প্রতিবাদে মিছিল তৃণমূলের
কোতুলপুরে সুচিত্রার স্বামী ব্লক সভাপতি
ত্মসমর্পণকারী মাওবাদী শীর্ষনেত্রী সুচিত্রা মাহাতোর স্বামী প্রবীর গড়াইকে বাঁকুড়ার কোতুলপুরের ব্লক সভাপতি করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার কোতুলপুরে প্রতিবাদ মিছিল করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি নিমাই ঘোষ ও তাঁর অনুগামীরা। মিছিলে থাকা পোস্টারে লেখা ছিল, ‘স্বঘোষিত ব্লক সভাপতি মাওবাদী নেতা প্রবীর গড়াইকে আমরা মানছি না, মানব না।’ তাঁর বিরুদ্ধে ‘বন্দুক দেখিয়ে অবৈধ বালি খাদ চালানোর’ অভিযোগ তুলে লিফলেটও ছড়ায় বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁ বলেন, “দলের উপর মহল প্রবীর গড়াইকে কোতুলপুরের ব্লক সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিবর্তন সকলের মেনে নেওয়া উচিত।”
সুচিত্রা মাহাতোর স্বামী প্রবীর গড়াইকে ব্লক সভাপতি করায় বিক্ষোভ তৃণমূলের।
মাওবাদী-তৃণমূল সম্পর্ক নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র। তাঁর টিপ্পনী, “মাওবাদী আর তৃণমূলের কোনও ভেদ ছিল না। বহু খুনে অভিযুক্ত মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোর স্বামী প্রবীর গড়াইকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি করায় ফের তা প্রমাণিত হল।” তৃণমূলের দীর্ঘদিনের কোতুলপুর ব্লক সভাপতি নিমাই ঘোষ বলেন, “মাটি কামড়ে থেকে বাম জমানায় আমরা লড়াই করে তৃণমূলের ভিত গড়েছি। তাই মাওবাদী নেতা প্রবীর গড়াইকে ব্লক সভাপতি হিসেবে সাধারণ মানুষ মেনে নিচ্ছেন না।” কোতুলপুরের রানাহাট গ্রামের বাসিন্দা প্রবীরবাবুর দাবি, “মাওবাদীদের সঙ্গে কোনও দিনই যোগাযোগ ছিল না। আগে এসইউসি করতাম। পরে জনসাধারণ কমিটির সঙ্গে যুক্ত হই। তখন পুলিশ আমাকে ধরেছিল। আমার স্ত্রী সুচিত্রারও এখন মাওবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কাজে অভিভূত হয়ে দলের কাজ করতে চেয়েছিলাম।” তাঁর
প্রবীর গড়াই
দাবি, “তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় সম্প্রতি আমাকে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্রের স্মরণসভায় জেলা সভাপতি সবার কাছে আমাকে ব্লক সভাপতি হিসেবে পরিচয় করান। সবাইকে নিয়েই কাজ করতে চাই।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি হিসেবে এলাকায় তিনি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ‘ফ্লেক্স’ টাঙিয়েছেন। তবে এলাকায় নিমাইবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা সালাম খাঁ মিছিলে নিমন্ত্রণ পেয়েও যাননি। তিনি বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছি।”
মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোকে গত ৯ মার্চ মহাকরণে হাজির করে তাঁর আত্মসমর্পণের কথা ঘোষণা করা হয়। সে দিন মুখ্যমন্ত্রীর পাশে সুচিত্রার সঙ্গে দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী প্রবীরবাবু ছিলেন (প্রথম পক্ষের স্বামী মাওবাদী নেতা শশধর মাহাতো)।
প্রবীর জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি সুচিত্রাকে বিয়ে করেন। লালগড়ের যে বড়ধানশোলা গ্রামে সুচিত্রার বাড়ি, সেই গ্রামেরই মেয়ে পূর্ণিমাকে বছর পনেরো আগে প্রবীরবাবু বিয়ে করেছিলেন। সাপের ছোবলে পূর্ণিমার মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুচিত্রার সঙ্গে প্রবীরবাবুর পরিচয় লালগড়েই। জনসাধারণ কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো ও তাঁর ভাই মাওবাদী নেতা শশধর মাহাতোর সঙ্গেও পরিচয় ছিল প্রবীরের। ২০০৯ সালে লালগড়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায়
প্রবীর অভিযুক্ত। ২০১০ সালে বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগারে কমিটির কয়েক জনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন প্রবীর। তাঁর ৯ মাস হাজতবাস হয়। পরে রানাহাটে ফিরে বালির ব্যবসায় নামেন। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র প্রবীরবাবুর বিরুদ্ধে বালির সিন্ডিকেট ব্যবসায় যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন।

ছবি: শুভ্র মিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.