আছে। ওই টাকা না পেলে কাজ করি কেমন করে!” একই সমস্যায় রয়েছেন বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অতীন্দ্রনাথ রায়। তিনি বলেন, “বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৮ লক্ষ টাকা। ওই টাকা না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করতে পারছি না।” দোমহনি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দীনবন্ধু রায় বলেন, “গত আর্থিক বছরের শেষ থেকে জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা বকেয়া পড়েছে। মজুররা দফতরে িaভড় করছেন। কবে টাকা দেওয়া সম্ভব হবে সেটা ওদের বলতে পারছি না।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। নদী সংস্কার থেকে কংক্রিটের রাস্তা তৈরির কাজ ঝড়ের গতিতে চলেছে। আর্থিক হিসেবে প্রায় ১৪ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। টাকার নিরিখে সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে আমগুড়ি, দোমহনি-২, খাগরাবাড়ি-২, মাধবডাঙা-১, ময়নাগুড়ি, রামসাই ও সাপ্টিবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। ওই সমস্তা গ্রাম পঞ্চায়েতে বিভিন্ন প্রকল্পখাতে ১ কোটি টাকার উপরে খরচ হয়েছে। সবচেয়ে কম কাজ হয়েছে পদমতি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা জানান, শুধু শ্রমিকের মজুরি নয়। বাকি পড়েছে কংক্রিটের রাস্তা, কালভার্ট তৈরির সামগ্রীর টাকাও। |
|
|
|
|
|