তাতছে তরাই-ডুয়ার্স
নাগরাকাটার সভা ঘিরে ফের বন্ধের হুমকি শুরু
‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এ ‘অন্তর্ভুক্তি’র প্রশ্নে ফের বন্ধ এবং পাল্টা বন্ধের হুমকিতে তাতছে তরাই-ডুয়ার্স।
ওই ‘অন্তর্ভুক্তি’র দাবিতে কাল, রবিবার ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় জনসভা ডেকেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্বাধীন ‘যৌথ মঞ্চ’। শুক্রবার পর্যন্ত তারা সে ব্যাপারে প্রশাসনের অনুমতি পায়নি। ‘মঞ্চ’-এর নেতা শুকরা মুন্ডা এ দিন বলেন, “প্রশাসন শনিবারের (আজ) মধ্যে অনুমতি না দিলে আমরা সোমবার থেকে ডুয়ার্সে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ পালন করব।” প্রশাসন অনুমতি না দিলেও নাগরাকাটাতে সভা করার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। পক্ষান্তরে এই জনসভার বিরুদ্ধে রবিবার ডুয়ার্সে বন্ধ ডাকা ‘তরাই-ডুয়ার্স জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’র অন্যতম প্রধান আহ্বায়ক তেজকুমার টোপ্পোর ‘হুমকি’, “জনসভা হলে বন্ধও তীব্রতর হবে। ওই সভা থেকে ডুয়ার্সকে জিটিএ-তে দেওয়ার কথা বলা হলে, গোটা ডুয়ার্সে অশান্তি ছড়াবে।” ঘটনা হল, এ দিনই নাগরাকাটায় ওই সভা-মঞ্চের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
এই ‘উত্তপ্ত’ আবহে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখায় জোর দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। নকশালবাড়িতে এ দিন এক দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, “জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির দাবি খতিয়ে দেখার জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে যে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি তৈরি হয়েছে, সেই কমিটি আদিবাসীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসুক। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও থাকুন। আলোচনার মধ্যে দিয়ে ওই এলাকায় শান্তি-সুস্থিতি বজায় রাখার সমাধান সূত্র খুঁজতে হবে।” তাঁর সংযোজন, “ওই উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটিতে আমাদের দলের কোনও বিধায়ক নেই। অথচ তরাই-ডুয়ার্সে আমাদের অনেক বিধায়ক রয়েছেন। আমাদের সেই সব বিধায়কদের সঙ্গে কথা না বলে কমিটি কোনও সিদ্ধান্ত নিলে, তা যথার্থ হবে না বলেই মনে হয়।”
পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্সে এই ‘পরিস্থিতি’র জন্য অবশ্য রাজ্য সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে আরএসপি। আলিপুরদুয়ারে দলের সর্বভারতীয় সম্মেলনে আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী অভিযোগ করেন, “রাজ্য সরকার মোর্চাকে পৃথক রাজ্যের প্রলোভন দিয়েছে। তার জেরেই তরাই ও ডুয়ার্সে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।”
সরকারি সূত্রের খবর, রবিবার ‘যৌথ মঞ্চ’-এর ডাকা সভা নিয়ে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে পুলিশ-প্রশাসনেরও। ওই সভার জন্য বুধবার থেকেই নাগরাকাটার ইউরোপিয়ান ক্লাবের মাঠে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল। এ দিন পুলিশ তা বন্ধ করে দেয়। এসডিপিও (মালবাজার) অরিন্দম সরকার বলেন, “বাইরে থেকে পর্যাপ্ত পুলিশ আনা হচ্ছে। কোনও ভাবেই অপ্রীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না।” মহকুমাশাসক (মালবাজার) দেবযানী ভট্টাচার্য বলেন, “অনুমতি না নিয়ে যদি ওই সভা করা হয়, তা হলে পুলিশ আইনমাফিক ব্যবস্থা নেবে।” তবে প্রশাসনের পক্ষে ‘আশা’র খবর মোর্চা নেতৃত্বের ‘সুর বদল’। আগে মোর্চা নেতারা জানিয়েছিলেন, নাগরাকাটার ওই সভায় হাজির থাকার জোরদার সম্ভাবনা রয়েছে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের। এ দিন অবশ্য মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “আমরা জানতাম, ওই সভার জন্য প্রশাসনের অনুমতি আগেই মিলেছে। অনুমতি যে দেওয়া হয়নি, তা এখন শুনছি। প্রশাসনের অনুমতি না পেলে কী করা হবে, তা আলোচনা করে জানাব।” মোর্চা-অন্দরসূত্রে খবর, দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশের দাবি, আপাতত দার্জিলিঙের চক বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত গুরুঙ্গের। সেই ‘বাধ্যবাধকতা’ মোর্চা সভাপতির পক্ষে উপেক্ষা করা সম্ভব না-ও হতে পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.