বৈশাখের শুরুতেই গরমে জ্বলছে রাঢ়বঙ্গ, সঙ্কট জলের
লছে পিচ, বইছে ‘লু’। বৈশাখের শুরুতেই তীব্র দাবদাহে নাজেহাল বাঁকুড়া-পুরুলিয়াবাসী। শেষ কালবৈশাখী হয়েছে দিন সাতেক আগে। যদিও তার প্রভাব ছিল খুবই কম। এই তীব্র গরম এক দিকে যেমন প্রভাব ফেলেছে জনজীবনে, তেমনই ক্ষতি করছে চাষের। আবার বেশ কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে জল সঙ্কট। শুক্রবার বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পুরুলিয়ায় ছিল ৪০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ছাতাই ভরসা। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
গরমের হাত থেকে নিস্তার পেতে বাঁকুড়া জেলার কোর্ট, প্রাইমারি স্কুলগুলি ইতিমধ্যেই সকালে করা হচ্ছে। জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্রজবাসী বিশ্বাস বলেন, “গরমের জন্য গত ১৭ এপ্রিল থেকে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে কোর্ট খোলা হচ্ছে।” আর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গত ২ এপ্রিল থেকে জেলার প্রাথমিক স্কুল সকালে করা হয়েছে। গরমের জন্য তিনমাস সকালে স্কুল চালানো হবে।” কোর্টে জমি রেজিস্টেশন করাতে আসা দীপক রজক বলেন, “এই গরমে বাসে ট্রেনে যাতায়াত করা খুব মুসকিল হচ্ছে। জেলায় বেশ কিছু এলাকায় জলের স্তর নেমে গিয়ে পানীয় জলের অভাব দেখা দিচ্ছে।” বাঁকুড়া শহরের ৪ নম্বর ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে জলস্তর নেমে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে জল পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।
আড়শায় পানীয় জলের খোঁজে। ছবি: প্রদীপ মাহাতো।
ওই এলাকার বধূ সীমা পাত্র, মীরা বারুইরা বলেন, “দীর্ঘদিন টাইমকলে জল আসে না। পুরসভাকে জানিয়েও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে জল আনতে হচ্ছে। যদিও বাঁকুড়া পুরপ্রধান শম্পা দরিপার দাবি, “ওই এলাকায় জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে জল দেওয়া হচ্ছে।” বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, “গত বছর গরমে হাতে গোনা কয়েক বার জলগাড়ি এসেছিল। কিন্তু এই বছর গরমে এক বারও আসেনি।” এ দিকে, কোতুলপুর ব্লকের চাষি নারায়ণ দে, বলরাম কোটাল, গোরাচাঁদ দেরা বলেন, “সেচ ব্যবস্থা না থাকায় পুকুরের জলই চাষের কাজে আমাদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু এলাকার পুকুরগুলিও শুকিয়ে গিয়েছে। ফলে জলের অভাবে চাষ করা যাচ্ছে না।” জেলার উপকৃষি অধিকর্তা অনন্ত নারায়ণ হাজরার আশঙ্কা, “বোর ধান ক্ষতির রিপোর্ট কিছু পাইনি। তবে এ বছর ঠিকঠাক বৃষ্টি না হলে ক্ষতি হতে পারে।”
পুরুলিয়ায় শুকিয়ে যাওয়া কাঁসাই নদীতে স্নান। ছবি: সুজিত মাহাতো।
অন্য দিকে, পুরুলিয়া জেলার ছবিটাও প্রায় একই রকম। রাস্তাঘাটে পথচারীরা গরম বাতাসের চোটে কাহিল। বেলা বাড়তেই পথঘাট ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনেও খুব কম লোক। প্রয়োজনে যাঁরা বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন, তাঁরা চোখ-মুখ ঢেকে বেরোচ্ছেন। রাস্তার পাশে নলকূপ, টাইমকলের থিকথিকে ভিড়। সুরুলিয়া বন্যপ্রাণী পুনবার্সন কেন্দ্রে পশুদের খাদ্য তালিকাতেও বদল ঘটানো হয়েছে। ওই কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত বনাধিকারিক নিত্যান্দ গরাঁই জানান, হরিণ, ভালুক, বাঁদরদের ছোলা, গুড়, তরমুজ খেতে দেওয়া হচ্ছে। বেশি জল খাওয়ানো হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.