মুখোমুখি...
খোলামেলা দৃশ্য করতে আড়ষ্ট লাগে
পত্রিকা: বইটই আগের মতো পড়েন?
অনন্যা: হ্যা। এখন পড়ছি সহজ পাঠ।

পত্রিকা: সহজ পাঠ?
অনন্যা: হ্যা। (হাসি) এ বছর জন্মদিনে আমার এক সহকর্মী উপহার দিয়েছে। খুব ভাল লাগছে বিজয়া রায়ের লেখা ‘আমাদের কথা’।

পত্রিকা: আর আই পি এল দেখছেন?
অনন্যা: দাদা নেই এবার কেকেআর-এ। খানিকটা ইন্টারেস্ট কমে গেছে। আর দাদাকে পুণের হয়ে খেলতে দেখতে কেমন যেন ইচ্ছে করছে না।

পত্রিকা: তা হলে কেকেআর বনাম পুণে ওয়ারিয়র্সের খেলা হলে কাকে সমর্থন করবেন?
অনন্যা: তখন কেকেআর-কেই করব। আমার শহরের নামে টিম। তবে দাদা জিতলে যত আনন্দ হবে, কলকাতা জিতলেও তাই হবে।

পত্রিকা: সারা দিন তো সিরিয়ালের শু্যটিং... সময় পান অন্য কিছু করার?
অনন্যা: কতটুকু আর সময় পাই? সময় পেলেও কত কাজ। বাড়ির কাজ, পরিবারকে সময় দেওয়া...

পত্রিকা: এক সময় বলেছিলেন দেবের মতো নায়কের সঙ্গে কাজ করতে চান...
অনন্যা:অভিনয়ের ফর্ম দেখাতে পারলেই তো আর হল না।

পত্রিকা: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়?
অনন্যা: চাই তো। ‘মামা ভাগ্নে’তে কাজ করেছি ওঁর সঙ্গে। আজও চাই। কোনও পরিচালক-প্রযোজক যদি আমাকে আর বুম্বাদাকে কাস্ট করেন খুবই ভাল লাগবে।

পত্রিকা: কিন্তু এটা লক্ষ করেছেন কি, যে সিনেমাই করছেন আপনার বিপরীতে বয়স্ক পুরুষ। ‘আবহমান’-এ দীপঙ্কর দে। ‘ল্যাপটপ’-এও পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়কে যথেষ্ট সিনিয়র মনে হচ্ছে...
অনন্যা: বয়সের এই ব্যবধানটা কাকতালীয়। দুটো সম্পর্কের অভিব্যক্তি আলাদা। আবেগও আলাদা। ‘ল্যাপটপ’-এ লেখকের সঙ্গে শুভার সম্পর্ক খুব সূক্ষ্ম। অনেক ক্ষণ পর্যন্ত দর্শক বুঝবেনই না সম্পর্কটা যাচ্ছে কোন দিকে? একটা জায়গায় যখন শুভা বলে ওঠে, “টাইপটা শিখে নিন। আমার বাবা আমার বিয়ের ঠিক করেছে” বা যখন কৌশিকদা বলেন, “ছ’বছর ধরে নিজেকে টাইপিস্ট ছাড়া আর কিছু ভেবে উঠতে পারলে না..,” তখন এই অনামা সম্পর্কটা নিয়ে দর্শকের মনে কৌতূহল আরও বেড়ে যায়। এমনই এক আশ্চর্য সম্পর্ক...

পত্রিকা: পাওলি দাম আর আপনাকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়। পাওলি তো এখন মুম্বইমুখী-- ‘ দ্য হেট স্টোরি’ মুক্তি পেল...
অনন্যা: পাওলি খুব ভাল অভিনেত্রী। আমাদের মধ্যে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। এ সব মিডিয়ার রটনা। আমার খুব ভাল লাগছে যে ও মুম্বই গিয়ে এই রকম একটা হিন্দি ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। ওর জন্য আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল।

পত্রিকা: ‘ছত্রাক’-য়ে পাওলির সেই সাহসী দৃশ্যটা দেখেছেন?
অনন্যা: না।

পত্রিকা: সে কি! ইন্ডাস্ট্রি তোলপাড় হয়ে গেল, আর আপনি এখনও দেখেননি?
অনন্যা: সময়ের অভাবে কত কিছুই তো দেখা হয় না।
পত্রিকা: আপনিও তো বেশ সাহসী। ‘ল্যাপটপ’এ আপনার অন্তর্বাস পরা একটি দৃশ্য আছে। এটা কি একটা মেসেজ? যে আপনিও পারেন...
অনন্যা: না, না, এটা আমি করেছি ছবির প্রয়োজনে। কোনও মেসেজ নয়। সত্যি বলতে খুব টেনশন হয়েছে। কিন্তু শীর্ষদা (রায়) আর কৌশিকদা এত সুন্দর ভাবে ব্যাপারটা তত্ত্বাবধান করেছেন যে শেষ পর্যন্ত অস্বস্তি কেটে গেছে। সেই সময় ঘরে আর কেউ ছিল না। তবে পর্দায় খোলামেলা দৃশ্য করা নিয়ে আমার যথেষ্ট আড়ষ্টতা আছে। চরিত্রের খাতিরে যা কিছু সব করতে পারব এমন বলতে পারছি না।

পত্রিকা: প্রায়ই বলেন গুরুত্বপূর্ণ নারী চরিত্র আছে এমন চিত্রনাট্য হাতে আসে না। আজকাল তো অনসম্বল কাস্টের মধ্যেও নায়িকারা নামমাত্র স্ক্রিন স্পেস পেয়ে ফাটিয়ে অভিনয় করে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তা হলে?
অনন্যা: দেখুন, একটা চরিত্র কতটা লম্বা হবে সেটা নির্ভর করে গল্পটাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য তার কতটা সময় লাগছে তার ওপর। মানে শুভা আর সাহিত্যিকের চরিত্রে যে গল্পটা ছিল সেটা ১০ মিনিটে দেখানো হলে এত জোরালো ভাবে ফুটত না। অমন হলে হয়তো আমি করতামও না। আবার অল্প সময়ের চরিত্রও খুব টানটান হতে পারে। যেমন শিল্প নির্দেশক ইন্দ্রনীল ঘোষের একটা ছবিতে কাজ করব। চরিত্রটা একজন যৌনকর্মীর। পর্দায় থাকব অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু উপস্থিতিটা জোরালো।

পত্রিকা: এই যে দিনের পর দিন হাতে ভাল চিত্রনাট্য আসছে না এর জন্য সকাল বেলা উঠে মন খারাপ হয়?
অনন্যা: হ্যাঁ হয়। হঠাৎ একেক দিন মনে হয়, ধ্যুৎ কেন এমন হচ্ছে আমার সঙ্গে? আমার সম্পদ অভিনয়। সেটা যখন দিনের পর দিন এমনি পড়ে থাকে মনে হয় ধুস আর কাজ করব না। তার পরেই মনে হয় ভাল কাজ করতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে। এই ভাবেই হতাশাকে পেরিয়ে যাই।

পত্রিকা: পরিচালকদের ফোন করে কাজ চান না জানি। পার্টি-অনুষ্ঠানেও তো তেমন যান না...
অনন্যা: তাতে লাভ? পার্টিতে গেলেই যে পছন্দসই কাজের জন্য ডাক পাব, এটাও মনে হয় না।

পত্রিকা: তার মানে জাতীয় পুরস্কারেও কিছু যায় আসে না। সেই সিরিয়ালেই আটকে থাকতে হয়?
অনন্যা: যতক্ষণ না পছন্দসই চরিত্র পাচ্ছি সিরিয়ালে অভিনয় করছি। তা ছাড়া যে কোনও সিরিয়ালে যে অভিনয় করছি তা তো নয়। করছি এমন একটা চরিত্র যা আমার দারুণ পছন্দের- সুবর্ণলতা।

পত্রিকা: শোনা যায় যে কাজের ব্যাপারে আপনি খুব খুঁতখুঁতে। এবং আপনার ‘ট্যানট্রাম’ নিয়ে সেটে নাকি লোকজন নাস্তানাবুদ হয়। আপনি নাকি কখনও কখনও রূঢ় ভাষাতেও কথা বলেন...
অনন্যা: ভাল কাজের জন্য খুঁতখুঁতে হওয়াই উচিত। কিন্তু সেটে আমার জন্য সহকর্মীদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে তো শুনিনি। কারা বলেছেন বলুন তো এই সব কথা? এই ব্যাপারগুলো খুব কষ্ট দেয়। অহেতুক একটা মানুষ সম্পর্কে মন্তব্য করা। কোনও দায়িত্ব নেই। এই তো আমার সেটে এলেন। (মেক আপ রুমে বসে থাকা এপিসোড ডিরেক্টরকে দেখিয়ে) আমি মেজাজি বা রূঢ়ভাষী কিনা আমার সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করুন। দেখছেন তো আমরা কেমন মিলেমিশে কাজ করছি। কখনও কারও সঙ্গে খারাপ ভাষায় কথা বলি না। (চিত্রনাট্য পড়াতে আসা মেয়েটিও সায় দেয়)।

পত্রিকা: জাতীয় পুরস্কার পেলে কি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়?
অনন্যা: জানি না। তবে ‘আবহমান’এ যে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি অবশ্যই তার গুরুত্ব আমার কাছে আজও আছে। এই পুরস্কারের যে ফলশ্রুতি নেই এমন বলব না। এই কেরিয়ার যে দিন শেষ হবে বুঝব।

পত্রিকা: শেষ মানে?
অনন্যা: সারা জীবনই যে অভিনয় করব তা নাও হতে পারে। কত কী করার আছে। নাচের স্কুল খোলার প্ল্যান তো আছেই। মাঝে মাঝে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়াব। জুন মাসের পর দুটো ছবিতে কাজ করব। তারপর বেশ কিছু দিন টেলিভিশনের পর্দা থেকে ছুটি নেব। নিজের জন্য
কিছুটা সময় দেব। বই পড়ব, ডিভিডি দেখব, এবং তার মধ্যে যদি ভাল ছবি আসে করব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.