|
|
|
|
|
|
|
মনোরঞ্জন ১... |
|
দ্রৌপদীর অন্তর্ধান |
মহাকাব্যের নারীদের ক্যাটওয়াক। তন্ময় বসুর উদ্যোগ। সেখানে অশান্তি।
মঞ্চে না
উঠেই চলে গেলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। লিখছেন নিজস্ব প্রতিনিধি |
কী হওয়ার ছিল, আর কী হয়ে গেল!
হওয়ার কথা ছিল একটা ঝলমলে অনুষ্ঠান। মহাভারতকে ভিত্তি করে এক ফ্যাশন আলেখ্য। যেখানে টালিগঞ্জের নায়িকারা মহাভারতের নারী হয়ে উঠবেন ক্যাটওয়াকের মঞ্চে। গত রবিবার। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাতালবাদক তন্ময় বসু। অনুষ্ঠানের নামসম্পূর্ণা।
কথা ছিল দ্রৌপদীর বেশে আসবেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। শকুন্তলা হয়ে আসবেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। জুন মাল্য হবেন দেবযানী। আর লকেট চট্টোপাধ্যায় হবেন হিড়িম্বা।
কিন্তু হল না। দ্রৌপদীরূপী ঋতুপর্ণা মঞ্চে এলেন না।
ফল? উদ্যোক্তারা অপ্রস্তুত।
ঋতুপর্ণা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ঠিকই। কিন্তু দ্রৌপদী হিসেবে মঞ্চে উঠতে পারেননি। তাঁর সিকোয়েন্সের আগেই তাঁকে চলে যেতে হয়।
কারণ? তাড়া ছিল। দিল্লি যাওয়ার ফ্লাইট ধরতে হত তাঁকে।
ঘটনা স্বীকার করছেন তন্ময়, পুরো অনুষ্ঠানটাই যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। “হ্যাঁ, ঋতু মঞ্চে উঠতে পারেনি। ও বলল ওর ফ্লাইট ধরার তাড়া আছে। ফলে আমাদের সাধনা হাজরাকে অনুরোধ করতে হয় দ্রৌপদীর সিকোয়েন্সটা করে দিতে। থ্যাঙ্ক গড, ও রাজি হয়ে যায়। কিন্তু ঋতুর যেহেতু দ্রৌপদী করার কথা ছিল, এবং ও করতে পারল না, তার জন্য আমি নিজে স্টেজে উঠে ক্ষমা চেয়েছি,” বলছেন তন্ময়।
ঠিক কী ঘটেছিল সে দিন?
অনুষ্ঠানের একদিন আগে ঋতুপর্ণা উদ্যোক্তাদের জানান যে তাঁকে আগে চলে যেতে হবে। তাই তাঁকে যেন সবার আগে দ্রৌপদীর সাজে মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়। “দুম করে সিকোয়েন্স ভাঙাটা মুশকিল ছিল। ‘মহাভারত’-এর ওপর ভিত্তি করে যে অনুষ্ঠান, সেখানে দেবযানী বা শকুন্তলার আগে দ্রৌপদী আসতে পারে না। তাও আমরা চেষ্টা করেছিলাম। জুনের দেবযানী সিকোয়েন্সের পর ঋতুকে স্টেজে ওঠানোর।
কিন্তু ঋতু বলল, ওকে প্রথমেই স্টেজ
দিতে হবে,” জানাচ্ছেন তন্ময়।
শুধু ফ্যাশন-আলেখ্য নয়। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সাতজন নারীকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয় এই অনুষ্ঠানে। উদ্যোক্তাদের বক্তব্য যে ঋতুপর্ণা যখন বুঝতে পারেন যে মহাভারতের নারীদের মধ্যে তাঁর প্রথমে আসা কিছুতেই হবে না, তিনি তখন তাঁদের অনুরোধ করেন কোনও একটা সংবর্ধনা তিনি দেবেন। যাতে অন্তত
এইটুকু বোঝা যায় যে তিনি অনুষ্ঠানটিতে এসেছিলেন। কিন্তু উদ্যোক্তারা সে প্রস্তাবে
রাজি হননি।
এই পুরো ঘটনায় কি তন্ময় বিরক্ত?
“বিরক্ত নই। আমি হতাশ,” বলছেন তন্ময়। তাঁর কথায়, “একজন শিল্পী হিসেবে বলতে পারি, কাজের প্রতি যতটা মনোযোগ দেওয়া উচিত ততটা বোধহয় ঋতু দিতে পারছে না। অন্য কাজে বড় বেশি নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে।” পাশাপাশি অবশ্য অনেকে বলছেন উদ্যোক্তাদের অপেশাদারিত্ব নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে।
নানা সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে ঋতুপর্ণা সময় দিতে না পারলেও অন্য সব নায়িকাই খুব মনোযোগ দিয়ে রিহার্সাল দিয়েছিলেন। অর্পিতা, জুন, পল্লবী, লকেটসবাই। এ প্রসঙ্গে সেদিনের ‘শকুন্তলা’ অর্পিতা বলছেন, “ঋতুদির হয়তো সত্যিই ফ্লাইট ধরার তাড়া ছিল। আমি এ সব ব্যাপারে ঢুকতেই চাই না।” আর ঋতুপর্ণার বক্তব্য? “ওরা যে যাই বলুক, আমার এ বিষয়ে কিছু বলার নেই,” বলছেন উত্তেজিত ঋতুপর্ণা। |
|
|
|
|
|