ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ লুট হল জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে। শুক্রবার ডুয়ার্সের ওই জঙ্গলের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন জঙ্গলে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে বনকর্মীরা কিছু লোকজনকে বার করে দিলেও বহু গাছ এদিন লুট হয় বলে অভিযোগ। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডুয়ার্সের মাদারিহাট ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়। ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে তুলি রায় নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। জখম হন ২০ জনের বেশি। পাশাপাশি জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়ে। সেই খবর পেয়েই আশপাশের বহু লোক অভয়ারণ্যে ঢুকে ভেঙে পড়া গাছ কেটে নিয়ে যান বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। |
বন দফতরের উত্তরবঙ্গের বন পাল বিপিন সুদ বলেন, “কতগুলি গাছ ঝড়ে ভেঙেছে তার হিসাব হচ্ছে। সংখ্যাটি নেহাত কম নয়। বন কর্মীরা পাহারার কাজে আছেন। তার পরেও কী ভাবে গাছ চুরি হল তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। খোওয়া যাওয়া সমস্ত গাছ উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে।” মাদারিহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ দাসের অভিযোগ, ঝড়ের রাতেই তিনি রেঞ্জ অফিসারদের গাছ চুরি সম্পর্কে আগাম সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেন, “যা আশঙ্কা করেছিলাম, তাই হল। অনেকে ঝড়ে পড়া গাছ কেটে নিয়ে গিয়েছে। দিনের বেলাও বহু মানুষ জঙ্গলে অবাধে ঢুকে গাছ চুরি করে।” কয়েকজন বনকর্মী দাবি করেন, কর্মীর অভাবের কারণে এদিন গাছ চুরি আটকাতে সমস্যায় পড়তে হয়। তবে নজরে পড়লে বাধা দেওয়া হয়। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “জঙ্গলে ভেঙে পড়া গাছ চুরি রুখতে বন দফতরের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৫০০ বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে গেছে। অজস্র বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রিপল, পোশাক-সহ খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।” বিদ্যুৎ পর্ষদের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র সৌমেন দাস বলেন, “যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। শুক্রবার রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক করতে দু’তিনদিন সময় লাগবে।” এলাকার বাসিন্দা স্বপন দাসের কথায়, “ঝড়ে দুটি ঘর ভেঙে গেছে পাশের বাড়িতে রাত কাটাই। আমার মতো অবস্থা বহু মানুষের।” |