রাজ্যসভার ভোট-কেলেঙ্কারি যেন পিছু ছাড়ছে না ঝাড়খণ্ডের!
রাজ্যসভা নির্বাচনকে ঘিরে আরও তীব্র হল শাসক জোটের দুই শরিকের দ্বন্দ্ব। বিজেপি-জেএমএমের রাজনৈতিক মতান্তর আরও জটিল হয়ে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অর্জুন মুন্ডার এক সিদ্ধান্তকে ঘিরে। রাঁচি হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৩০ মার্চের বাতিল হয়ে যাওয়া রাজ্যসভা নির্বাচন কাণ্ডের তদন্তে নেমেছে সিবিআই। মুন্ডা সুপারিশ করেছেন, ঝাড়খণ্ডের ২০১০-এর রাজ্যসভা নির্বাচনও এই তদন্তের আওতায় আসুক। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত জেএমএম শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে আলোড়ন তুলেছে। কারণ ওই নির্বাচনে কিন্তু অভিযোগের তির সেই জেএমএম শীর্ষ নেতৃত্ব, বিশেষ করে ‘গুরুজি’ শিবু সোরেনের দিকে বলে নেতারা মনে করছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলী সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডে ২০১২ সালের রাজ্যসভার বাতিল ভোটের সঙ্গে ২০১০ সালের রাজ্যসভার নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগের সিবিআই তদন্ত শুরুর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর তরফে সুপারিশ করা হয়েছে। সূত্রের বক্তব্য, দুটি নির্বাচনের অভিযোগের চরিত্র এক। একই সঙ্গে তদন্ত হলে দু’টি ক্ষেত্রে ‘একই’ ব্যক্তি জড়িত থাকার ঘটনা বেরিয়ে আসাও অসম্ভব নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
২০১০ সালে ঝাড়খণ্ডে অনুষ্ঠিত রাজ্যসভার ভোটে বিজেপি প্রার্থী অজয় মারু পরাজিত হয়েছিলেন। জয়ী হন কংগ্রেস প্রার্থী ধীরাজ সাহু এবং জেএমএম প্রার্থী তথা শিল্পপতি কে ডি সিংহ। পরে অবশ্য তিনি জেএমএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তাতে অবশ্য তাঁর সাংসদ পদ যায়নি। কারণ দলত্যাগ আইনেই তাঁর সাংসদ পদ টিকে যায়। সেই নির্বাচনে ওঠা অভিযোগের সিবিআই তদন্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ রাজ্যের ভোট-কেলেঙ্কারির ঘটনায় নতুন সংযোজন। রাজ্যসভার ভোটে ঝাড়খণ্ডে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র ধারাবাহিকতাই পরোক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর ওই সুপারিশে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ওই সুপারিশকে স্বাগত জানিয়ে আজ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন, “২০১০ সালের রাজ্যসভার নির্বাচনেও বিধায়ক কেনাবেচার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছিল। হাতে আসা তথ্য-প্রমাণ নিয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট ভাবে ছয় বিধায়কের নামও উল্লেখ করেছিলাম। কিন্তু ভিজিল্যান্সের তদন্ত রিপোর্ট আদালত কিংবা নির্বাচন দফতরে আর জমা পড়েনি।”
এ বার জেএমএমের তরফে যাঁকে শিবু সোরেন রাজ্যসভা ভোটে প্রার্থী মনোনীত করেছেন সেই সঞ্জয় কুমারকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের সহ-সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুধীর মাহাত। তিনি জামশেদপুরে ধর্নাতেও বসেন। তাঁর অভিযোগ: সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন এমন বহিরাগতদের প্রার্থী করায় নানা প্রশ্ন উঠছে। মাহাত অভিযোগ আনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জেএমএম প্রার্থীকে সমর্থনের পথে না গিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব নিজেদের প্রার্থী হিসেবে সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার নাম ঘোষণা করে। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সিবিআই তদন্তের কথা বলে চাপ বাড়ালেন মুন্ডা। |