|
|
|
|
দাবদাহে তৃষিতের পাশে মুন্সীপাটনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। হাঁসফাঁস করা গরম। এই পরিস্থিতিতে শিবির করে পথচলতি তৃষ্ণার্ত মানুষকে জলদানে উদ্যোগী হয়েছে মেদিনীপুরের এক গ্রামের বাসিন্দারা। পথচলতি মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন গ্রামের যুবকরা। হাতে নুন-চিনি মেশানো এক গ্লাস জল। বলছেন, “একটু জল খেয়ে যান। এই গরমে ভাল লাগবে।” এ ভাবে নুন-চিনি মেশানো জলে তেষ্টা মেটানোর সুযোগ হাতছাড়া করছেন না কেউই। শুক্রবার দুপুরে ঘাটালগামী বাসে কেশপুর যাচ্ছিলেন স্বপন মণ্ডল। তাঁর কথায়, “বাস আটকে চাঁদা তোলার ঘটনা হামেশাই ঘটে। তবে বাস থামিয়ে এই গরমের দুপুরে কেউ হাতে এক গ্লাস জল তুলে দেবেন, ভাবতেই পারি না। এমন শিবির যত হবে, ততই ভাল।”
মেদিনীপুর শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরেই মুন্সীপাটনা। সদর ব্লকের পাঁচখুরি-১ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই গ্রামে ৩০০ পরিবারের বাস। চাষবাস করেই সংসার চলে। গ্রামের পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে মেদিনীপুর-কেশপুর রাজ্য সড়ক। দিনের অধিকাংশ সময়েই ব্যস্ত থাকে এই রাস্তা। ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, আরামবাগ রুটের বাসও চলে। এই গ্রামেই গত ১৫ এপ্রিল থেকে চলছে জলদান শিবির। পথচলতি মানুষ চাইলে তাঁদের গুড়-ছোলাও দেওয়া হচ্ছে। |
|
জলদান। ছবি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
গ্রামবাসীরা নিজেরা চাঁদা তুলেই এই বন্দোবস্ত করেছেন। রাস্তার পাশে বাঁশের উপর ত্রিপল বিছিয়ে একটি ছাউনি। তারই তলায় চলছে শিবির। অস্বস্তিকর গরম এখন মেদিনীপুরে। শুক্রবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বৃষ্টির তো কোনও আশা নেই-ই, বরং গরম আরও বাড়বে। কিন্তু মুন্সীপাটনায় কেন এই উদ্যোগ? স্থানীয় বাসিন্দা দীপক চন্দ্র বলেন, “এই গরমে পথচলতি মানুষজনের পাশে দাঁড়াতেই এই বন্দোবস্ত।” চাষবাস করেই সংসার চলে দীপকবাবুর। আরেক বাসিন্দা তপন পাতরের কথায়, “পথচলতি মানুষকে জল খাইয়ে যা তৃপ্তি হচ্ছে, তা বলে বোঝাতে পারব না।” স্থানীয় যুবক অনুপ দাস বলছিলেন, “পুরো গরমকালটা জুড়েই এই শিবির চালানোর ইচ্ছে রয়েছে। এ জন্য গ্রামের অনেকেই নানা ভাবে সহযোগিতা করছেন। কেউ চিনি দিচ্ছেন। কেউ স্বেচ্ছায় প্লাস্টিকের গ্লাস কেনার টাকা দিয়েছেন।” মেদিনীপুর সদরের বিডিও অয়ন নাথেরও মন্তব্য, “স্থানীয় বাসিন্দাদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।” |
|
|
|
|
|